কোনো মানুষ হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে গেলে তাকে কি করা উচিত?
কোনো মানুষ হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে গেলে তাকে কি করা উচিত?
কেউ হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে গেলে সচেতন নাগরিক হিসেবে আপনার করণীয় কাজগুলো হলো:
– প্রথমেই যে কাজটি করতে হবে, তা হলো, অজ্ঞান রোগীর অজ্ঞানের অবস্থার মাত্রা নিরূপণ করা।
– রোগীর নাম ধরে ডাকুন আর নাম না জানা থাকলে একটু ভরাট ও দরাজ কণ্ঠে বলুন, চোখ খুলে তাকান তো দেখি। এর মাধ্যমে কখনো দেখবেন রোগী একটু চোখ পিটপিট করে তাকাচ্ছে, আবার কখনো চোখ না খুলেই গোঙানির স্বরে বলছে, আমি কোথায়? আবার কখনো বা কোনো ধরনের সাড়া দিতেই ব্যর্থ হচ্ছে।
-রোগীর নাকের কাছাকাছি একটি হাত নিয়ে অনুভব করতে চেষ্টা করুন, শ্বাস-প্রশ্বাস চলছে কি না। শ্বাস-প্রশ্বাস চলার ব্যাপারটি বুকের ওঠানামা দেখে এবং নিশ্বাসের শব্দ শুনেও বুঝতে পারা যায়।
ঠিক এ অবস্থায় আপনাকে কয়েকটি কাজ একসঙ্গে করতে হবে:
– প্রথমত, অ্যাম্বুলেন্সের জন্য ফোন করুন।
– দ্বিতীয়ত, জোরে চিৎকার করে আশপাশের লোকজনকে সাহায্যের জন্য ডাকুন।
– এবং সর্বশেষ আপনি আপনার নিজের সামর্থ্যমতো পূর্ব-অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে রোগীর সাহায্যের জন্য কিছু কাজ করবেন।
প্রক্রিয়া:
– রোগীকে সোজা করে শুইয়ে দিন। অজ্ঞান হলে অবশ্যই রোগীকে কাত করে রাখতে হবে। চিত বা উপুড় করে রাখলে রোগীর শ্বাসকষ্ট হতে পারে।
– গায়ে শক্তভাবে আটকানো কোনো পোশাক থাকলে তা ঢিলা করে দিন। মনে রাখবেন, শক্ত করে আটকানো একটি বেল্ট বা বক্ষবন্ধনীর জন্য রোগীর শ্বাসকষ্ট হতে পারে।
– কোনোভাবেই উঠিয়ে বসানো যাবে না। এ অবস্থায় কোনো খাবার দেওয়া সম্পূর্ণ নিষেধ। বরং সম্ভব হলে আপনার নিজের আঙুলে রুমাল জড়িয়ে রোগীর মুখে জমে থাকা লালা বের করে দিতে হবে।
– মাথা পেছনের দিকে কাত করে ধরে থুতনি একটু উঁচু করে ধরুন।
– এ সময় খিঁচুনিও থাকতে পারে। খিঁচুনি হলে হাত-পায়ের কাছ থেকে আঘাত লাগতে পারে, এমন সবকিছু সরিয়ে নিন। দয়া করে খিঁচুনির রোগীকে জোর করে ধরে রাখার চেষ্টা করবেন না। দ্রুত একপাশ ফিরিয়ে শুইয়ে দিন।
– পাশাপাশি রোগীকে যত দ্রুত সম্ভব নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে আনুন, যেমন—আগুন থেকে দূরে নেওয়া, চলমান রাস্তায় অজ্ঞান হয়ে গেলে রোগীকে রাস্তার পাশে নেওয়া, লিফটে অজ্ঞান হওয়া রোগীকে লিফটের বাইরে আনা, বাথরুমে অজ্ঞান হওয়া রোগীকে বাইরে আনা প্রভৃতি কাজ করতে হবে।
– এ অবস্থায় রোগীর শ্বাসকষ্ট হলে মুখের লালা পরিষ্কার করার পাশাপাশি খেয়াল করে দেখুন, দাঁত ও জিহ্বার অবস্থান কী। যদি জিহ্বা দাঁতের মাঝে আটকা পড়ে অথবা জিহ্বা পেছনের দিকে গিয়ে শ্বাসনালির মুখ আটকে দেয়, তা হলে একটি চামচের উল্টো দিক দিয়ে দাঁতের পাটিকে খুলে রাখা ও জিহ্বাকে যথাস্থানে রাখা সম্ভব।
– অবস্থা বেগতিক বা অপরিবর্তিত থাকলে হাসপাতালে নিয়ে যান।