গাড়ীতে ভ্রমণ করলে মাথা ঘোরায় বা বমি হয় কেনো ?
গাড়ীতে ভ্রমণ করলে মাথা ঘোরায় বা বমি হয় কেনো ?
বমি হওয়ার কারণ :
সাধারণত অনেকগুলো কারণে বমি হয়ে থাকে। যেমন ধরুন কেউ ভীষণ অসুস্থ, সেই অসুখের জন্য বমি হতে পারে। আবার বিষাক্ত কিছু খেলেও বমি হতে পারে। বাজে গন্ধ বা বাজে স্বাদের খাবারের কারণেও বমি হতে পারে। হতে পারে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যার কারণেও। আবার কোনো কারণে খাদ্যনালী যদি বন্ধ হয়ে গেলেও বমি হতে পারে, অতিরিক্ত পরিশ্রমের ফলেও বমি হতে পারে আবার মোশন সিকনেসের কারণেও বমি হতে পারে।
ভ্রমনে মোশন সিকনেস :
‘মোশন সিকনেস’ ভ্রমনের একটি অন্যতম প্রধান সমস্যা ‘মোশন সিকনেস’ মূলত মস্তিকের এক ধরনের সমস্যা। বিশেষ করে বাস, প্রাইভেটকার বা এ জাতীয় বাহনগুলিতে এ সমস্যা হয়। শরীরের অন্তঃকর্ণ আমাদের শরীরের গতি ও জড়তার ভারসাম্য রক্ষা করে। যখন গাড়ীতে চড়ি তখন অন্তঃকর্ণ মস্তিষ্কে খবর পাঠায় যে সে গতিশীল। কিন্তু চোখ বলে ভিন্ন কথা। কারণ তার সামনের বা পাশের মানুষগুলো কিংবা গাড়ীর সিটগুলো তো স্থির। চোখ আর অন্তঃকর্ণের এই সমন্বয়হীনতার ফলে তৈরী হয় মোশন সিকনেস’। মোশন সিকনেস এ বমির ভাব হয় বেশি। সেই সাথে মাথা ঘোরা, মাথা ধরা প্রভৃতি থাকে।
মোশন সিকনেস থেকে বাঁচার উপায় :
মোশন সিকনেস থেকে বাঁচার উপায় হলো, জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে থাকা। এ সময় লম্বা লম্বা শ্বাস নিতে হবে, হতে পারে মেডিটেশনও। প্রয়োজন হলে চোখ বন্ধ করে রাখুন। এ সময় বই পড়বেন না বা স্থির কোন কিছুর দিকে তাকিয়ে থাকবেন না। আদা চিবাতে পারেন। মোশন সিকনেসে কাজে দেবে। ভ্রমনে যাদের বেশি সমস্যা হয় তারা গাড়ীতে ওঠার আধঘন্টা আগে ডমপেরিডন জাতীয় ওষুধ খেয়ে নিতে পারেন। গাড়ির ভেতরে দৃষ্টি নিবদ্ধ না রেখে যত দূর সামনে দৃষ্টি যায়, তাকিয়ে থাকুন। আপনার অন্তঃকর্ণ ও চোখ তখন একই সিগন্যাল পাঠাবে মস্তিষ্কে যে গাড়ি চলছে, আপনিও চলছেন। সমস্যা হওয়ার কথা নয় তখন। জানালার কাছে সিট নিন। জানালাটা খুলে দিন। খোলা বাতাসে মন-প্রাণ থাকবে চনমন।
যা যা করবেন :
– হালকাভাবে দু’চোখ বন্ধ রাখুন। অথবা একটু তন্দ্রাচ্ছন্ন ভাব নিয়ে আসুন। তবে চলার পথে না ঘুমানোই উত্তম।
– গাড়ি চলছে। চলন্ত গাড়িতে বই বা পত্রিকা পড়া থেকে বিরত থাকুন। বই বা পত্রিকা পড়লে দৃষ্টি স্থির থাকবে গাড়ির ভেতরে, পড়ার পাতায়। তখন আবার ঘটবে বিপত্তি।
– গাড়িতে আড়াআড়ি বা যেদিক গাড়ি চলছে সেদিক পেছন দিয়ে বসবেন না। যাত্রা শুরুর একটু আগে ভরপেট খাবেন না বা পান করবেন না।
কিছু ওষুধ আগে, যেগুলো বমি বন্ধ করতে পারে যেমন_ ওনাসেরন সিনারন, মেক্লাইজিন ক্লোরফেনাইরামিন ইত্যাদি ডাক্তারের পরামর্শে সেবন করতে পারেন। আদা কিংবা চুইংগাম চিবানোতেও উপকার পাওয়া যেতে পারে। ধন্যবাদ