ঘরেই চুল হাইলাইটস করার কোনো উপায় আছে কী?
ঘরেই চুল হাইলাইটস করার কোনো উপায় আছে কী?
চুলের মাঝে মাঝে গোছা করে পছন্দের অন্য রঙে রাঙিয়ে নেয়াটাকেই হাইলাইট বলা হয়। কিছুদিন আগেও হাইলাইটের ফ্যাশন চলে গিয়েছিল কিন্তু ইদানীং নতুন করে চুলে কালার হাইলাইট করার চল চলে এসেছে। তাই হাইলাইটের প্রচলনটা আরও বাড়ছে। পার্লারে যেভাবে চুলের হাইলাইট করা হয় তাতে কেমিক্যালের মাত্রা অনেক বেশি থাকে অনেক। ফলে চুলের সৌন্দর্যও নষ্ট হয়। তাই আপনি চাইলে ঘরে বসেই প্রাকৃতিক উপায়ে আপনার চুলে হাইলাইটস করে ফেলতে পারেন। এটি চুলের জন্য মোটেও ক্ষতিকর নয় বরং প্রাকৃতিক উপাদানগুলো চুলের পুষ্টি যুগিয়ে থাকে।
লেবুর মাধ্যমে
সব চাইতে ভালো প্রাকৃতিক হাইলাইটার হিসেবে কাজ করে লেবু। এতে চুলে আসে সুন্দর একটি রঙ। এই পদ্ধতিতে হাইলাইট করতে চাইলে একটি বাটিতে সমপরিমান লেবুর রস ও মধু মিশিয়ে নিয়ে চুলের গোছা আলাদা করে নিয়ে চুলে লাগিয়ে রাখুন। পার্লারের মতই চুলগুলো অ্যালুমিনিয়াম ফয়েল দিয়ে ঢেকে নিয়ে রোদের মধ্যে বসে থাকুন। চুল শুকিয়ে উঠলে শ্যাম্পু করে চুল ধুয়ে ফেলুন। এভাবে ২/৩ বার করলেই দেখবেন চুল কি সুন্দর হাইলাইট হয়ে গিয়েছে।
রঙ চায়ের মাধ্যমে
রঙ চায়ে রয়েছে প্রচুর পরিমানে ট্যানিক অ্যাসিড যা চুলে ব্যবহার করলে চুল হাইলাইট হয়ে যায়। প্রথমে ১ কাপ পানিতে ৬/৭ চা চামচ চা পাতা দিয়ে ফুটিয়ে নিন ভাল করে। এরপর এই চা চুলের গোছায় লাগিয়ে অ্যালুমিনিয়াম ফয়েলে পেঁচিয়ে রেখে দিন। চা চুলে ভালো করে শুকোতে দিন , শুকিয়ে গেলে চুল গরম পানিতে ধুয়ে ফেলুন। মনে রাখবেন মাথার ত্বকে গরম পানি লাগাবেন না। শুধুমাত্র চুলে গরম পানি লাগাবেন। এভাবে ৫/৬ বার করলে চুলের রঙ পরিবর্তন হয়ে সুন্দর হাইলাইট করা হয়ে যাবে।
অলিভ অয়েলের মাধ্যমে
অলিভ অয়েল চুলের ময়েসচারাইজার হিসেবে অনেকেই ব্যবহার করে থাকেন। কিন্তু চুলের ঘরোয়া হাইলাইটের জন্য অলিভ অয়েলের ব্যবহার সম্পর্কে অনেকেই জানেন না। চুলের যে যে অংশ হাইলাইট করতে চান সে অংশে ভাল করে অলিভ অয়েল মাখিয়ে রোদে বসে থাকুন। অলিভ অয়েল সুরজের আলোর সাথে রিঅ্যাকশনের মাধ্যমে চুলের রঙ পরিবর্তন করে ফেলে। এতে করে পছন্দ অনুযায়ী চুল হাইলাইট করা হয়ে যায়।
ইসলাম-পূর্ব আইয়ামে জাহেলিয়া যুগে যখনই কোনো কন্যাশিশু জন্মলাভ করত, তাদের বেশিরভাগকেই জীবন্ত পুঁতে ফেলা হতো। তখন ভাবা হত কন্যা শিশু মানেই অকর্মক একটি পদার্থ যা মানুষের কোনো কল্যাণেই আসে না। তাছাড়া পুত্র সন্তান মানে অর্থ আয়ের উৎস আর কন্যা সন্তান মানে অর্থ ব্যয়ের উৎস। কেননা সে যুগে কন্যা সন্তান বিয়ে দেয়ার জন্য প্রচুর পরিমাণে অর্থ যৌতুক হিসেবে প্রদান করা হত। আর পুত্ররা বিয়ে করে অর্থ আয় করত। এসব সূক্ষ্ম কিছু কারণে আইয়ামে জাহেলিয়া যুগে কন্যা সন্তান জন্ম দেয়াকে পাপ কর্ম বলে অভিহিত করা হত। এ কারণে মা ও মেয়ে দুজনকেই পুড়িয়ে মারা হত বা জীবন্ত কবর দেয়া হত।
ইসলামের আগমনে এ প্রথা চিরতরে বন্ধ হয়ে যায়। কন্যা ও নারীদের প্রতি এ ধরনের পৈশাচিক মনোভাব ইসলাম সমর্থন করে না। ইসলাম সব ধরনের হত্যাকাণ্ডের বিরোধী। তার পরও আলাদাভাবে নারী শিশুকে হত্যা করতে নিষেধ করেছে। এ প্রসঙ্গে সূরা তাকভীরের ৮ ও ৯ নং আয়াতে আল্লাহতায়ালা বলেন, যখন জীবন্ত প্রোথিত কন্যাকে জিজ্ঞেস করা হবে, কী অপরাধে তাকে হত্যা করা হলো? সন্তান ছেলে হোক বা মেয়ে হোক আচরণের ক্ষেত্রে এ দুইয়ের মধ্যে কোনোরূপ পার্থক্য ইসলাম সমর্থন করে না।
হজরত রাসুলুল্লাহ [সা.] ছেলে ও মেয়ের মধ্যে পার্থক্য বিধান এবং মেয়েদের ওপর ছেলেদের অহেতুক প্রাধান্যদান কঠোরভাবে নিষেধ করেছেন। তিনি বলেছেন, যার তত্ত্বাবধানে কোনো কন্যা শিশু থাকে আর সে তাকে জীবিত দাফন না করে, তার প্রতি তাচ্ছিল্য প্রদর্শন না করে… আল্লাহতায়ালা তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন।-আবু দাউদকোরানে কারিমের বিভিন্ন স্থানে তাদের মর্যাদার কথা উল্লেখ রয়েছে। এমনকি কোরানে কারিমে সূরাতুন নিসা নামে একটি স্বতন্ত্র সূরাও স্থান পেয়েছে। নারী শিক্ষা সম্পর্কে হজরত রাসুলুল্লাহ [সা.] বলেছেন, নর-নারী সকল মুসলমানের ওপর জ্ঞান অর্জন করা ফরজ। [মিশকাত]
বর্তমান সমাজে কন্যা শিশুদের ওপর যেসব নির্যাতন করা হয়, তন্মধ্যে পাচার অন্যতম। নারী ও শিশু পাচাররোধে ইসলাম কঠিন হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে। নারী ও শিশু পাচার একটি মহা অন্যায় ও হারাম কাজ। মানব পাচারকারী চক্র জনগণের বিশ্বাসের চরম অবমাননা ও অবমূল্যায়ন করে থাকে। এ প্রসঙ্গে হজরত রাসুলুল্লাহ [সা.] বলেছেন, এর চেয়ে বড় বিশ্বাসঘাতকতা আর কিছুই নেই যে তুমি এমন ব্যক্তির সঙ্গে মিথ্যার আশ্রয় নেবে, যে তোমাকে বিশ্বাস করে। [আবু দাউদ] সমাজে নারীদের তাবৎ অধিকার নিশ্চিত করতে ও পাচারের মতো জঘন্য অপরাধ দমন করতে ইসলাম প্রদত্ত মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা, গণসচেতনতা বৃদ্ধি এবং সামাজিক প্রতিরোধ অত্যন্ত প্রয়োজন।