ঘুমের মধ্যে কথা বলা কি খারাপ লক্ষণ?

ঘুমের মধ্যে কথা বলা কি খারাপ লক্ষণ?
Doctor Asked on May 14, 2015 in সাধারণ.
Add Comment
1 Answer(s)

    অনেকেই ঘুমন্ত অবস্থায় নিজের অজান্তে কথা বলেন যা সোমনিলকি নামে একসময় পরিচিত ছিলো। এই কথা বলার ঘটনা /বিষয়বস্তু কোনটাই রোগীর মনে থাকেনা। যারা এই স্লিপ টকিং (Sleep Talking) বা ঘুমের মধ্যে কথা বলা ডিসঅর্ডারটি সম্পর্কে জানেন না, তারা অনেকেই একে মানসিক ব্যাধি বলে ধারণা করতে পারেন। যদিও আশার কথা হচ্ছে বেশিরভাগ রোগীর ক্ষেত্রেই এই ধারণা মিথ্যা প্রমাণিত হয়। মানসিকভাবে সুস্থ যে কোন মানুষের এই ঘুমের মধ্যে কথা বলা রোগ হতে পারে। তাই ঘুমের মধ্যে কথা বলা কখনই খারাপ লক্ষণ নয়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এই ডিসঅর্ডার স্বল্পস্থায়ী হয়। পুরুষ এবং শিশুদের মধ্যে এই ডিসঅর্ডার টি বেশি দেখা যায়।

    সাধারণত ঘুমের মধ্যে কথা বলার স্থায়িত্ব ২-৫ সেকেন্ড হয়। এই অল্প সময়ের মধ্যেই রোগী একা একা বা কাল্পনিক কোন চরিত্রের সাথে কথা বলতে পারে। এর বিষয়বস্তু নিজের জীবনে ঘটে যাওয়া দূর অতীতের বা নিকট অতীতের কোন ঘটনা বা সম্পুর্ন কাল্পনিক কোন ঘটনা হতে পারে। ঘুমের মধ্যে কথা বলার ধরন রোগীর স্বাভাবিক অবস্থায় কথা বলার ধরন থেকে সম্পূর্ণ আলাদা হয়। রোগী ফিসফিস বা বিড়বিড় করতে পারেন। আবার খুব জোরেও কথা বলতে পারেন।

    গবেষণায় দেখা যায় যে মানুষ ঘুমিয়ে গেলেও তার মস্তিষ্ক সচল থাকে। যেহেতু মানব শরীরের সকল ক্রিয়া পরিচালিত হয় মস্তিস্কের নিয়ন্ত্রনে, তাই ঘুমের মধ্যে কথা বলা বা ঘুমের মধ্যে হাঁটা বা স্বপ্ন দেখার মতো ঘটনা ঘটে। কিন্তু এই ঘটনা গুলো বিশাল মানব মস্তিস্কের খুবই ক্ষুদ্র কোন অংশে সঞ্চিত থাকে, তাই ঘুম থেকে জাগার পর কোন কিছু আর মনে পরে না বলে অনেকে ধারণা করেন।

    অনেকে ঘুমের মধ্যে সপ্ন দেখে ভয় পান বা চিৎকার করেন। এই ঘটনা ঘুমের মধ্যে কথা বলা থেকে আলাদা। দীর্ঘ দিন ধরে নিয়মিত ভাবে কেউ যদি এই সমস্যার সম্মুখিন হন, তাহলে তার অবশ্যই ডাক্তার এর শরণাপন্ন হওয়া উচিত।

    ঘুমের মধ্যে কথা বলার কারণ :

    বিভিন্ন কারণে এই ডিসঅর্ডার দেখা যায়। সাধারণভাবে ঘুমের মধ্যে কথা বলার কারণগুলো হল – অত্যধিক মানসিক চাপ, হতাশা, জ্বর, পরিমিত পরিমাণ ঘুমের অভাব, অতিরিক্ত মদ্যপান ইত্যাদি। অনেকেই বংশগত ধারাবাহিকতায় এই ডিসঅর্ডার এ ভোগেন যার মাত্রা উপরিউক্ত প্রভাবগুলোর কারণে বৃদ্ধি পায়। তবে এ ধরণের এক্সট্রিম ডিসঅর্ডার দেখা যায় ২৫ বছর বয়সের পর। বংশগত ধারাবাহিকতায় ঘুমের মধ্যে কথা বলার ঘটনা সচরাচর দেখা যায় না।

    দৈনন্দিন কাজ, খাদ্য গ্রহণ এবং বিশ্রাম এর স্বাস্থ্যসম্মত রুটিন মেনে চললে সহজেই এই ডিসঅর্ডার থেকে রেহাই পাওয়া যায়। আপনি যদি বেশি চাপ নিয়ে কাজ করেন, কম ঘুমান, মদ্যপান করেন এবং প্রতিদিন আপনার খাদ্য গ্রহন ও বিশ্রামের কোন রুটিন না থাকলে, আপনি এই ডিসঅর্ডার এ বুগতে পারেন। এর ফলে কোন শারীরিক ক্ষতি না হলেও অস্বাভাবিক এই আচরণ আপনার পারিবারিক ও সামাজিক জীবনে বিরুপ প্রভাব ফেলতে পারে।

    যারা নিজের ঘুমের মধ্যে কথা বলার ব্যাপারটি জানেন তারা সাধারণত বাড়ির বাইরে বা অপরিচিত কোন পরিবেশে ঘুমাতে ভয় পান। তবে নিয়মিত স্বাস্থ্য সম্মত ভাবে জীবন যাপন করলে এই রোগ থেকে খুব সহজেই নিস্তার পাওয়া সম্ভব। তাই ঘুমের মধ্যে কথা বলা – ডিসঅর্ডার টি নিয়ে আতঙ্কিত না হয়ে নিয়মিত ভাবে সময় মতো খাওয়া – দাওয়া করুন, বিশ্রাম নিন, ব্যায়াম করুন। অতিরিক্ত চাপ নিতে হয় এমন পরিস্থিতি এড়িয়ে চলুন। তাতেও সমস্যার সমাধান না হলে ভয় বা লজ্জা না পেয়ে ডাক্তার বা মনোরোগবিশেষজ্ঞর সাথে কথা বলুন।

    Professor Answered on May 14, 2015.
    Add Comment
  • RELATED QUESTIONS

  • POPULAR QUESTIONS

  • LATEST QUESTIONS

  • Your Answer

    By posting your answer, you agree to the privacy policy and terms of service.