জন্ডিস হলে করনীয় কি?
জন্ডিস হলে করনীয় কি?
সাধারণভাবে আমরা সবাই জানি জন্ডিস হলো
লিভার বা রকৃতেয় রোগ। অধিকাংশ ক্ষেত্রে এটা
সত্য হলেও অনেক ক্ষেত্রে জন্ডিসের আরো অনেক
কারণ থাকে। সহজভারে বললে রক্তে বিলিরুবিলের
পরিমাণ বেড়ে গিয়ে চামড়া, চোখ, প্রস্রাব,
মুখগহবরে হলুদ বর্ণ ধারণ করলে তাকে জন্ডিস
বলে। বিলিরুবিন হচ্ছে রক্তের লোহিত কনিকা
ভেঙে গিয়ে তৈরি রাসায়নিক উপাদান।
বিলিরুবিন লিভারে গিয়ে পিত্ততে পরিণত হয়।
পিত্ত লিভার থেকে বের হয়ে যায় বলেই আমাদের
জন্ডিসে আক্রান্ত হতে হয় না।
কাজেই কোন কারণে লোহিত কনিকা বেশি বেশি
ভেঙে বিলিরুবিণ তৈরি হলে। বিলিরুবিন লিভারে
পিত্ততে পরিণত না হতে পারলে অথবা পিত্ত
লিভারে তৈরি হলো ঠিক কিন্তু বের হবার রাস্তায়
কোন বাধা থাকলে জন্ডিস হয়ে থাকে।
জন্ডিসের প্রকারভেদ : জন্ডিসকে তিনভাগে ভাগ
করা যায়
১. প্রি-হেপার্টিক : রক্তের লোহিত কনিকা কোন
কারণে বেশি বেশি ভাঙলে। যেমন: ক.
হিমোলাইটিক এনেমিয়া, খ. ম্যালেরিয়া, গ.
থ্যালাসেমিয়া।
২. হেপাটিক : লিভারের মধ্যে কোন সমস্যা
থাকলে। অধিকাংশ জন্ডিস এ কারণেই হয়ে থাকে।
যেমন: ভাইরাল হেপাটাইটিস (অ,ই,ঈ,উ,ঊ),
অতিরিক্ত মদাপানের ফলে, লিভার ক্যান্সার হলে।
৩. পোস্ট হেপার্টিক পিত্ত লিভারে তৈরি হবার
পর লিভার থেকে বের হবার রাস্তায় কোন সমস্যা
থাকলে। যেমন : পিত্তনালীয় রাস্তায় পাথর,
পিত্তনালীর ক্যান্সার।
জন্ডিসের লক্ষণ
শরীরের বিভিন্ন অংশ যেমন চামড়া, চোখ, মুখগহবর
হলূদ বর্ণ ধারণ করা, প্রস্রাবের রঙ হলুদ হওয়া,
পায়খানা ফ্যাকাসে হওয়া, বমি বমি ভাব ও পেটে
ব্যথা। কারো কারো জ্বর হতে পারে। পেট ও পায়ে
পানি আসতে পারে।
জন্ডিস বুঝতে হলে কী করবেন?
আপনার জন্ডিস আছে কি-নাই তা সহজেই রক্তের
বিলিরুবিল পরীক্ষার মাধ্যমে বুঝতে পারবেন।
স্বাভাবিক বিলিরুবিন .২-১.২ মি.গ্রা./ডি. লি.
সুপ্ত জন্ডিস ১.২-২ মি. গ্রা./ডি: লি.
পূর্ন জন্ডিস ২ মি:গ্রা./ডি. লি.
যদি বিলিরুবিনের মাত্রা ২মি.গ্রা/ ডি. লি.-এর
বেশি হয় তাহলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন।
জন্ডিসে করণীয়
প্রচুর পানি পান করুন ও বিশ্রামে থাকুন, চিকিৎসক
যে সমস্ত ঔষধ দিয়েছে তার বাইরে অন্য কোন ঔষধ
খাবেন না। এলকোহল পান করা থেকে বিরত থাকুন।
হায়বালজাতীয় ঔষধ খাবেন না।
অনেকেই মনে করেন হারবাল ঔষধ গাছ-গাছড়া
থেকে তৈরি হয় বলে এতে কোন সমস্যা নাই। কিন্তু
এটা ভুল ধারণা। অনেক সময় দেখা যায়, কবিরাজী
চিকিৎসা ও হারবাল জাতীয় ঔষধ খাওয়ার ফলে
লিভারে আরো বিরূপ প্রভাব পড়ে।
তেল-ভাজা পোড়া ও অতিরিক্ত মসলা জাতীয়
খাবার পরিহার করে চলুন।