জমি কীভাবে রেজিস্ট্রি করতে হয়?

    জমি কীভাবে রেজিস্ট্রি করতে হয়?

    Doctor Asked on September 26, 2016 in আইন.
    Add Comment
    1 Answer(s)

      জমিজমা রেজিস্ট্রি করার বিষয়টি কিছুটা হলেও জটিল প্রক্রিয়া। এটিতে অনেকগুলো বিষয় অন্তর্ভুক্ত। আসুন পর্যায়ক্রমে বিষয়গুলো সম্পর্কে জেনে নিই।

      রেজিস্ট্রি :

      আসলে রেজিস্ট্রি বিষয়টা কী এটা আমরা অনেকেই জানি না। ১৯০৮ সালের রেজিস্ট্রেশন আইন অনুযায়ী, কোন জমি বা ভূখন্ড হস্তান্তর করতে হলে বা মালিকানা পরিবর্তন করতে হলে সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে নির্ধারিত ফরমে ক্রেতা-বিক্রেতার চাহিদা মাফিক তথ্যাবলী ও দলিলাদি উল্লেখ করে যে নিবন্ধন করা হয় এবং যাতে জমির পরিচিতি উল্লেখ থাকে যা দলিলে লেখা হয়, এ ধরণের দলিল সাব-রেজিস্ট্রারের মাধ্যমে নিবন্ধিত করাকে রেজিস্ট্রি বলে। যে ক্ষেত্রে দলিল দাতা অথবা গ্রহীতা সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে যেতে পারেন না সে ক্ষেত্রে যে কোন পক্ষের চাহিদা মোতাবেক সাব-রেজিস্ট্রার কমিশনের মাধ্যমে দলিল রেজিস্ট্রি করতে পারেন।

      বাংলাদেশে অনেক মানুষই ভূমি আইন সম্পর্কে খুব বেশি জানেন না। ফলে তারা জমি নিয়ে নানা ধরনের প্রতারণা ও হয়রানির শিকার হন। জমি রেজিস্ট্রেশন করা খুবই জরুরি।

      রেজিস্ট্রেশন আইন ২০০৪ (সংশোধিত) অনুযায়ী, সকল দলিল রেজিস্ট্রি করা বাধ্যতামূলক। আইন অনুযায়ী দলিল রেজিস্ট্রি করা হলে মালিকানা নিয়ে বিরোধ এড়ানো যায়। এছাড়া জমি রেজিস্ট্রি করা থাকলে পরবর্তীতে বিক্রি, দান, উইল করতে সহজ হয়। স্থাবর সম্পত্তি বিক্রয় দলিল অবশ্যই লিখিত হতে হবে।

      দলিলের ক্ষেত্রে রেজিস্ট্রেশন :

      – বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে দলিল অবশ্যই রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। যেমন :

      – বিক্রয় দলিল অবশ্যই রেজিস্ট্রি করতে হবে।

      – জমি ক্রয় করার পূর্বে বায়না দলিল সম্পাদন করলে তা ৩০ দিনের মধ্যে রেজিস্ট্রেশনের জন্য উপস্থাপন করতে হবে। রেজিস্ট্রি ছাড়া বায়না দলিলের আইনগত মূল্য নেই।

      – বায়না দলিল রেজিস্ট্রির তারিখ হতে ১ বছরের মধ্যে বিক্রয় দলিল সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে দাখিল করতে হবে।

      – হেবা বা দানকৃত সম্পত্তির দলিলও রেজিস্ট্রি করতে হবে।

      – বন্ধককৃত জমির দলিল রেজিস্ট্রি করতে হবে।

      – কোন ভূমি সম্পত্তি মালিকের মৃত্যু হলে তার উত্তরাধিকারীদের মধ্যে তার রেখে যাওয়া সম্পত্তি বাটোয়ারা করা এবং উক্ত বাটোয়ারা বা আপোষ বণ্টন নামা রেজিস্ট্রি করতে হবে।

      প্রয়োজনীয় বিষয় :

      রেজিস্ট্রেশন করার জন্য কিছু তথ্যের প্রয়োজন হয়।

      – জমি রেজিস্ট্রি করতে বিক্রিত জমির পূর্ণ বিবরণ উল্লেখ থাকতে হবে।

      – দলিলে দাতা-গ্রহীতার পিতা-মাতার নাম, পূর্ণ ঠিকানা এবং সাম্প্রতিক ছবি সংযুক্ত করতে হবে।

      – যিনি জমি বিক্রয় করবেন তার নামে অবশ্যই নামজারী (মিউটেশন) থাকতে হবে (উত্তরাধিকার ছাড়া)।

      – বিগত ২৫ বছরের মালিকানা সংক্রান্ত সংক্ষিপ্ত বিবরণ ও সম্পত্তি প্রাপ্তির ধারাবাহিক ইতিহাস লেখা থাকতে হবে।

      – সম্পত্তির প্রকৃত মূল্য, সম্পত্তির চারদিকের সীমানা, নকশা দলিলে থাকতে হবে।

      – দাতা কর্তৃক বিক্রিত সম্পত্তি অন্য কারো কাছে বিক্রি করেনি মর্মে হলফনামা থাকতে হবে।

      – জমির পর্চাসমূহে (সি.এস, এস. এ, আর.এস) মালিকানার ধারাবাহিকতা থাকতে হবে।

      – বায়া দলিল (প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে) থাকতে হবে।

      দলিল রেজিস্ট্রি করা হয় রেজিস্ট্রেশন আইন,স্ট্যাম্প আইন, আয়কর আইন, অর্থ আইন ও রাজস্ব সংক্রান্ত বিধি এবং পরিপত্রের আলোকে। সকল দলিলের রেজিস্ট্রি ফিস সমান নয়। সরকার বিভিন্ন সময় সমসাময়িক বিবেচনা অনুযায়ী রেজিস্ট্রি ফিস নির্ধারণ করে থাকেন।

      ভ্যাট ও উৎস কর সব সময়ই জমির বিক্রেতা প্রদান করবে। আয়কর আইন মতে, এই দুই ধরণের কর বিক্রেতার আয়ের ওপর ধার্য হয়। এই কর বিক্রেতার নামে সরকারি কোষাগারে জমা দিতে হয়। উৎস কর ও ভ্যাট ছাড়া অন্যান্য সকল ধরণের কর জমির ক্রেতাকে পরিশোধ করতে হবে।

      অ্যাডভোকেট জয়নাল আবেদীন চৌধুরি রিগ্যান

      Professor Answered on September 26, 2016.
      Add Comment
    • RELATED QUESTIONS

    • POPULAR QUESTIONS

    • LATEST QUESTIONS

    • Your Answer

      By posting your answer, you agree to the privacy policy and terms of service.