জীবনে সবচেয়ে মূল্যবান জিনিস কী?
একদিন এক কৌতূহলী ছেলে এক জ্ঞানী বৃদ্ধের কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করল, “জীবনে সবচেয়ে মূল্যবান জিনিস কী?”
বৃদ্ধ ধীরস্থিরভাবে উত্তর দিলেন, “জীবনে সবচেয়ে মূল্যবান জিনিস হলো সময়।”
ছেলেটি ভ্রু কুঁচকে বলল, “সময়? টাকা, খ্যাতি, কিংবা ক্ষমতা নয়?”
বৃদ্ধ হেসে বললেন, “না, কারণ টাকা তুমি উপার্জন করতে পারো, খ্যাতি অর্জন করতে পারো, ক্ষমতাও পেতে পারো। কিন্তু সময়? একবার চলে গেলে, তা আর ফিরে আসে না।”
ছেলেটি ভাবল, তারপর বলল, “কিন্তু টাকা দিয়ে কি সময় কেনা যায় না?”
বৃদ্ধ আরও হাসলেন। “টাকা দিয়ে তুমি ঘড়ি কিনতে পারো, কিন্তু সময় নয়। এবং যদি সময় কিনতে পারতে, তার কোনো মূল্য থাকত না যদি তুমি এটি সঠিকভাবে ব্যবহার করার বুদ্ধি না রাখতে।”
“তাহলে আমি কীভাবে আমার সময়কে সর্বোচ্চ কাজে লাগাব?” ছেলেটি জিজ্ঞেস করল।
বৃদ্ধ একটু থেমে বললেন, “সময়কে সঠিকভাবে কাজে লাগানোর মূলমন্ত্র হলো এটি এমন কাজে ব্যবহার করা যা তোমার চারপাশের মানুষ এবং পৃথিবীকে ইতিবাচকভাবে প্রভাবিত করে। নিজের স্বার্থের বাইরে গিয়ে অন্যকে সাহায্য করো। এমন কিছু শিখো যা তোমাকে আরও সমৃদ্ধ করবে। তোমার আবেগ আর স্বপ্নের পেছনে ছুটো। আর সব সময় মনে রেখো, প্রতিটি মুহূর্তই একটি উপহার। এটিকে অপচয় কোরো না।”
ছেলেটি গভীরভাবে চিন্তা করল। “সময়কে কীভাবে উপহার হিসেবে দেখা যায়?”
বৃদ্ধ বললেন, “প্রতিটি সূর্যোদয় একটি নতুন সুযোগ, প্রতিটি দিন তোমার অমলনামার একেকটি পৃষ্টা। তুমি কীভাবে এটি লিখবে, সেটি তোমার হাতে। তুমি যদি জীবনের ছোট ছোট মুহূর্তগুলো উপভোগ করতে পারো, যদি অন্যদের জন্য কিছু করে যাও, তবে প্রতিটি দিনই তোমার কাছে বিশেষ হয়ে উঠবে।”
সেদিন থেকে ছেলেটি তার সময়কে নতুন দৃষ্টিতে দেখতে শিখল। সে প্রতিটি দিন এমনভাবে কাটাতে লাগল যেন সেটি তার জীবনের সেরা দিন। সে মানুষের পাশে দাঁড়াল, নতুন কিছু শিখল, নিজের স্বপ্ন পূরণে এগিয়ে গেল।
বছর শেষে, বৃদ্ধ তাকে দেখে বললেন, “দেখো, তুমি সময়কে যেভাবে ব্যবহার করেছ, সেটিই তোমার জীবনের গল্পকে বিশেষ করে তুলেছে। এটা চালিয়ে যাও। কারণ জীবন সত্যিই সুন্দর, যদি আমরা সময়কে সঠিকভাবে ব্যবহার করতে পারি।”
তোমার প্রতিটি মুহূর্তই মূল্যবান। এটি এমন কাজে ব্যয় করো যা তোমার হৃদয় ও আত্মাকে পূর্ণ করে, এবং পৃথিবীকে একটি সুন্দর জায়গায় পরিণত করে। সময়ের সঠিক ব্যবহারই জীবনকে অর্থপূর্ণ করে।