জীবন আপনাকে সবচেয়ে বড় পাঠ কী শিখিয়েছে?
জীবন আপনাকে সবচেয়ে বড় পাঠ কী শিখিয়েছে?
ধন্যবাদ প্রশ্নটা করার জন্য।
জীবন আমাকে হাতে কলমে শিখিয়ে— ‘নিজের পায়ে দাঁড়াতে হবে, নিজের একটা পরিচয় তৈরি করতে হবে’।
একটা সময় ছিল যখন আমি মনে করতাম, এই পৃথিবীর সবাই আমার ভীষণ আপন, সবাই আমার খুব নিজের এঁদের পরিচয়ই আমার পরিচয়।
অবশ্য এখনো আমি সবাই কে খুব আপন ভাবি, আমার কাছের মানুষ ভাবি, তবে এখন এটা বুঝে গেছি তোমার যদি একটি নিজস্ব পরিচয় না থাকে, জীবনে যদি প্রতিষ্ঠিত হতে না পার তাহলে তুমি এই সমাজ, পরিবার পরিজন থেকে আস্তে আস্তে নিজেরই অজান্তেই পিছিয়ে পড়বে। আর এটা কিন্তু চরম বাস্তব।
আপনার যদি অর্থ না থাকে তাহলে আপনার সমাদর কেউ করবে না। আর এতে দুঃখ পাওয়ার ও কিছু নেই। আসলে ছোট্ট থেকে আমাদের মস্তিষ্ক এমন ভাবেই তৈরি, আমরা এটা দেখতে দেখতে বড় হই, যে কাকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া উচিত আর কাকে নয়। এই জন্যই প্রতিটা মানুষই যাঁর সম্পদ আছে তাঁকে বেশি সম্মান করে।
কিছু লোক বলে আমি ঐ সব বড় লোক টোক দের একদম পাত্তা দিই না, আসলে আমরা কখন এমন বলি জানেন?
যখন আমরা নিজে তাঁর সমতুল্য হতে না পারি এবং নিজের অস্তিত্ব সংকটে পড়ার উপক্রম হয় তখন।
আমরা যদি বাস্তবের মাটিতে দাঁড়ায় তাহলে খুব ভাল করে উপলব্ধি করতে পারব, এই পৃথিবীটা অর্থের উপরে দাঁড়িয়ে।
অভাব, দারিদ্র্য মানুষের সঙ্গ কেউ চায় না, একটা বাচ্চার যদি ভাল কোন কিছু না দেওয়া যায় তাহলে তাঁর ভাল বাবা,মা হওয়া যায় না, স্ত্রীকে মনের মতো উপহার দিতে না পারলে খুব বেশিদিন ভাল স্বামী থাকা যায় না, বাবা, মা দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে না পারলে ভাল সন্তান হওয়া যায় না। ( যদিও অনেক ব্যতিক্রম সম্পর্ক আছে, সবাই সমান নয়) তবে বেশিরভাগ ই এমন হয়। আর এতে কিছু আশ্চর্য হওয়ার ও কিছু নেই, এই পৃথিবীতে সুখ কে না চাই বলুন?
তবে সময়ে বন্ধু আর অসময়ে পর করে দিলে কষ্ট হয়, এই আর কি। আসলে আমরা তো বাস্তব মানতে পছন্দ করি না ,বা ভয় পায় তাই তো সমস্যা হয়।
আমি জীবন থেকে এই শিক্ষা নিয়েছি, এবং আমি অন্য কেউ বলি, যদি জীবনে কারো কাছে সম্মান পাওয়ার সত্যিই ইচ্ছা থাকে তাহলে আগে নিজের পা টা একটা শক্ত জায়গায় দাঁড় করাও, নিজেকে প্রতিষ্ঠিত কর তারপর সবাই কে সঙ্গে নিয়ে চল।
একা একা কখনোই বাঁচা যায় না বা ভাল থাকে যায় না এবং কাছের মানুষ গুলো ছাড়াও জীবন বৃথা তাই সবার কাছে ভালবাসা পেতে গেলে ,সম্মান পেতে গেলে নিজেকে সেই সব কিছুর যোগ্য করে তুলতে হবে। আর আমি বর্তমানে এটাই করার চেষ্টা করছি এবং আমি আশাবাদী আমি আমার লক্ষ্য ঠিক পূরণ করব।
আমি আমার জীবন থেকে অনেক কাছের মানুষ কে হারিয়ে ফেলেছি, কিন্তু এমন কিছু ই ঘটত না যদি আমার একটা নিজস্ব পরিচয় থাকত তবে।
আমি সব কিছু আবার আমার জীবনে ফিরত চাই। তাই এখন নিজেকে তৈরি করছি। তবে সবাই কে অজস্র ধন্যবাদ জানাই কারণ তাঁরা যদি আমাকে মাথায় তুলে রাখত তাহলে আমি কোন দিনই নিজের দিকে তাকাতাম না।
তাই জীবনের দেওয়া শিক্ষা তে আমি বড় খুশি। এবং জীবনের দেওয়া বড় পাঠ আমার জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেবে এটা আমি আশাবাদী।
ধন্যবাদ আপনাকে।
ভাল থাকবেন।