জীবন সম্পর্কে কিছু দুঃখজনক সত্য কী?
জীবন সম্পর্কে কিছু দুঃখজনক সত্য কী?
বেকারত্বের অভিশাপে অভিশপ্ত ছেলেটা মৃত, কুড়ি বছর বয়সি মেয়েটা পরিবারের কাছে মৃত লাশ! পরিবারের ঘাড়ে চেপে আছে, বিয়ে দিয়ে দিতে পারলেই হাঁপ ছেড়ে বাঁচে। নশ্বর এই পৃথিবীতে মানুষ কুড়ি বছর বয়সে মারা যায়, শুধু দাফন হয় ষাট পয়ষট্টি বছরে গিয়ে। এলোপাতাড়ি মানুষের বডি চেকআপ করলে দেখা যাবে- অধিকাংশ মানুষের দেহ পরে আছে;মন মরে গেছে। কুড়ি বছর বয়সের পর মানুষ আসলে ভিতরে ভিতরে মরে গিয়ে জিন্দালাশ হয়ে ঘুড়ে বেড়ায় পৃথিবীতে।
একটা সময় পত্রিকার পাতায় আত্মহত্যার কলামে চোখ পড়লে পৃষ্ঠা উল্টিয়ে আত্মহত্যার রহস্য উদঘাটন করতাম, কিন্তু এখন আর ইচ্ছে করে না! আত্মহত্যা ক্যান জানি অস্বাভাবিক মনে হয় না, আমাকে ভাবিয়ে তুলে না। আত্মহত্যা “মহাপাপ” এই একটা শব্দ বিশ্বাস করে হাজারো জিন্দালাশে’র, মৃত লাশ হয়ে উঠা হয় না।
শুনেছি জীবিত আত্মার ওজন একুশ গ্রাম। তবে মৃত আত্মার ওজন কতো? শহরের অলি গলিতে শতশত জীবিত লাশ ঘুরে বেড়ায় রাত বিরেতে- তাদের কাছে একটা মৃত আত্মা আছে, তারা আসলে কতো গ্রাম, কেজি, মন, কিংবা টন এর মতো ভারী বস্তু নিয়ে ঘুরে বেড়ায় জানিনা! জানতে খুব ইচ্ছে করে। তাদের মৃত আত্মার ওজন কতো? অদ্ভুত সব প্রশ্নের সমীকরণ মেলাতে গিয়ে, নিজের ভেতরে থাকা মৃত আত্মা যুক্তি খুঁজে- শুনেছি পৃথিবীর সবচেয়ে ভারী বস্তু পিতার কাঁধে ছেলের লাশ, কিন্তু এই ভারী বস্তু বাবা বয়ে থাকেন ক্ষনিকের জন্য, কিন্তু আত্মা একবার মরে গেলে সেটা বয়ে বেড়াতে হয় ষাট থেকে পয়ষট্টি বছর পর্যন্ত। তাতে বাবার বেশি কষ্ট❝ নাকি এক জীবন বেঁচে থাকা জীবিত লাশের?
কুড়ি বছর বয়সে প্রিয় মানুষ’টা ছেড়ে যাওয়ার পর মৃত আত্মা নিয়ে ঘুরে বেড়ানো ছেলেটার বয়স ষাট পয়ষট্টির কৌটৌয় পৌঁছোলে চামড়ায় ভাজ পরবে, মৃত আত্মা জীবিত হবে, জীবিত লাশ মৃত হবে। মাইকিং হবে, শোক সংবাদ। সেদিন তোমরা আমার কুড়ি বছরে মন মরা, পয়ষট্টি বছরের দেহ মরা লাশটি’কে কেনো এক জবা কিংবা কৃষ্ণচূড়া গাছের নিচে দাফন করে দিও।