দাম্পত্য জীবনে কীভাবে সুখী হওয়া যায়?
দাম্পত্য জীবনে কীভাবে সুখী হওয়া যায়?
দাম্পত্য সম্পর্কে নানা কারণেই ফাটল ধরে যায় খুব সহজে। কিছু কিছু সময়ে অযথাই কিছু ভুল বোঝাবোঝির কারণে সম্পর্কে তিক্ততা চলে আসে। ফলে সম্পর্ক টিকিয়ে রাখা যায় না বেশীদিন। কিন্তু এই বিবাহ বন্ধন এতো ঠুনকো নয় যে চাইলেই ভেঙে ফেলা যায়। তখন শুরু হয় যন্ত্রণা। একটি বিষাক্ত সম্পর্কে টেনে নিয়ে যেতে হয় দুপক্ষকেই।
এইসকল ঝামেলা থেকে মুক্তি পাওয়া কিন্তু খুবই সহজ। কিছু ছোট্ট কাজ আপনার দাম্পত্য জীবনে এনে দিতে পারে অনাবিল সুখ ও আনন্দ। আপনি চাইলেই এই ছোট্ট কাজের মাধ্যমে সঙ্গীর সাথে মধুর সম্পর্ক স্থাপন করে দীর্ঘস্থায়ী সুখী সম্পর্কে থাকতে পারবেন। জীবনটা তখন অন্যরকম সুখে ভরে উঠবে।
সঙ্গীর সাথে যতোটা সম্ভব ভালো ব্যবহার করুন
মন মেজাজ খারাপ যে কোনো কারণেই হতে পারে। তখন সঙ্গীর সাথে খারাপ ব্যবহার করা কিন্তু একেবারেই উচিৎ নয়। কিংবা অন্যের রাগটাও মাঝে মাঝে সঙ্গীর ওপরেই ঝেড়ে ফেলা হয় যার প্রভাব পড়ে সম্পর্কে। তাই নিজের মধ্যে কিছুটা হলেও নিয়ন্ত্রণ আনুন এবং সঙ্গীর সাথে সবসময় ভালো ব্যবহারের চেষ্টা করুন।
সঙ্গীর জন্য সময় বের করুন
সঙ্গীকে আপনার সময় দিন। হতে পারে আপনি কাজে অনেক ব্যস্ত, কিন্তু তারপরও ব্যস্ততার মাঝেও সঙ্গীকে দেয়ার জন্য সময় বের করে নিন। নতুবা আপনাদের সম্পর্কে দূরত্ব এসে যাবে যা পরবর্তীতে মেটানো সম্ভব হয়ে উঠবে না।
‘আমি তোমাকে ভালোবাসি’ কথাটি বারবার বলুন
সঙ্গীকে কতোটা ভালোবাসেন তা নিজের কথার মাধ্যমে প্রকাশ করুন। অনেকে মনে করে ভালোবাসার কথা তো সঙ্গী জানেনই, তা বারবার বলার কি আছে। কিন্তু এই জিনিসটি সম্পর্কে মধুরতা বাড়ায়। তাই দিনে যখনই সময় পাবেন ‘আমি তোমাকে ভালোবাসি’ কথাটি বলে ফেলুন।
সততা বজায় রাখুন
নিজে একজন সৎ মানুষ হিসেবে সঙ্গীর সামনে দাঁড়ান। এমন কিছুই করবেন না যা আপনার জন্য সঙ্গীর মনে সন্দেহের জন্ম দেয়। বিশ্বাস হচ্ছে সম্পর্কের মূল ভিত্তি। নিজের সততা বজায় রাখুন। দাম্পত্য জীবন দীর্ঘস্থায়ী হবে।
সম্পর্কে তৃতীয় কাউকে আনবেন না
স্বামী-স্ত্রীর মাঝে তৃতীয় কোনো ব্যক্তিকে আনবেন না। তিনি যদি শ্বশুর শাশুড়িও হন তবুও নয়। এতে সম্পর্কের দৃঢ়তা নষ্ট হয়ে যায়। একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধা কমে যায়।
ছোট্ট কিছু গিফট দিন
একটি ফুল, কিংবা ছোট্ট কিছু গিফটই মানুষকে খুশি করতে যথেষ্ট। বড় কিছু নয় সঙ্গী আপনার ছোট্ট কিছু গিফটেই আপনার মনের কথা জানতে পারবেন।
কিছু সময় পরস্পরের কাছ থেকে দূরে থাকুন
একে অপরের মূল্য কিছুটা হলেও বোঝা যায় যখন সঙ্গীর কাছ থেকে দূরে থাকা হয়। এতে করে সঙ্গী জীবনে কতোটা গুরুত্ব রাখে তা সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। তাই সম্পর্কের মধুরতা বজায় রাখতে মাঝে মাঝে আলাদা থেকে দেখুন।
বাস্তববাদী হোন
অবাস্তব কিছু আশা করবেন না সঙ্গীর কাছ থেকে। আপনার স্ত্রী যদি বাইরে চাকরী করেন তবে তার কাছ থেকে পুরো ঘর একা সামলানোর আশা করতে যাবেন না। আবার স্ত্রীরা আপনার স্বামীর প্রতি অযথা সন্দেহ ও অযথা নানা জিনিসপত্র কেনার বায়না করবেন না। সংসার আপনাদের দুজনেরই। দুজনকেই বাস্তবতা বুঝতে হবে।
সঙ্গীর পছন্দের খোঁজ খবর রাখুন
সঙ্গী কী কী জিনিস পছন্দ করেন তার খোঁজ খবর রাখুন। মাঝে মাঝে তার পছন্দের জিনিস দিয়ে সারপ্রাইজ দিয়ে দিন। এতে সম্পর্কে থাকে মধুরতা এবং সম্পর্ক হয় দৃঢ়।
নিজের সত্ত্বা বিসর্জন দেবেন না
সঙ্গীকে খুশি রাখতে গিয়ে নিজের সত্ত্বা বিসর্জন দিয়ে দেয়া কিন্তু আপনার সম্পর্কের জন্য ভালো নয়। কারণ আপনি তার প্রতি কথা মেনে নিলে তিনি কিন্তু আপনার ওপর নানা সময়ে নানা জিনিস চাপিয়ে দেবেন। বিচার বুদ্ধি ব্যবহার করুন। অন্যায় আবদার মেনে নেবেন না।
সঙ্গীর কথার গুরুত্ব দিন
সঙ্গী যে কথাই বলুন না কেন একটু গুরুত্ব সহকারে শোনার চেষ্টা করুন। হতে পারে কথাটি আপনার কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। তখন তাকে বোঝানোর চেষ্টা করুন। কিন্তু আপনি যদি সঙ্গীর কথা নাই শুনলেন তবে তাকে অপমান করা হবে।
বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক তৈরি করে ফেলুন
সঙ্গীর সাথে বন্ধুর মতো সম্পর্কে গড়ে তুলুন। যেখানে অকপটে মনের সব কথা বলে দেয়া যায়, অনুভূতি ব্যক্ত করা যায়। এতে সম্পর্ক আরও দীর্ঘস্থায়ী ও উন্নত হবে।
কিছু ক্ষেত্রে ছাড় দিন
কোনো সম্পর্কই একেবারে পারফেক্ট নয়। কিছু সমস্যা সকল সম্পর্কেই থাকে। তাই মাঝে মাঝে ছাড় দিতে শিখুন। ছোটোখাটো বিষয় নিয়ে অযথা সম্পর্কে তিক্ততা তৈরি করবেন না।