দিন দিন মানুষের আয়ু কমে যায় কেন?
দিন দিন মানুষের আয়ু কমে যায় কেন?
আমাদের আশেপাশের অনেকেই হঠাৎ করেই নিজের অজান্তেই পা নাচানো শুরু করেন। একে বলা হয় ‘ক্লান্তিহীন পা সিন্ড্রম’। সম্প্রতি নিউরোলজি নামের একটি জার্নালে প্রকাশিত গবেষণা প্রতিবেদনে দেখা যায়, যাদের ‘ক্লান্তিহীন পা সিন্ড্রম’ আছে তাদের আয়ুষ্কাল অন্যান্যদের চেয়ে কম।
যাদের ক্লান্তিহীন পা সিন্ড্রম আছে তারা অন্যান্যদের চেয়ে ৪০ ভাগ বেশি মৃত্যু ঝুঁকিতে থাকেন। ক্লান্তিহীন পা সিন্ড্রম মানুষের কম আয়ুষ্কালকেই নির্দেশ করে। তবে গবেষকেরা জানান, ক্লান্তিহীন পা সিন্ড্রমের কারণে মানুষের আয়ুষ্কাল কম হয় না। তবে, ক্লান্তিহীন পা সিন্ড্রমের সাথে কম আয়ুষ্কালের সম্পর্ক আছে। গবেষকেরা আরো দেখান, যাদের ক্লান্তিহীন পা সিন্ড্রম আছে তারা সাধারণত হৃদরোগ, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়ার মতো কারণে মারা যান।
সাধারণত পাঁচ থেকে দশভাগ প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের এই ধরণের পা নাচানোর সমস্যা আছে এবং এই রোগীরা পা নাচা্নোর ব্যপারটিকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন না।
যাদের পা নাচানোর অভ্যাস আছে তারা উচ্চ রক্তচাপে ভোগেন। এই ধরণের মানুষকে ইনসোমনিয়া ও পার্কিনসন রোগে ভুগতে দেখা যায়। পা নাচানো ও উচ্চ মৃত্যুহারের সাথে ধূমপান, বয়স, শারীরিক পরিশ্রমের অভাব কিংবা ঘুমের অভাবের কোন সম্পর্ক নেই।
তবে গবেষকদের মতে যাদের ক্যান্সার, হৃদরোগ ও ইন্সোমনিয়ার মতো সমস্যা আছে পাশাপাশি পা নাচানোর অভ্যাসও আছে তাদের মৃত্যু ঝুঁকিও বেশি।
দিনে ঘুমালেও আয়ু কমে :
যারা রাতে ঘুম হয় না বলে কিংবা অলসতাবশত অফিসে অথবা বাসায় দিনে ঘুমান তাদের জন্য রয়েছে দুঃসংবাদ। ইউনিভার্সিটি অফ ক্যামব্রিজের সম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে, দিনের ওই ঘুম মানুষের আয়ু কমে যাওয়ার কারণ। গবেষণার ফলাফলে বলা হয়েছে, মধ্যবয়সী এবং বৃদ্ধদের দিনের ঘুম মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়ায়। ওই ঘুম মানুষকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়।
ওই গবেষণায় দেখা গেছে, ৪০-৬৫ বছরের মানুষ যারা দিনে এক ঘণ্টা বা এর বেশি ঘুমায় তাদের আয়ু অনেক কম, তাদের চাইতে যারা দিনে ঘুমায় না। ওই গবেষণাদলের প্রধান গবেষক ইউ লেং বলেন, “দিনে ঘুমের অভ্যাস শ্বাসসম্পর্কিত নানা রোগের জন্ম দেয়। বিশেষ করে দিনের ঘুমের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হন ৬৫ বছর বা তার চেয়ে একটু কম বয়সী মানুষরা।”
ইংল্যান্ডের ১৬ হাজার মানুষের ওপর ১৩ বছর ধরে ওই গবেষণা চালানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন ইউ লেং। ৪০-৭৯ বছর বয়স্কদের মধ্যে যারা প্রতিদিন এক ঘণ্টার কম সময় দিনে ঘুমান তাদের আয়ু ১৪ শতাংশই ওই গবেষণা চলাকালীন ১৩ বছরের মধ্যে মারা গেছেন। আর যারা প্রতিদিন এক ঘণ্টা বা তার বেশি সময় ঘুমান তাদের ৩২ শতাংই আরো কম সময়ের মধ্যেই দেহত্যাগ করেছেন। গবেষকরা বলেছেন, আরো যেসব বিষয় মানুষের মৃত্যুকে তরান্বিত করে তাহল, ধুমপান, ক্যান্সার, ডায়াবেটিস, অ্যাজমা প্রভৃতি।