দুনিয়াতে বেঁচে থেকে কেমন লাগছে আপনার ?

    দুনিয়াতে বেঁচে থেকে কেমন লাগছে আপনার ?

    Default Asked on June 30, 2024 in অনুসরণ.
    Add Comment
    1 Answer(s)

      আজ ভোরবেলা বাসা থেকে বের হয়েছি। প্রতিদিন গোছল করা আমার অভ্যাস। চলছে শীত কাল। রাতে আমি খালি গায় ঘুমাই। এটা আমার ছোটবেলার অভ্যাস। শীতকালেও আমি খালি গায় ঘুমাই। মোলায়েম কম্বল গায়ে দিয়ে খালি গায় ঘুমাতে ভালোই লাগে। আমি আবার ফ্যান ছেড়ে রাখি। জানালাটা খুলে রাখি। হু হু করে ঠান্ডা বাতাস আসে। সব মিলিয়ে ভালো লাগে। নিজেকে মিশরের সম্রাট বলে মনে হয়। একটা ঘোড়া আর তরবারি অথবা চাবুক থাকলে ভালো হতো। ঘোড়া নিয়ে ঘুরে বেড়াতাম। যেখানে অন্যায় দেখতাম লাগাতাম দুই ঘা করে।

      সুরভি ঘুম। আমার কন্যা ফারাজাও ঘুম। আমি সুরভিকে ডাক দিলাম না। নিজেই গরম পানি করলাম। গিজার আছে। কিন্তু গিজার আমার পছন্দ নয়। দাত ব্রাশ করতে করতে এক পাতিল গরম পানি হয়ে গেলো। ইচ্ছে করছে এক কাপ চা বানিয়ে খাই। কিন্তু সেটা সম্ভব না। রান্নাঘরে খুটখাট করলে সুরভি আর কন্যা ফারাজার ঘুম ভেঙে যেতে পারে। আমি কাউকে বিরক্ত করতে চা না। বাইরে থেকে চা খেয়ে নিবো। আমি আরাম করে গোছল করলাম।

      বাসা থেকে বের হয়ে বড় রাস্তায় এসে দাড়ালাম। সময় তখন সকাল ৭ টা ১৭ মিনিট। চারিদিকে কুয়াশা। ঠান্ডা বাতাস। আমি সবুজ রঙের একটা সুয়েটার পরেছি। তাই খুব একটা শীত লাগছে না। অবশ্য আমার শীত কম। ঢাকা শহরে আহামরি শীত হয় না। নদীর পাড়ের গ্রাম গুলোতে শীত বেশি হয়। বাসের জন্য দাড়িয়ে আছি। যাবো এলিফ্যান্ট রোড। দূরে একটা বাস দেখা যাচ্ছে। কি সুন্দর হেলে দুলে আসছে। বাসটা কাছে আসতেই আমি লাফিয়ে উঠলাম। ভাগ্য ভালো সিট পাওয়া গেলো। বেশির ভাগ সময় বাসে সিট পাওয়া যায় না। দাঁড়িয়ে গন্তব্যে যেতে হয়।

      কোনো কারন ছাড়াই বাসে হুট করে ঘুমিয়ে গেলাম। যখন ঘুম ভাঙ্গালো তখন আমি মিরপুর ১০ নম্বরে। অর্থ্যাৎ আমি ভুল বাসে উঠেছিলাম। আমার যাওয়ার কথা ছিলো- এলিফ্যান্ট রোড। ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি সাড়ে আট টা বেজে গেছে। ক্ষুধা পেয়েছে। রাব্বানী হোটেল কাছেই। অনেক কিছু অর্ডার করে খেতে বসলাম। আজকাল কমপক্ষে ৪/৫ পদ সামনে না থাকলে ভালো লাগে না। কিছুই খেতে স্বাদ লাগলো না। নেহারি, গরুর মাংস, স্যুপ, হালুয়া। এমনকি চা। শুধু শুধু ৪৪০ টাকা বিল দিলাম। খাবার গুলো যেন নষ্ট না হয়, তার জন্য পার্সেল নিয়ে নিলাম। রাস্তায় দরিদ্র কোনো মানুষকে দিয়ে দেওয়া যাবে। খাবার অপচয় আমার খুব অপছন্দ। দরিদ্র দেশে যারা খাবার অপচয় করে তাদের থাপড়ানো উচিৎ।

      এখন কি কিরবো? কোথায় যাবো বুঝতে পারছি না। অবশ্য কাছেই চিড়িয়াখানা। বাঘ, সিংহ, হাতি দেখা যেতে পারে। চিড়িয়াখানায় গিয়ে দেখি, বন্ধ। আজ রবিবার। রবিবার সাপ্তাহিক বন্ধ। আজকের দিনটা আমার খারাপ যাচ্ছে কেন? বোটানিক্যাল গার্ডেন খোলা আছে। গেলাম। শান্ত নিরিবিলি পরিবেশ। অনেক গাছপালা। গাছপালা আমার সব সময় ভালো লাগে। একটা বেঞ্চে অনেকক্ষন বসে থাকলাম। কত কি ভাবলাম। আগে একবার সুরভি আর আমি বোটানিক্যাল গার্ডেন এসেছিলাম। সুরভির কি মনে আছে? হ্যাঁ অবশ্যই মনে আছে। তার সব মনে থাকে। দিন তারিখ সহ। আরেকদিন সুরভিকে নিয়ে আসবো।

      আপাতত আমার ইচ্ছা ঢাকার আশেপাশে কোথাও কিছু জমি কিনবো। অনেক গাছ লাগাবো। গাছ গুলোর যত্ন আমি নিজের হাতে করবো। একটা পুকুর থাকবে। বরশি দিয়ে মাছ ধরবো। পুকুরটা মার্বেল টাইলস দিয়ে সুন্দর করে বাঁধাই করবো। থাকার জন্য ঘর করবো। মাঝে মাঝে পরিবার নিয়ে এসে কয়েকদিন থেকে যাবো। একটা লাইব্রেরী করবো। গাছের নিচে শুয়ে বসে বই পড়বো। তবেই না চিৎকার করে বলতে পারবো লাইফ ইজ বিউটিফুল। অসম্ভব কিছু না। আমি পারবো।

      Professor Answered on June 30, 2024.
      Add Comment
    • RELATED QUESTIONS

    • POPULAR QUESTIONS

    • LATEST QUESTIONS

    • Your Answer

      By posting your answer, you agree to the privacy policy and terms of service.