পুরুষেরা আজীবন নারীদেরকে বুদ্ধিহীন আর বোকা বলতেই ভালোবাসেন। তবে এবার বোধহয় সে অপবাদ ঘুচল। কেননা সাম্প্রতিক এক গবেষণা বলছে নারীরা নয়, বরং পুরুষেরাই অধিক নির্বোধ! ব্রিটিশ মেডিক্যাল জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণার তথ্যে দেখা যায়, নির্বুদ্ধিতার জন্য দেওয়া “ডারউইন অ্যাওয়ার্ড” যারা পেয়েছেন তাদের মাঝে ৮৮.৭ শতাংশই পুরুষ।
ডারউইন অ্যাওয়ার্ড তাদেরকেই দেওয়া হয়, যারা নিজেদের নির্বুদ্ধিতার অযথা ঝুঁকি নিয়ে কারণে আহত এমনকি নিহত হয়ে থাকেন। তবে এই গবেষণা যে করেছেন তিনি নিজেই ১৫ বছর বয়সী এক তরুণ। ইংল্যান্ডের নিউক্যাসলের বেন আলেক্সান্ডার ড্যানিয়েল লেন্ড্রেম তার বাবা ডেনিস ল্যান্ড্রেম এর সাহায্যে এই গবেষণা করেন।
এই গবেষণায় বলা হয়, পুরুষেরা এমন সব ঝুঁকি নিয়ে থাকেন যাতে সফল হলেও তেমন কোনো লাভই হয়না। তাদের গবেষণায় উপস্থাপন করা হয় মেল ইডিয়ট থিওরি (MIT) যেখানে বলা হয় পুরুষের মাঝে এসব অপ্রয়োজনীয় ঝুঁকি নেওয়ার প্রবণতা দেখা দেয় শুধুই তাদের নির্বুদ্ধিতার কারণে। ডারউইন অ্যাওয়ার্ড এই বিজয়ীদের আচরণ বিশ্লেষণ করে তারা এই ব্যাপারটি প্রমাণ করার চেষ্টা করেন।
ডারউইন অ্যাওয়ার্ড এর ২০ বছরের বিজয়ীদের তথ্য নিয়ে তারা গবেষণা করেন এবং যাদের মৃত্যুর ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যায় তাদের ঘটনাগুলো নিয়েই তারা কাজ করেন। যেসব ক্ষেত্রে যুগ্মভাবে নারী ও পুরুষ বিজয়ী হয়ে থাকেন সেসব ঘটনাও বাদ দেওয়া হয়।
এর ফলে বাকি থাকে ৩১৮ টি ডারউইন অ্যাওয়ার্ড। এর মাঝে ২৮২ টি পান পুরুষেরা এবং ৩৬ টি পান নারীরা। গবেষকেরা বলেন এই বিশাল পার্থক্য থেকেই বোঝা যায় পুরুষদের মাঝে নির্বুদ্ধিতার প্রবণতা বেশি। কিন্তু সাধারন একটি মৃত্যু এবং ডারউইন অ্যাওয়ার্ড পাওয়া মৃত্যুর মাঝে পার্থক্য কি?
একটা বন্দুকে গুলি ভরা নেই, সেটা প্রমাণ করতে নিজের মাথার দিকে বন্দুক তাক করার দরকার নেই বটে, কিন্তু এতে একটু হলেও যুক্তি আছে।কারণ আপনার জানামতে বন্দুকে গুলি নেই এবং আপনি নিরাপদ। অপর দিকে, বন্দুকে গুলি ভরা আছে এটা প্রমাণ করতে গিয়ে নিজের মাথায় বন্দুক তাক করাটা একেবারেই নির্বুদ্ধিতা। কারণ আপনার ধারণা সত্যি হলে বন্দুকে গুলি থাকবে এবং আপনি মারা যাবেন নিশ্চিত। এ ধরণের নির্বুদ্ধিতা থেকে আহত বা নিহত হওয়া মানুষদের জন্যই ডারউইন আওারদ।
অন্যান্য উদাহরণও আছে, যেমন এক সন্ত্রাসী ডাকের মাধ্যমে বোমা পাঠানোর সময়ে যথেষ্ট স্ট্যাম্প লাগায়নি সেই প্যাকেজের ওপর। ফলে সেই প্যাকেজ আবার তার কাছেই ফেরত আসে এবং তা খুলতে গিয়ে সে মারা যায়।
এই গবেষণা অনেকটাই কৌতুকমূলক। কিন্তু অনেক গুরুগম্ভীর গবেষণাতেও দেখা গেছে পুরুষেরা ঝুঁকি নিতে বেশি পছন্দ করে এবং নিজেদের এই প্রবণতা নিয়ন্ত্রন করতে তারা কম পারদর্শী। তবে এই গবেষণারও কিছু ফাঁক-ফোকর আছে। পুরুষেরা নারীর চাইতে বেশি অ্যালকোহল পান করে। এর প্রভাবেও তাদের মাঝে অযৌক্তিক কাজ করার প্রবণতা দেখা দিয়ে থাকতে পারে।
(মূল: Anna Almendrala, Huffington Post)