পিতামাতা মারা যাওয়ার পর তাদের আত্মার কল্যাণের জন্য কি কি করা যায়?

পিতামাতা মারা যাওয়ার পর তাদের আত্মার কল্যাণের জন্য কি কি করা যায়?

Vice Professor Asked on April 15, 2015 in ইসলাম ধর্ম.
Add Comment
1 Answer(s)
    তাদের জন্য নিম্নলিখিত কাজগুলো করা যায়ঃ-

    (১) তাদের জন্য দুয়া করা যায়। রাসুলুল্লাহ (সঃ) বলেছেন, “যখন কোন মানুষ মারা যায়, তখন তার কর্ম বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু তিনটি জিনিস নয়;  (ক) সাদকাহ জারিয়াহ,  (খ) যে বিদ্যা দ্বারা উপকার পাওয়া যায় অথবা (গ) নেক সন্তান, যে তার জন্য দুয়া করে।” (মুসলিম)

    (২) দান খয়রাত করা। এক ব্যক্তি নবী (সঃ) কে বলল, ‘আমার মা হঠাৎ  মারা গেছে। আমার ধারনা যে, সে কথা বলার সুযোগ পেলে সাদকাহ করত। সুতরাং আমি যদি তার পক্ষ থেকে সাদকাহ করি, তাহলে কি সে নেকি পাবে?’ তিনি বললেন, “হ্যাঁ।”  (বুখারি ও মুসলিম)

    আল্লাহর রাসুল (সঃ) বলেছেন, “মুমিনের মৃত্যুর পর তার আমল ও পুন্যকর্মসমুহ হতে নিশ্চিতভাবে যা এসে তার সাথে মিলিত হয়, তা হল; সেই ইলম, যা সে শিক্ষা করে প্রচার করেছে অথবা নেক সন্তান, যাকে রেখে সে মারা গেছে, অথবা কুরআন শরীফ, যা সে মিরাসরূপে ছেড়ে গেছে, অথবা মসজিদ, যা সে নিজে নির্মাণ করে গেছে, অথবা মুসাফিরখানা, যা সে মুসাফিরদের সুবিধার্থে নির্মাণ করে গেছে, অথবা পানির নালা যা সে (সেচ ইত্যাদির উদ্দেশ্যে) প্রবাহিত করে গেছে, অথবা সাদকাহ, যা সে নিজের মাল থেকে তার সুস্থ ও জীবিতাবস্থায় বের (দান) করে গেছে। এসব কর্মের সওয়াব তার মৃত্যুর পরও তার সাথে এসে মিলিত হবে।” (ইবনে মাজাহ, বাইহাকি, ইবনে খুজাইমাহ ভিন্ন শব্দে, সহিহ তারগিব ১০৭ নং)

    (৩) হজ্জ উমরাহ করা। আব্দুল্লাহ বইন আমর বলেন, আস বিন ওয়াইল সাহমী তার তরফ হতে ১০০ ক্রীতদাস মুক্ত করার অসিয়ত করে মারা যায়। সুতরাং তার ছোট ছেলে হিসাম ৫০ টি দাস মুক্ত করে। অতঃপর তার বড় ছেলে আমর বাকি ৫০ টি দাস মুক্ত করার ইচ্ছা প্রকাশ করলে বললেন, ‘(বাপ তো কাফের অবস্থায় মারা গেছে) তাই আমি এ কাজ আল্লাহর রাসুল (সঃ) কে জিজ্ঞাসা না করে করব না।’ সুতরাং তিনি নবী (সঃ) এর নিকট এসে ঘটনা খুলে বলে জিজ্ঞাসা করলেন, “আমি কি বাকি ৫০ টি দাস তার তরফ থেকে মুক্ত করব?” উত্তরে আল্লাহর রাসুল (সঃ) বললেন, “ সে যদি মুসলিম হত এবং তোমরা তার তরফ থেকে দাস মুক্ত করতে, অথবা সাদকাহ করতে অথবা হাজ্জ করতে তাহলে তার সওয়াব তার নিকট পৌঁছত।” আবু দাউদ ২৮৮৩নং, বাইহাকি ৬/২৭৯, আহমাদ ৬৭০৪ নং)

    (৪) তাদের কোন অসিয়ত থাকলে তা পালন করুন।

    (৫) তাদের কোন বন্ধু থাকলে তার খাতির করুন।

    (৬) তাদের সম্পর্কের জোরে সকল আত্মীয়তার বন্ধন বজায় রাখুন।

    আর কোন বিদআতি কাজ করবেন না বা বিদআতি অসিয়াত পালন করবেন না। যেমন- চালসে চাহারাম, ফাতিহাখানি, কুলখানি, মৌলুদ পাঠ ইত্যাদি করবেন না। কোন ভোজবাজি বা দুয়ার অনুষ্ঠান করবেন না। জেনে রাখবেন, যা আপনি তাদের আত্মার কামনার উদেশ্যে আল্লাহর জন্য করবেন, তাই তাদের উপকারে আসবে। পক্ষান্তরে যা নিজের স্বার্থের জন্য করবেন, সুনাম নেওয়ার জন্য করবেন অথবা বদনাম থেকে বাঁচবার জন্য করবেন, তা কোন উপকার দেবে না। সবচেয়ে বেশি উপকারী হিসেবে আপনি প্রত্যেহ প্রত্যেক ফরয নামাজের শেষাংশে তাদের জন্য দুয়া করুন। তাহলে তাদের হক আদায় করতে পারবেন।


    Professor Answered on April 15, 2015.
    Add Comment
  • RELATED QUESTIONS

  • POPULAR QUESTIONS

  • LATEST QUESTIONS

  • Your Answer

    By posting your answer, you agree to the privacy policy and terms of service.