পিত্তথলিতে পাথর কেন হয়?
মেডিক্যাল পরিভাষায় এটাকে বলে কলি থিথিয়াসিস বা গলস্টোন। উত্তর-দক্ষিণ আমেরিকার মোট জনগোষ্ঠীর ১০ থেকে ২০ শতাংশই ভোগে পিত্তথলির পাথরে। আফ্রিকার জনগণের মধ্যে পিত্তথলির পাথরে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা বিরল। পিত্তথলির পাথরে বেশি ভোগে উত্তর আমেরিকার মানুষ। এশিয়ানদের মধ্যেও ইদানীং পিত্তথলির পাথরে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা চোখে পড়ছে। পিত্তথলির পাথরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা পুরুষের চেয়ে মহিলাদের দ্বিগুণ। সুন্দরী, মেদবহুল এবং সন্তান জন্মদানে সক্ষম মহিলারা পিত্তথলির পাথরে বেশি আক্রান্ত হন। তবে বাংলাদেশে এক হাজার ৫১৫ জন রোগীর মধ্যে এক জরিপে দেখা গেছে, সুন্দরী মহিলা ছিল সেখানে ৪৯৭ জন, বাদামি বর্ণের ছিল ৬০৫ জন এবং কালো বর্ণের ৪১৩ জন। গর্ভনিরোধক বড়ি, ডায়াবেটিস, লিভার সিরোসিস, আন্ত্রিক গোলমাল, ঘন ঘন গর্ভধারণ পিত্তপাথর গঠনের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। বেশির ভাগ পিত্তথলির পাথর গঠিত হয় কোলেস্টেরল এবং কিছু পিত্তরঞ্জন নিয়ে। পিত্তথলির পাথরের প্রধান উপাদান হলো কোলেস্টেরল। কোলেস্টেরল ছাড়াও অন্যান্য উপাদান যেমন_ ক্যালসিয়াম বিলিরুবিনেট, ফসফেট প্রভৃতি পিত্তরসে দ্রবীভূত থাকে। আমাদের শরীরের রাসায়নিক উপাদানগুলো যেমন_ ফসফোলিপিড ও পিত্তলবণ পিত্তথলির ভেতর কোলেস্টেরলকে দ্রবীভূত রাখে। যদি কোনো প্রকার কোলেস্টেরল এবং এসব রাসায়নিক উপাদানের সমতা পরিবর্তন হয় তাহলে কোলেস্টেরল কম দ্রবনীয় হয়ে আসে এবং স্তূপীকৃত হতে থাকে। এভাবে কোলেস্টেরল জমা হয়ে পিত্তপাথর তৈরি করে। রঞ্জক পদার্থের সৃষ্টি প্রণালী সম্পর্কে খুব বেশি জানা যায়নি। তবে পিত্ত প্রণালীতে সংক্রমণ হলে এ ধরনের পাথর সৃষ্টি হয়। কালো পাথরগুলো গঠিত হয় ক্যালসিয়াম বিলিরুবিনেট, মিউসিন গ্লাইকোপ্রোটিন, ক্যালসিয়াম ফসফেট প্রভৃতি নিয়ে ।