পীর মানা কি যায়েজ ?
(খোলা মন নিয়ে পড়ার অনুরোধ রইল):
কোন কিছু ফরজ করার মালিক একমাত্র আল্লাহ। পবিত্র
কোরআনে ইরশাদ হচ্ছে :- তিনি তোমাদের জন্য দ্বীন
বিধিবদ্ধ করে দিয়েছেন; যে বিষয়ে তিনি নূহকে নির্দেশ
দিয়েছিলেন, আর আমি তোমার কাছে ওহী পাঠিয়েছি এবং
ইব্রাহীম, মুসা ও ইসাকে যে নির্দেশ দিয়েছিলাম তা হলো,
তোমারা দ্বীন কায়েম করবে এবং এতে বিচ্ছিন্ন হবে না।
তুমি মুশরিকদের যে পথে আহবান করছো তা তাদের কাছে
কঠিন মনে হয়; আল্লাহ যাকে চান তার দিকে নিয়ে আসেন।
আর যে তার অভীমুখী হয় তাকে তিনি হেদায়েত দান
করেন। ( সুরা শুরা ৪২: ১৩ )
অন্য আয়াতে আল্লাহ তায়ালা
বলেন :- তোমাদের প্রত্যেকের জন্য আমি নির্ধারন
করে দিয়েছি শরীয়ত ও স্পস্ট পথ। (সুরা মায়েদা ৫:৪৮)
উপরোক্ত আয়াতগুলোতে পরিস্কার হয়ে গেলো যে,
শরিয়ত নির্ধারন করার দায়িত্ব স্বয়ং আল্লাহর। কোনো পীর
ফকিরদের নয়।পীর-সুফীগন হয়তো মনে করতে
পারেন, আল্লাহকে পাওয়ার জন্য আল্লাহ এবং তার রাসুল
(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) যে শরীয়াহ দান করেছেন তা
যথেষ্ট নয়। দ্বীন ইসলাম এ ব্যাপারে অসম্পুর্ন। আল্লাহ তায়ালা তাদের এই ভ্রান্ত ধারনা নাকচ করে দিয়ে পবিত্র
কুরআনে স্পষ্ট ভাবে ঘোষনা করে দিলেন : -” আজ আমি
তোমাদের জন্য তোমাদের দীনকে পূর্ন করলাম এবং
তোমাদের উপর আমার নেয়ামত সম্পুর্ন করলাম এবং
তোমাদের জন্য দ্বীন হিসেবে পছন্ড করলাম ইসলাম
কে।” ( সুরা মায়েদা ৫ : ৩)।
এ আয়াতে আল্লাহ তায়ালা দ্বীন
ইসলামকে পরিপূর্ন বলে আখ্যায়িত করেছেন। আর
কোনো কিছু পরিপূর্ন হয়ে গেলে তার ভিতর নতুন কিছু
সংযোজনন করার সুযোগ থাকে না। রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম) ইরশাদ করেন : – যখন কোনো জাতি তাদের
দ্বীনের মধ্যে বিদআত প্রবেশ করায় তখন আল্লাহ (সুব: )
তাদের দ্বীন থেকে ঐ পরিমান সুন্নত তুলে যে যা কিয়ামত
পর্যন্ত আর কখনো ফিরে আসে না।
( সুনানে দারমী ৯৮,
মিশকা্তুল মাসাবিহ ১৮৮, হাদিসটি সহীহ )
এ কারনেই ইমাম মালেক
(র: ) বলেছেন : যে ব্যক্তি ইসলামের ভিতরে কোনো
বিদআত প্রবেশ করালো আবার সেটিকে বেদআতে হাসানা
বলে আখ্যায়িত করলো, সে যেন দাবী করলো যে,
মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) রেসালাতের দায়িত্ব আদায়
করার ক্ষেত্রে খিয়ানত করেছেন।
( মুহাব্বাতুর রাসুল বাইনাল
ইত্তিবায়ী ওয়াল ইবতিদায়ী ১/২৮৪ )।
জেনে রাখুন, আল্লাহ তায়ালা যখন দ্বীনকে পরিপূর্ন বলে ঘোষনা করেছেন,
তখন যা কিছু দ্বীনের অংশ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত ছিলো না তা
এখনো দ্বীনের অন্তর্ভুক্ত বলে গন্য হবে না। সুতরাং
কোনো বিদআতি আমল ইসলামে তৈরী করা যাবে না।
প্রচলিত পীরদের ফরজ বলা নিজেরা শরিয়াহ তৈরী করার
শামিল। আর শরিয়াহ তৈরী করার অধীকার কারো নাই। আল্লাহ তায়ালা বলেন :- তাদের জন্য কি এমন কিছু শরিক আছে যারা
তাদের দ্বীনের বিধান দিয়েছে, যার অনুমতি আল্লাহ
দেননি?”
( সুরা শুরা ৪২ : ২১ )
এরকম মনগড়া শরিয়াহ তৈরী করা
মূলত : আল্লাহকে দ্বীন শিক্ষা দেওয়ার শামিল ( নাউযুবিল্লাহ) ।
পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন :-” বল, তোমরা কি
আল্লাহকে আসামনসমুহ ও জমিনে থাকা এমন বিষয়ে সংবাদ
দিচ্ছো যা তিনি অবগত নন? তিনি পবিত্র মহান এবং তারা যা শরীক
করে , তা থেকে অনেক উর্ধ্বে। ( সুরা ইউনুস ১০: ১৮ )
আল্লাহ আমাদের সঠিকভাবে তার দ্বীন বুঝার তাওফিক দিন। আমীন!