পুরুষ ও নারীর খাতনা করার বিধান কি?

পুরুষ ও নারীর খাতনা করার বিধান কি?

Add Comment
1 Answer(s)
    খাতনার বিষয়টি মতভেদপূর্ণ। নিকটবর্তী মত হচ্ছে, পুরুষের খাতনা করা ওয়াজিব আর নারীর জন্য সুন্নাত। এই পার্থক্যের কারণ হচ্ছে, পুরুষের খাতনার মাঝে একটি ইবাদত বিশুদ্ধ হওয়ার শর্ত বিদ্যমান। আর তা হচ্ছে নামাযের পবিত্রতা। যদি খাতনা না করা হয়, তবে পেশাব বের হলে তার কিছু অংশ লিঙ্গের ঢাকনা চামড়ার ভিতরে জমা হয়ে থাকে, যা জ্বলনের কারণ হয় বা সেখানে ক্ষত (infection) হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এবং সর্বনিম্ন অসুবিধা হচ্ছে, যখনই সে নড়াচড়া করবে, তখনই পেশাবের বিন্দু বের হবে এবং তার শরীর ও কাপড় নাপাক করে দিবে।

    আর নারীর খাতনা করার সর্বোচ্চ উদ্দেশ্য ও উপকারিতা হচ্ছে, তার যৌন উত্তেজনা হ্রাস করা। আর এটা হচ্ছে তার একটি পূর্ণতা। এখানে খারাপ অতিরিক্ত কোন বিষয়কে বিদূরীত করা হচ্ছে না। যেমন পুরুষের বেলায় হয়ে থাকে।

    বিদ্বানগণ খাতনার ক্ষেত্রে শর্ত করেছেন, খাতনা করলে যদি অসুস্থতা বা প্রাণনাশের আশংকা থাকে, তবে সে অবস্থায় খাতনা করা ওয়াজিব নয়। কেননা ওয়াজিব বিষয় সমূহ অপারগতা, ধ্বংসের আশংকা ও ক্ষতির কারণে রহিত হয়ে যায়।

    পুরুষের খাতনা ওয়াজিব হওয়ার দলীলঃ

    প্রথমতঃ এ মর্মে কয়েকটি হাদীছ বর্ণিত হয়েছে যে, ইসলাম গ্রহণ করলে নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) খাতনা করার আদেশ করেছেন। আর নবীজীর নির্দেশ মানেই তা পালন করা ওয়াজিব।

    দ্বিতয়তঃ খাতনা হচ্ছে মুসলিম ও খৃষ্টান বা হিন্দুদের মাঝে পার্থক্যের অন্যতম একটি বৈশিষ্ট। এমনকি মুসলমানগণ যুদ্ধ ক্ষেত্রে খাতনার মাধ্যমে নিজেদের নিহত ব্যক্তিদের খুঁজতেন। আর যা বৈশিষ্ট হিসেবে গণ্য তা হচ্ছে ওয়াজিব। কেননা মুসলমান ও কাফেরের মাঝে পার্থক্য থাকা ওয়াজিব। এই কারণেই নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কাফেরদের সাথে সাদৃশাবলম্বন নিষিদ্ধ করেছেন। তিনি বলেনঃ

    ] مَنْ تَشَبَّهَ بِقَوْمٍ فَهُوَ مِنْهُمْ [

    “যে ব্যক্তি কোন জাতির সদৃশ অবলম্বন করবে সে তাদেরই অন্তর্ভুক্ত হবে।”

    তৃতীয়তঃ খাতনা হচ্ছে শরীর থেকে একটি জিনিস কর্তন করা। বিনা কারণে শরীরের কোন অংশ কর্তন করা হারাম। আর ওয়াজিব কারণ ছাড়া হারামকে হালাল করা বৈধ নয়। অতএব খাতনা করা ওয়াজিব।

    চতুর্থতঃ খাতনা করলে অভিভাবকের পক্ষ থেকে ইয়াতীমের উপর ও তার সম্পদের উপর হস্তক্ষেপ করা হয়। কেননা এতে খাতনাকারীকে পারিশ্রমিক দেয়া আবশ্যক। বিষয়টি ওয়াজিব না হলে তার শরীরে ও সম্পদে হস্তক্ষেপ করা জায়েয হত না।

    হাদীছের বাণী ও উল্লেখিত যুক্তি দ্বারা আমরা প্রমাণ করলাম যে, পুরুষের খাতনা করা  ওয়াজিব।

    কিন্তু নারীর খাতনা ওয়াজিব বলার ক্ষেত্রে প্রশ্ন রয়েছে। যেমনটি ইতোপূর্বে উল্লেখ করা হয়েছে। অতএব সঠিক মত হচ্ছে, পুরুষের খাতনা করা ওয়াজিব, নারীর নয়। একটি যঈফ হাদীছ রয়েছে। বলা হয়েছে,

    ]الْخِتَانُ سُنَّةٌ لِلرِّجَالِ مَكْرُمَةٌ لِلنِّسَاءِ[

    “খাতনা পুরুষের জন্য সুন্নাত ও নারীর জন্য সম্মান।” হাদীছটি বিশুদ্ধ হলে সকল মতভেদের সমাধান হয়ে যেত।

    বিষয়/প্রশ্নঃ                (১৩৫)
    গ্রন্থের নামঃ              ফাতাওয়া আরকানুল ইসলাম
    বিভাগের নামঃ          ঈমান
    লেখকের নামঃ          শাইখ মুহাম্মাদ বিন সালিহ আল-উসাইমীন (রহঃ)
    অনুবাদ করেছেনঃ     আবদুল্লাহ শাহেদ আল মাদানি – আবদুল্লাহ আল কাফী


    Professor Answered on April 11, 2015.
    Add Comment
  • RELATED QUESTIONS

  • POPULAR QUESTIONS

  • LATEST QUESTIONS

  • Your Answer

    By posting your answer, you agree to the privacy policy and terms of service.