ফযরের ওয়াক্তে ঘুমিয়ে গেলে করনীয় কি?

ফযরের ওয়াক্তে ঘুমিয়ে গেলে করনীয় কি?

Add Comment
1 Answer(s)

    রথমত সালাত দুই ভাবে ছুটে যায় – ১.অনিচ্ছাকৃত ছুটে যাওয়া (অজ্ঞ্যান হয়ে জাওা,ঘুমিয়ে থাকা ইত্যাদি কারণে) , ২.কোন ‘উযর (অজুহাত) ছাড়া সালাত ত্যাগ করা

    **এখন কেও যদি প্রথম অবস্থার শিকার হয় তবে তার উচিত হবে ঘুম ভাঙা বা তার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরার পর ছুটে যাওয়া সালাতের কথা স্মরণ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তা আদায় করে নেওয়া। এর দলিল –

    রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বাণী :

    من نسي صلاة أو نام عنها فكفارتها أن يصليها إذا ذكرها رواه البخاري (572 ) ومسلم ( 684 ) – واللفظ له – .

    “যে সালাত আদায় করতে ভুলে যায় বা সে সময় ঘুমিয়ে থাকায় তা ছুটে যায়, তার কাফফারাহ হলো সে যখনই তা মনে করবে তখনই (সাথে সাথে) সালাত আদায় করে নিবে।” [বুখারী (৫৭২) ও মুসলিম (৬৮৪)। (শব্দ চয়ন) সহীহ মুসলিমের]

    এবং সে তা ধারাবাহিকভাবে আদায় করবে যেমনটি তার উপর ফরয হয়েছে, প্রথমটি প্রথমে করবে। এর দলীল জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ এর হাদীস –

    أن عمر بن الخطاب رضي الله عنه جاء يوم الخندق بعد ما غربت الشمس فجعل يسب كفار قريش قال : يا رسول الله ما كدت أصلي العصر حتى كادت الشمس تغرب ، قال النبي صلى الله عليه وسلم : والله ما صليتها ، فقمنا إلى بطحان فتوضأ للصلاة وتوضأنا لها فصلَّى العصر بعد ما غربت الشمس , ثم صلى بعدها المغرب . رواه البخاري ( 571 ) ومسلم ( 631 )

    “উমার ইবনুল খাত্তাব-রাদিয়াল্লাহু-‘আনহু-খানদাকের যুদ্ধের দিন সূর্যাস্তের পর এসে ক্বুরাইশ কাফিরদের গালি দিতে লাগলেন, তিনি বললেন : “হে রাসূলুল্লাহ, আমি ‘আসরের সালাত আদায় করতে যেতে যেতে সূর্য ডুবে যেতে লাগল !” নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া-সাল্লাম বললেন : “আল্লাহর শপথ, আমিও এর (‘আসরের) সালাত আদায় করি নি।” এরপর আমরা বাত্বহান-এ দাঁড়ালাম, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া-সাল্লাম সালাতের জন্য ওযু করলেন, আমরাও সালাতের জন্য ওযু করলাম। এরপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া-সাল্লাম সূর্য অস্ত যাওয়ার পর ‘আসরের সালাত আদায় করলেন, এরপর মাগরিব এর সালাত আদায় করলেন।” [বুখারী (৫৭১) ও মুসলিম (৬৩১)]

    **আর কেও যদি দ্বিতীয় অবস্থার শিকার হয় অর্থাৎ ইচ্ছাকৃতভাবে কোন ‘উযর (অজুহাত) ছাড়া সালাত ত্যাগ করে, তবে তা কেবল দুই ক্ষেত্রেই হতে পারে:

    এক:
    সে যদি সালাতকে অস্বীকার করে, এর ফরয হওয়াকে মেনে না নেয়, তবে সে লোকের কুফরের ব্যাপারে কোনো দ্বিমত নেই। কারণ সে ইসলামের ভিতরে নেই। তাকে (আগে) ইসলামে প্রবেশ করতে হবে, এরপর এর আরকান ও ওয়াজিবসমূহ পালন করতে হবে। আর কাফির থাকা অবস্থায় যে সালাত ত্যাগ করেছে তার কাযা করা তার উপর ওয়াজিব নয়।

    দুই:
    সে যদি অবহেলা বা অলসতাবশত সালাত ত্যাগ করে, তবে তার কাযা শুদ্ধ হবে না। কারণ সে যখন তা ত্যাগ করেছিল, তখন তার কোন গ্রহণযোগ্য ‘উযর (অজুহাত) ছিল না। আর আল্লাহ সালাতকে সুনির্ধারিত, সুনির্দিষ্ট এক সময়ে ফরয করেছেন। আল্লাহ্ সুবহানুহূ ওয়া তা‘আলা বলেছেন :
    ﴿إِنَّ ٱلصَّلَوٰةَ كَانَتۡ عَلَى ٱلۡمُؤۡمِنِينَ كِتَٰبٗا مَّوۡقُوتٗا ١٠٣ ﴾ [النساء: ١٠٣]
    “নিশ্চয়ই নির্ধারিত সময়ে সালাত আদায় করা মু’মিনদের জন্য অবশ্য কর্তব্য।” [আন-নিসা: ১০৩]
    অর্থাৎ এর সুনির্দিষ্ট সময় আছে। এর দলীল হলো রাসূলের সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বাণী:
    «مَنْ عَمِلَ عَمَلا لَيْسَ عَلَيْهِ أَمْرُنَا فَهُوَ رَدٌّ» رواه البخاري (2697) ومسلم (1718)
    “যে এমন কোন কাজ করে যা আমাদের (শারী‘আত এর) অন্তর্ভুক্ত নয়, তবে তা প্রত্যাখ্যাত।” [এটি বর্ণনা করেছেন আল-বুখারী (২৬৯৭) ও মুসলিম (১৭১৮)]

    *শাইখ ‘আব্দুল ‘আযীয ইবনু বায-রাহিমাহুল্লাহ-কে প্রশ্ন করা হয়েছিল :

    আমি ২৪ বছর বয়সের আগে সালাত আদায় করি নি। এখন আমি প্রতি ফরয সালাত এর সাথে আরেকবার ফরয সালাত আদায় করি। আমার জন্য কি তা করা জায়েয (বৈধ)? আমি কি এভাবেই চালিয়ে যাব নাকি আমার উপর অন্য কোন করণীয় আছে?
    তিনি বলেন :
    “যে ইচ্ছাকৃতভাবে সালাত ত্যাগ করে, সঠিক মতানুসারে তার উপর কোনো কাযা নেই। বরং তাকে আল্লাহ তা‘আলার কাছে তাওবাহ করতে হবে; কারণ সালাত ইসলামের স্তম্ভ, তা ত্যাগ করা ভয়াবহ অপরাধসমূহের একটি। বরং ইচ্ছাকৃতভাবে তা (সালাত) ত্যাগ করা ‘বড় কুফর’(যে কুফর এর কারনে মানুষ ইসলাম থেকে খারিজ হয়ে জায়) যা ‘আলিমগণের দুটি মতের মধ্যে সবচেয়ে সঠিকটি, কারণ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে প্রমাণিত হয়েছে, তিনি বলেছেন :

    «العهد الذي بيننا وبينهم الصلاة فمن تركها فقد كفر »

    “আমাদের ও তাদের (কাফেরদের) মাঝে চুক্তি হলো সালাত; তাই যে তা ত্যাগ করে, সে কাফের হয়ে গেলো।” [ইমাম আহমাদ ও সুনানের সংকলকগণ সহীহ ইসনাদ সূত্রে বুরাইদাহ-রাদিয়াল্লাহু আনহু-হতে বর্ণনা করেছেন]
    আর রাসূল-সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বাণী :

    «بين الرجل وبين الشرك والكفر ترك الصلاة »

    “একজন ব্যক্তি এবং শিরক ও কুফরের মধ্যে পার্থক্য হলো সালাত ত্যাগ করা

    Professor Answered on June 17, 2015.
    Add Comment
  • RELATED QUESTIONS

  • POPULAR QUESTIONS

  • LATEST QUESTIONS

  • Your Answer

    By posting your answer, you agree to the privacy policy and terms of service.