ফরমালিনমুক্ত ফল বা সবজিকে চিনব কীভাবে?
ফরমালিনমুক্ত ফল বা সবজিকে চিনব কীভাবে?
কার্বাইড যুক্ত ফল সহজেই চেনা যায়। কেননা প্রাকৃতিকভাবে পাকা ফলের রঙ কিছুটা সবুজ কিছুটা হলুদ হয়ে থাকে । কিন্তু কার্বাইড মেশানো ফল আগাগোড়া সম্পূর্ণ হলুদ হয়ে যায় । বাজারে আম দেখে মনে হবে যে পেকে টসটস করছে, কিন্তু আসলে তা কার্বাইড যুক্ত।
ফরমালিনমুক্ত ফল চেনার উপায় :
– ফরমালিনযুক্ত ফলে তার প্রাকৃতিক সুবাস থাকে না। তার বদলে ঝাঁঝালো এক প্রকার গন্ধ থাকে। এক্ষেত্রে ফলের বোটার অংশটি নাকের কাছে ধরুন। যদি প্রাকৃতিক গন্ধ না পান বা ঝাঁঝালো গন্ধ নাকে লাগে তাহলে নিশ্চিত হোন তাতে ফরমালিন আছে।
– প্রাকৃতিকভাবে পাকানো ফল স্বাদে পুরোটাই মিষ্টি হবে। কিন্তু ওষুধে পাকানো বা সংরক্ষণ করা ফলের এক অংশ মিষ্টি, অন্য অংশ টক হবে।
– স্বাভাবিক ফল পেকে যাওয়ার পর ফ্রিজে রাখা না হলে স্বভাবতই পচে যাওয়া শুরু করবে। কিন্তু ফরমালিন যুক্ত ফল ফ্রিজে না রাখলেও পঁচবে না।
– লিচুর রঙ কাঁচা অবস্থায় হবে সবুজ, পেকে গেলে ইট রঙের। কিন্তু গাছে থাকা অবস্থায় রাসায়নিক দেয়ার কারণে তার রং হয়ে যায় ম্যাজেন্টা । এই ধরনের লিচু দেখতে ভালো দেখায়, কিন্তু খেতে নয়। আর স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক তো বটেই। তাই ম্যাজেন্টা রং এর লিচু কিনবেন না একদম।
– ওষুধ দেয়া লিচুতে স্বাভাবিক স্বাদ বা গন্ধ থাকে না। কেমন যেন বিশ্রী ঝাঁজালো ভাব থাকে, আর রসালো হয় না।
– চেহারা দেখে ফল কিনবেন না, বিশেষ করে আম। অনেকেই দাগহীন মোলায়েম চেহারা দেখলেই আম কিনে ফেলেন। আমের চেহারা শতভাগ দাগহীন হওয়ার অর্থ যে একে কাঁচা অবস্থায় পাড়া হয়েছে এবং ওষুধ দিয়ে পাকানো হয়েছে।
– ফরমালিন যুক্ত ফলে মাছি, মৌমাছি ইত্যাদি পতঙ্গ বসে না। মাছি বা পতঙ্গের উপস্থিতির অর্থ ফলটি রাসায়নিক বিহীন।
সবজির ক্ষেত্রেও তাই। ফরমালিনযুক্ত সবজির নিজস্ব গন্ধ এবং রুপ কোনোটাই থাকবে না। এগুলো বেশ সতেজ দেখাবে। ভালো করে খেয়াল করলেই বুঝতে পারবেন।
ফরমালিনের ক্ষতিকারক দিক :
তাৎক্ষণিকভাবে ফরমালিন, হাইড্রোজেন পার অক্সাইড, কার্বাইড বিভিন্ন ধরনের ক্ষতিকর কেমিক্যাল ব্যবহারের কারণে পেটের পীড়া, হাঁচি, কাশি, শ্বাসকষ্ট, বদহজম, ডায়রিয়া, আলসার, চর্মরোগসহ বিভিন্ন রোগ হয়ে থাকে। ধীরে ধীরে এসব রাসায়নিক পদার্থ লিভার, কিডনি, হার্ট, ব্রেন—সবকিছু ধ্বংস করে দেয়। লিভার ও কিডনি অকেজো হয়ে যায়। হার্টকে দুর্বল করে দেয়। স্মৃতিশক্তি কমে যায়। শেষ পর্যন্ত রাসায়নিক যুক্ত খাদ্য গ্রহণ করার ফলে পাকস্থলী, ফুসফুস ও শ্বাসনালিতে ক্যানসার হতে পারে। অস্থিমজ্জা আক্রান্ত হওয়ার ফলে রক্তশূন্যতাসহ অন্যান্য রক্তের রোগ, এমনকি ব্লাড ক্যানসারও হতে পারে।