ব্রন থেকে চিরতরে মুক্তি পাওয়ার উপায় কি?

ব্রন থেকে চিরতরে মুক্তি পাওয়ার উপায় কি?
Add Comment
1 Answer(s)

    খাদ্য হিসেবে ও চিকিত্‍সার কাজে গাছের বিভিন্ন অংশ এবং ভেষজের ব্যবহার মানুষ করে আসছে সেই সুপ্রাচীনকাল থেকেই। প্রাচীন চিকিত্‍সাশাস্ত্র আয়ুর্বেদ পুরোটাই গাছ-গাছড়া নির্ভর। প্রাচীন চীনের চিকিত্‍সাশাস্ত্রেও ছিল ভেষজের ব্যবহার। মধ্যপ্রাচ্যে বিশেষ করে যাযাবর শ্রেণীর লোকেরা টোটকা চিকিত্‍সাতে নানা ধরনের শেকড়-বাকড় ব্যবহার করত। শুধু কি খাবার আর চিকিত্‍সা! রূপচর্চার ক্ষেত্রেও রয়েছে ভেষজ উপাদানের অবদান। নিজেকে সুন্দর ও আকর্ষণীয় করে তুলতে সুদূর অতীত থেকে আজ পর্যন্ত ভেষজ উপাদানের ব্যবহার সমানভাবে চলে আসছে। পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া একেবারে নেই বললেই চলে বলে রূপচর্চার ক্ষেত্রে আয়ুর্বেদ বা ভেষজের ব্যবহারে মানুষ দিন দিন আগ্রহী হয়ে উঠছে।

    ত্বকের মরা কোষ, ময়লা,দূষণ এবং শারীরিক নানা সমস্যার কারণে আমাদের ত্বক বিভিন্নভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ধুলা ময়লা ত্বকে জমে রোমকূপ বন্ধ করে ফেলে। ফলে সৃষ্টি হয় ব্রণের। বিশেষ করে ত্বকে তেলের পরিমাণ বেশি থাকলে তা সহজেই ময়লা আকর্ষণ করে। তাই তৈলাক্ত ত্বকে ব্রণের সংক্রমণ বেশি হয়। অনেকেই নোংরা হাতে ব্রণ খুঁটে থাকেন। এটা একেবারেই উচিত নয়, এতে ত্বকে দীর্ঘস্থায়ী ক্ষত সৃষ্টি হয় এবং দাগ পড়ে যায়। ত্বকের সামান্য যত্ন নিলেই ব্রণের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব। রইল ব্রণের হাত থেকে নিস্তার পাবার কিছু ভেষজ উপায় –

    ১) ব্রণ হবার একটি অন্যতম কারণ হলো অপরিষ্কার ত্বক। তাই ত্বক রাখতে হবে পরিষ্কার। নিয়মিত স্ক্রাবিং ত্বককে পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে। ব্রণ শুধু মুখে নয়, শরীরের অন্যান্য অংশেও হতে পারে। তাই স্ক্রাবিং পুরো দেহের জন্যই প্রযোজ্য। পাকা পেঁপে চটকে নিন এক কাপ। এর সাথে মেশা এক টেবিল চামচ পাতিলেবুর রস এবং প্রয়োজন অনুযায়ী চালের গুঁড়ো। মিশ্রণটি মুখসহ পুরো শরীরে লাগান। ২০-২৫ মিনিট মাসাজ করে গোসল করে ফেলুন। পেঁপে ছাড়াও ব্যবহার করতে পারেন ঘৃতকুমারীর রস।

    ২)পুদিনা পাতা ত্বকের অতিরিক্ত তেল এবং ব্রণের সংক্রমণ কমাতে খুবই উপকারী। টাটকা পুদিনা পাতা বেটে ত্বকে লাগান। ১০-১৫ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। এতে ত্বকের অতিরিক্ত তেল দূর হয়ে যাবে। অতিরিক্ত গরমের কারণে ত্বকে যেসব ফুসকুড়ি এবং ব্রণ হয় সেগুলো দূর করতেও পুদিনা পাতা উপকারী। টাটকা পুদিনা পাতা বেটে ব্রণের ওপর লাগিয়ে রাখুন ২০ মিনিট এরপর ধুয়ে ফেলুন।

    ৩)পুদিনা পাতার রস করে নিয়ে সেটা দিয়ে আইস কিউব তৈরি করুন। ফুসকুড়ি ও ব্রণের এই আইস কিউব ঘষুন ১০-১৫ মিনিট। এতে ফুসকুড়ি ও ব্রণের সংক্রমণ তো কমবেই সাথে ত্বকের জ্বালাপোড়াও দূর করবে।

    ৪) লবঙ্গ মূলত মসলা হিসেবে পরিচিত হলেও ব্রণ সারাতে তা খুবই কার্যকর। লবঙ্গের তেল দিয়ে ত্বক মাসাজ করা খুবই উপকারী। ত্বকে ব্রণের সংক্রমণ বেড়ে গেলে লবঙ্গ গুঁড়ো করে তাতে গোলাপজল মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। ব্রণের জায়গাগুলোতে মিশ্রণের মোটা প্রলেপ দিন। ২০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন।

    ৫) টক স্বাদের কদবেল খেতে অনেকেই ভালবাসেন। কাঁচা কদবেলের রস ব্রণের জন্য খুবই উপকারী। কাঁচা কদবেলের রস তুলাতে ভিজিয়ে ব্রণ আক্রান্ত জায়গাগুলোতে লাগান। ১০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন।

    ৬) নিমপাতা খুব ভালো জীবাণুনাশক। তাই ব্রণ সারাতে নিমপাতা খুবই উপকারী। নিমপাতা বেটে সাথে চন্দনের গুঁড়া মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। এই পেস্ট ত্বকে লাগিয়ে ১৫-২০ পর ধুয়ে ফেলুন।

    ৭) যাঁদের ব্রণের পরিমাণ অত্যধিক বেশি তাঁরা পাতিলেবুর রস দিনে দুই তিনবার ব্রণে আক্রান্ত জায়গাগুলোতে লাগান। তবে একটানা ১০ মিনিটের বেশি রাখবেন না। ১০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন।

    ৮)ধনিয়াপাতাও ব্রণ সারাতে কার্যকর। ধনিয়াপাতা বেটে তাতে কয়েক চিমটি হলুদ গুঁড়া মেশান। মিশ্রণটি ত্বকে লাগিয়ে ২০-২৫ পর ধুয়ে ফেলুন।

    ৯) ১ লিটার পানিতে ২৫০ গ্রাম টাটকা নিমপাতা জ্বাল দিন। পানির পরিমাণ অর্ধেক না হওয়া পর্যন্ত জ্বাল দিতে থাকুন। এই পানি ছেঁকে ঠান্ডা করে ফ্রিজে সংরক্ষণ করুন। প্রতিদিন সকালে খালি পেটে এই পানি পান করলে ব্রণ হবার সম্ভাবনা অনেকাংশে কমে যাবে।

    ১০)গোলাপজলের নিয়মিত ব্যবহারে ব্রণের দাগ কমে যায়। দারুচিনি গুঁড়ার সাথে গোলাপজল মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। এই পেস্ট ব্রণের ওপর লাগিয়ে ২০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। এতে ব্রণের সংক্রমণ, চুলকানি এবং ব্যথা অনেকটাই কমে যাবে।

    এছাড়া :
    ব্রণ সমস্যা চিরতরে দূর করবে যে ৬টি খাবার : ব্রণের সমস্যায় ভোগেননি বা ভুগছেন না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। ছেলে মেয়ে উভয়েই ব্রণের সমস্যায় পড়তে পারেন যে কোনো কারণে। ব্রন যে কোনো ধরণের ত্বকেই হতে পারে। এই ব্রণের সমস্যা দূর করার জন্য কত কিছুই না করেন সবাই। কিন্তু কতোটুকু কার্যকর হয় এত কিছু করা? কত ধরণের ক্রিম বা চিকিৎসা নেয়া হয়, কত রূপচর্চা আর পার্লারে দৌড়া দৌড়িও হয়। কিন্তু আসলেই কি এই নাছোড়বান্দা ব্রণের পিছু ছাড়ানো যায়?

    আচ্ছা, যদি ব্রণের সমস্যাকে নির্মূল করা যায় দেহের ভেতর থেকে, তাহলে কেমন হয়? খুব সহজেই দূর হবে ব্রণের উপদ্রব কিছু খাবারের মাধ্যমে। হ্যাঁ, প্রকৃতি তার অনেক কিছুর মাঝেই অনেক সমস্যার সমাধান রেখে দিয়েছে। দরকার শুধু এগুলোকে খুঁজে বের করা ও কাজে লাগানো।

    ব্রণ দূর করতে চারটি দারুণ কার্যকরী ফেসপ্যাক : সত্যি বলতে কি, ব্রণের চিকিৎসায় কেনা কসমেটিক উপাদান ব্যবহার না করাই ভালো। যতটা সম্ভব রাসায়নিক উপাদান এড়িয়ে গিয়ে প্রাকৃতিক উপাদানের নিয়মিত ব্যবহারেই ব্রণহীন সুন্দর ত্বক পাওয়া সম্ভব। ভালো খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলুন, পর্যাপ্ত ঘুমান, দুশ্চিন্তা মুক্ত থাকুন এবং ত্বক অবশ্যই খুব পরিষ্কার রাখুন। দিনে দুবার ফেসওয়াশ ব্যবহার করে মুখ ধোবেন। এছাড়াও শুধু পানি দিয়ে ৩ থেকে ৪ বার মুখ অবশ্যই ধুয়ে নেবেন। এর পাশাপাশি, ব্রণ নিরাময় করতে ব্যবহার করতে পারেন কিছু কার্যকরী ফেসপ্যাক।

    ব্রণ নিরসনের ঘরোয়া উপায় : আমাদের ত্বকের তৈল গ্রন্থি ব্যাটেরিয়া দ্বারা আক্রান্ত হলে এর আকৃতি বৃদ্ধি পায় তখন এর ভিতরে পুঁজ জমা হতে থাকে, যা ধীরে ধীরে বর্ন পরিবর্তন করে ব্রণের আকার ধারণ করে। এটা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বংশগত। ব্রণকে অনেকেই পিম্পল , যিট বা স্পট বলে থাকে।

    Professor Answered on June 25, 2015.
    Add Comment
  • RELATED QUESTIONS

  • POPULAR QUESTIONS

  • LATEST QUESTIONS

  • Your Answer

    By posting your answer, you agree to the privacy policy and terms of service.