ভিওআইপি কিভাবে কাজ করে?
ভিওআইপি কিভাবে কাজ করে?
ভিওআইপি কিভাবে কাজ করে ভিওআইপি কিভাবে কাজ করে বুঝতে হলে কিছু জিনিস আগেই জানা থাকলে ভালো হয়। তবে খুশির ব্যাপার হল, এই জেনারেশনের সবাই একটা জিনিস বাদে বাকি সব বিষয়গুলোর সাথে পরিচিত। সবার নিশ্চয়ই ইন্টারনেটে চ্যট করার অভিজ্ঞতা আছে। যদের আছে, তারা অনেকেই এটাও জানে চ্যট মানে শুধু লিখে লিখে কথা বলাই না, চাইলে কথাও বলা যায়, যাকে ভয়েস চ্যট বলে। টেলিফোনে ডেডিকেটেড সার্কিট ব্যবহার হয়। ডেডিকেটেড সার্কিট হল, ধরা যায় যখন আমরা কোন কল করি তখন একটা একটা ফিজিক্যাল লাইন তৈরি করা হয় কল যে করে আর যে রিসিভ করে দুই জনের মধ্যে। অনেকটা কারেন্টের তার টানার মতন ব্যাপার। কথা/ভয়েস এই তার দিয়া যায়। আর যায়ও আলোর গতিতে, যকে বলে রিয়েল-টাইম। কিন্তু, ইন্টারনেটে কোন ডেডিকেটেড লাইন ইউজ হয় না কোন টুকরা কখন পৌঁছাবে কোন টাইম লিমিট নাই, একেক টুকরা একেক রাস্তা দিয়া যেতে পারে, তা-ও কোন সমস্যা না। শেষ টুকরা পৌঁছানোর পর সব জোড়া দিয়ে রিসিভার কে দেয়া হয়। এই করনে মেসেঞ্জার বা ভয়েস চ্যাটে কথা অনেক পরে শোনা যায়। এখন, এই টুকরা গুলাকে বলে প্যাকেট। প্যাকেট সাইজ বড় হলে বেশি সময় লাগবে আর ছোট হলে কম সময় লাগবে। কিন্তু, যদি ব্যান্ডউইথ বেশি হয়, তার মানে রাস্তা চওড়া, বড় প্যাকেট তাড়াতাড়ি যেতে পারবে। আগে কম্পিউটারে ইন্টারনেট কানেকশন নিতে একটা বিশেষ যন্ত্র ব্যাবহার করা হত যেটার সাথে এই জেনারেশনের অনেকেই পরিচিত না। তার নাম মডেম। অনেকেই ভাবছে, পাগলে কি বলে, গ্রামীণ, বাংলালিংক, কিউবি, বাংলা-লায়ন কত্তো মডেম ইয়ুজ করলেম, এখন আসছে মডেম শিখাইতে!!! আসলে এই যন্ত্রগুলোকে মডেম বলার চেয়ে ডংগল বলাই বেশি যুক্তিযুক্ত। কারণ যেই মডেমের কথা বলছি, তার কাজ একটু ভিন্ন ছিল। তখন টিএন্ডটি ছাড়া আর কোন ফোন ছিল না। ল্যান মানুষ নতুন নতুন চেনা শিখেছে। একটা যন্ত্র ছিল, যার নাম মডেম, সেটা কম্পিউটারে কানেক্ট করা লাগত, আর এতে একটা পোর্ট ছিল, ফোন কানেকশন দেবার জন্য। ফোন কানেকশন লাগিয়ে, কম্পিউটারে স্পেশাল সফটওয়্যার দিয়ে ইন্টারনেট কোম্পানিতে ডায়াল করতে হত। বেশিরভাগ মডেমে, ডায়াল করার সময় অদ্ভুত, অদ্ভুত শব্দ করত, কানেকশন পেলে শব্দ শুনেই বোঝা যেত। আহা… দিনগুলি মোর সোনার খাঁচায়… দিবাস্বপ্ন হায় এই মডেম আসলে ফোন কলের ভয়েস সিগনালকে কম্পিউটারের সিগনাল-এ, আর কম্পিউটারের সিগনালকে ভয়েসে কনভার্ট করে দিত। মানে, কম্পিউটারের ডাটা ফোন লাইন দিয়ে পাঠানোর একটা যন্ত্র ছিল এটা। মজা হল, এটাও একটা ফোন, শুধু এক্সট্রা কিছু যন্ত্র ছিল যা কম্পিউটারের সিগনাল কনভার্ট করতে পারে। তো, এই প্রশ্ন মনে আসতেই পারে, যদি মডেম, একটা ফোন হয়, তবে এটা দিয়ে ফোন করা যায় কি না। উত্তর হল, হ্যাঁ যায়। আগের মডেমগুলোতে হেড-ফোন আর মাউথ-পিস লাগানোর পোর্ট ছিল, আর কম্পিউটারে সফটওয়্যার ইন্সটল করতে হত। ঐ সফটওয়্যার দিয়ে ফোনে ডায়াল করা যেত আর হেড-ফোন-মাউথ ইউজ করে কথা বলা যেত। এখান থেকেই প্রথমে ভিওআইপির ধারনা আসে। এখন কেউ যদি তার দিয়ে কম্পিউটারের হেড-ফোনের কানেকশন মডেমের মাউথ-পিসের সাথে আর কম্পিউটারের মাউথ-পিসের কানেকশন মডেমের হেড-ফোনের সাথে জোড়া দিয়ে দেয় তখন কি হবে?? সে গান ছেড়ে দিল চুম্মা চুম্মা দে দে… আর সাউন্ড রেকর্ডার তারপর কোন একটা নাম্বারে ডায়াল করল, ধরি জাকির নায়েকের। তবে, মি: জোকার নায়েক ফোন রিসিভ করা মাত্রই শুনতে পাবে ওপারে “চুম্মা চুম্মা দে দে…” বাজছে। আর এতে যদি সে ক্ষেপে গিয়ে গালাগাল করে তবে, সেটা রেকর্ডারে রেকর্ড হয়ে যাবে। এই রেকর্ড ইউটিউবে ছেড়ে দিলে ম্যাক্সিমাম ভিউ-এর রেকর্ড হয়ে যাবে। শয়তান শয়তান এখন আর একটু কমপ্লিকেটেড ব্যবস্থায় আসি। ধরি, অধম সাহেবের কম্পিউটারে এই সিস্টেম সেট করা। তাকে স্বপ্নবাজ খোকন ভাই ভয়েস চ্যাট রিকোয়েস্ট পাঠাল। অধম ভাই, সেই রিকোয়েস্ট পেয়ে সাথে সাথে ফারাবীরে ফোন দিল। আর ভয়েস চ্যাট রিকোয়েস্ট একসেপ্ট করে দিল। এরপর স্বপ্নবাজ ভাই আসলে কার সাথে কি করবে সেটা বিবেচ্য নয়। দেখুম না আমার কুনো দোষ নাই এবার আসি আরেকটু কমপ্লিকেটেড ব্যবস্থায়। ধরি, স্বপ্নবাজ ভাই ঐ ঘটনার পর অধমের কাছ থেকে পুরা সিস্টেমটা শিখে নিলো। এরপর, অধমের সাথে চ্যাটে ফারাবীকে ফোন দিতে বললেন। আর নিজে ফোন দিলেন একজন বাঙ্গাল-কে। লাভে মধ্যে লাভ, ফারাবী ফোন কলে বাঙ্গাল ভাইকে পেয়ে তাকে একটা ল্যাপটপ কেনা বাবদ ৪২১.৫০ (৪২০ তার ইসটাইল না) পাউন্ড পাঠাতে বলল। বাঙ্গাল ভাই এর কি করল সেটাও এখানে বিবেচ্য না, বিবেচ্য হল, কি ঘটল। খিকজ্ খিকজ্ খিকজ্ বাঙ্গাল ভাই, সরাসরি ফারাবীর সাথে ফোনে কথা বলতে পারল। আর এতে খরচ??? ধরি, তারা ১০ মিনিট বাত-চিৎ করলেন। এতে ইন্টারনেটের খরচ নাই বললেই চলে। বাংলা-লায়ন ৬০০ টাকায় প্রায় এক মাস চলে যায়। ১০ মিনিট অধম-ফারাবী লোকাল কল, ধরি ৫ টাকা, ১০ মিনিট, স্বপ্নবাজ-বাঙ্গাল কল, তারাই ভালো বলতে পারবে। কিন্তু এই সামান্য খরচে মজাটা পাওয়া গেল আন-লিমিটেড। টোটাল খরচ যা-ই হোক, ওভার-সিজ কলের খরচ থেকে অনেক অনেক কম। আর এভাবেই ভিওআইপি কাজ করে।