মধু কি চুলের স্বাস্থ্যের জন্য ভালো?
মধু হচ্ছে একটি তরল আঠালো মিষ্টি জাতীয় পদার্থ, যা মৌমাছিরা ফুল থেকে নেকটার বা পুষ্পরস হিসেবে সংগ্রহ করে মৌচাকে জমা রাখে। পরবর্তীতে জমাকৃত পুষ্পরস প্রাকৃতিক নিয়মেই মৌমাছি বিশেষ প্রক্রিয়ায় পূর্ণাঙ্গ মধুতে রূপান্তর এবং কোষ বদ্ধ অবস্থায় মৌচাকে সংরক্ষণ করে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং খাদ্য ও কৃষি সংস্থার মতে মধু হচ্ছে এমন একটি অগাজানোশীল মিষ্টি জাতীয় পদার্থ যা মৌমাছিরা ফুলের নেকটার অথবা জীবন্ত গাছপালার নির্গত রস থেকে সংগ্রহ করে মধুতে রূপান্তর করে এবং সুনির্দিষ্ট কিছু উপাদান যোগ করে মৌচাকে সংরক্ষণ করে।
মধুর উপাদান :
মধুতে প্রায় ৪৫টি খাদ্য উপাদান থাকে। ফুলের পরাগের মধুতে থাকে ২৫ থেকে ৩৭ শতাংশ গ্লুকোজ, ৩৪ থেকে ৪৩ শতাংশ ফ্রুক্টোজ, ০.৫ থেকে ৩.০ শতাংশ সুক্রোজ এবং ৫-১২ শতাংশ মন্টোজ। আরো থাকে ২২ শতাংশ অ্যামাইনো এসিড, ২৮ শতাংশ খনিজ লবণ এবং ১১ ভাগ এনকাইম। এতে চর্বি ও প্রোটিন নেই। ১০০ গ্রাম মধুতে থাকে ২৮৮ ক্যালরি।
চুলের স্বাস্থ্যে মধু :
চুলের স্বাস্থ্য রক্ষায় মধুর উপকারিতা বহুগুণ। মধু একটি প্রাকৃতিক উপাদান চুলের পুষ্টি যুগিয়ে চুলকে ঝলমলে করে তোলে। যেমন :
১. চুল প্রাকৃতিকভাবে হাইলাইটস করতেঃ
চুল প্রাকৃতিকভাবে হাইলাইটস বা কালার করতে চুল কতটা লম্বা সে অনুযায়ী মধু নিন এবং এতে টক দই দিন, যাতে মধুর আঠালো ভাবটা দূর হয়। এবার চুলের যে জায়গা হাইলাইট করতে চান, সেখানে মিশ্রণটি ভালোমতো লাগান এবং ২ ঘণ্টা রেখে চুল ধুয়ে ফেলুন। পর পর চার দিন লাগান।
২. চুল বৃদ্ধিতে সহায়তাঃ
২ চামচ মধু, ৩ চামচ অলিভ অয়েল এবং টক দই একসঙ্গে ভালোমতো মিশিয়ে চুলে লাগান। ৩০ মিনিট রেখে চুল শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন। চুলের রুক্ষ ভাব দূর করে ময়েশ্চার এবং হেয়ার ফলিকল উজ্জীবিত করে চুল বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
৩. চুলের ফ্রিজি ভাব দূর করতেঃ
চুলের ফ্রিজি ভাব দূর করতেও সিল্কি রাখতে শ্যাম্পু করার পর কন্ডিশনারের সঙ্গে এক চামচ মধু মিশিয়ে চুলের নিচের অংশে ভালোভাবে লাগিয়ে কিছুক্ষণ পর ধুয়ে ফেলুন। চাইলে কন্ডিশনারের বোতলে পরিমাণমতো মধু মিশিয়ে রেখে দিতে পারেন।
ব্যবহার পদ্ধতি :
উপরের ব্যবহারের পাশাপাশি সাধারণ একটি পদ্ধতিতে ব্যবহার করতে পারেন এই মধু। এর জন্য চুলে প্রথমে ভালোভাবে শ্যাম্পু করে একটি বাটিতে দুই টেবিল চামচ মধু সমপরিমাণ পানির সঙ্গে মিশিয়ে চুলে লাগাতে হবে। এটি চুলে ভালোভাবে মেশাতে হবে। তবে এটি যেনো তালুতে কোনোভাবেই না লাগে তা লক্ষ্য রাখতে হবে। তারপর এটি ১০-১৫ মিনিট রেখে ভালোভাবে পানি দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলতে হবে। মধু ব্যবহারে চুল অনেক বেশি মসৃণ ও উজ্জ্বল হয়। তবে এই ট্রিটমেন্টটি কোঁকড়া চুলের জন্য বেশি উপকারী, যা চুলে ঝলমলে ভাব এনে দেয়। ধন্যবাদ