মনের মানুষকে কিভাবে বই পড়তে উৎসাহিত করতে পারি?
মনের মানুষকে কিভাবে বই পড়তে উৎসাহিত করতে পারি?
বছর খানিক আগে একজন পরীর সাথে আমার সম্পর্ক ছিল। তার সাথে প্রতিদিন কথা হতো। কবিতা আবৃত্তি করে শুনাতাম। পরীটা আমার সাথে সারাক্ষণ কথা বলতে চাইতো। তখন ছিলাম আমি চরম নিয়মের মধ্যে আবদ্ধ। দিনে ৩০ মিনিটের বেশি কথা বলতাম না।
পরীর সাথে আমি শুধু বই নিয় কথা বলতাম। আমি যখন যে বইটা পড়তাম সে বইটা নিয়ে তার সাথে গল্প করতাম। পরী আমাকে বলতো, ‘আকাশ, তুমি যখন যে বইটা পড়বে, সে বইটা পড়ে শেষ করার পর আমাকে সে বইয়ের গল্প শুনাবে’।
আমি প্রতিটি বই পড়ে শেষ করার পর পরীকে সে বইয়ের গল্প শুনাতাম। তারপর সে আমার কাছ থেকে বই উপহার চাওয়া শুরু করলো। আমারও ইচ্ছা ছিল তাকে উপহার দেয়ার। তবে আমি জোর করে দিতে চাইছিলাম না। পরীর কাছ থেকে উপহারের কথা শোনার পরই আমি একের পর এক আমার প্রিয় বইগুলো পরীকে উপহার দেয়া শুরু করলাম।
তারপর ধীরে ধীরে সে বইপোকা হয়ে গেল। প্রথম প্রথম সাদাত হোসাইন পড়তো। তারপর আস্তে আস্তে সুনীল, তারাশঙ্কর, মানিক পড়া শুরু করল। এখন সে নিয়মিত বই পড়ে। বইয়ের পোকা আমি ডুকিয়ে দিয়েছিলাম সেই কবে এককোটি বছর আগে। এখনও পরী বই পড়ে। এককোটি বছর পরেও পড়বে।
পরী এখন অন্য কারো ডানা কাটা পরী। তবে আমার এসবে কষ্ট নেই। কষ্ট থাকার কোনো মানেই হয় না। বইপোকা বানাতে পারাটাই আমার সার্থকথা।
তবে আমার আসল পরীটারে হারিয়েছে সেই কবে এককোটি বছর আগে। মস্ত ঘন ব্যথার বুকেও একটা বেশ আনন্দ ঘুম পাড়ানো আছে আমার মনে। সে বিরহকে মধুর করে তুলে।