মাযহাব নিয়ে রাসূল (স:) কি কিছু বলে গেছেন?
মাযহাব নিয়ে রাসূল (স:) কি কিছু বলে গেছেন?
মুসলমানদের মধ্যে প্রচলিত চারটি মাযহাব ইসলামের কোনো নিয়ম বা বিধান মেনে
তৈরি করা হয়নি। কারন ইসলাম ধর্মে কোনো
দলবাজী বা ফিরকাবন্দী নেই। মুসলমানদের
বিভক্ত হওয়া থেকে এবং ধর্মে নানা মতের সৃষ্টি
করা থেকে কঠোরভাবে সাবধান করা হয়েছে। এই
মাযহাবগুলো রসুল (যা) এবং সাহাবাদের (রা) সময়
সৃষ্টি হয়নি। এমনকি ঈমামগনের সময়ও হয়নি। চার
ইমামের মৃত্যুর অনেক বছর পরে তাঁদের নামে
মাযহাব তৈরি হয়েছে।
মাযহাব তৈরিতে আল্লাহর কঠোরভাবে নিষেধ করেছেন।
মুসলমানেরা যাতে বিভিন্ন দলে আলাদা বা
বিভক্ত না হয়ে যায় সে জন্য আল্লাহ পাক
আমাদের কঠোরভাবে সাবধান করেছেন। যেমন
আল্লাহ তা’আলা কুরআনের সূরা আন-আমর এর ১৫৯
নম্বর আয়াতে বলেছেন ‘যারা দ্বীন সন্বন্ধে নানা
মতের সৃষ্টি করেছে এবং বিভিন্ন, দলে বিভক্ত
হয়েছে হে নবী! তাদের সাথে তোমার কোনও
সম্পর্ক নেই; তাদের বিষয় আল্লাহর ইখতিয়ারভুক্ত।
আল্লাহ তাদেরকে তাদের কৃতকর্ম সম্পর্কে অবগত
করবেন। একটু থামুন। উপরের আয়াতটা দয়া করে
বারবার পড়ুন এবং বোঝার চেষ্টা করুন, চিন্তা
করুন। আল্লাহ তা’আলা সরাসরি বলেছেন যারা
দ্বীন বা ধর্মে অর্থাৎ ইসলামে নানা মতগের সৃষ্টি
করেছে এবং বিভক্ত হয়েছে, তাদের সাথে
আমাদের নবী মহাম্মাদ (সা) এর কোনো সম্পর্ক
নেই। যার সাথে নবীজীর (সা) কোনো সম্পর্ক নেই
সে কি মুসলমান? সে কি কখনো জান্নাতের গন্ধও
পাবে। আমরা মুসলমান কোরআন হাদীস মাননে
ওয়ালা এটাই আমাদের একমাত্র পরিচয়। আল্লাহ
বলেন এবং তোমাদের এই যে জাতি, এতো একই
জাতি; এবং আমিই তোমাদের প্রতিপালক, অতএব
আমাকে ভয় করো। (সূরা মুউমিনুন ২৩/৫২)। তাহলেই
বুঝতেই পড়েছেন ফরয, ওয়াজীব ভেবে আপনারা
যা মেনে চলছেন আল্লাহ তা মানতে কত
কঠোরভাবে নিষেধ করেছেন তবে শুধু এইটুকুই নয়
আল্লাহ আরও অনেক আয়াতে এ ব্যাপারে মানুষকে
সাবধানবানী শুনিয়েছেন। যেমন সূরা রূমের একটি
আয়াত দেখুন যেখানে আল্লাহ পাক বলছেন ‘…..
তোমরা ঐ সকল মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত হয়ো না
যারা নিজেদের দ্বীনকে শতধা বিচ্ছিন্ন করে বহু
দলে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। প্রত্যেক দল নিজেদের
কাছে যা আছে তা নিয়ে খুশি’ – (সূরা রুম
৩০/৩১-৩২)। বর্তমানে আমাদের সমাজের অবস্থাও
ঐ মুশরিকদের মতো। ইসলামকে তারা
(মাযহাবীরা) বিভিন্ন দলে বিভক্ত করেছে এবং
তাদের নিজেদের কাছে যা আছে তা নিয়েই
তারা খুশি। তাদের সামনে কোনো কথা
উপস্থাপন করলে তারা বলেনা যে কুরআন হাদীসে
আছে কি না। তারা বলে আমাদের ইমাম কি
বলেছে। এরা কুরয়ান হাদীসের থেকেও ইমামের
ফিকাহকে অধিক গুরুত্ব দেয়। অথচ ইসলামের
ভিত্তি হচ্ছে কুরআন হাদীস। তা ছাড়া অন্য কিছু
নয়। উপরের আযাতে আল্লাহ তা’আলা আমাদের
উপদেশ দিয়েছেন তোমরা মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত
হয়ো না; তোমরা ইসলামে মাযহাবের সৃষ্টি করো
না। অথচ আমরা কুরআনের নির্দেশকে অগ্রাহ্য করে
দ্বীনে দলের সৃষ্টি করেছি এবং নিজেকে
হানাফী, মালেকী বা শাফেরী বলতে গর্ব অনুভব
করছি। আল্লাহ বলেন ‘হে ইমানদারগন তোমরা
আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের সামনে অগ্রগামী হয়ো না,
এবং আল্লাহকে ভয় করো; আল্লাহ সর্বশ্রোতা,
মহাজ্ঞানী (সূরা হুরুরতে/০১) আমার প্রিয়
মাযহাবী ভাইয়েরা! এরকম কোরআনের স্পষ্ট
নির্দেশ জানার পরও কি আপনারা মাযহাবে
বিশ্বাসী হবেন এবং নিজেকে মাযহাবী বলে
পরিচয় দেবেন। যারা জানে না তাদের কথা
আলাদা। আল্লাহ বলেন ‘বলো, যারা জানে এবং
যারা জানেনা তারা কি সমান? (সূরা যুমার
৩৯/০৯)।
তাই আজই তওবা করে সঠিক আকিদায়
ফিরে আসুন। আল্লাহ আমাদের সকলকে ইসলাম
বোঝার তোফিক দিন। আমীন!