মেশিন কীভাবে নকল নোট ধরে?
মেশিন কীভাবে নকল নোট ধরে?
কাগজের টাকা যেন কেউ সহজে নকল করতে না পারে, সে জন্য বিশেষ ধরনের কাগজ, নিরাপত্তা সুতা ও ছাপানোর অত্যাধুনিক কৌশল অবলম্বন করা হয়। টাকা নকল, না আসল, তা খালি চোখে পরীক্ষা করেই ধরা যায়। এমনকি যারা দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী, তারাও নোটের কোনায় উঁচু-নিচু নকশা স্পর্শ করে আসল-নকল ধরতে পারে। কিন্তু তার পরও আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে টাকা নকল করার এমন সব সূক্ষ্ম উপায় বেরিয়েছে যে শুধু চোখে দেখে পার্থক্য বোঝা কঠিন। তা ছাড়া একসঙ্গে অনেক টাকার লেনদেন হলে একটি একটি করে নোট পরীক্ষা করা সময়সাপেক্ষ। তাই মেশিনে নোট পরীক্ষার ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু মেশিন কীভাবে নকল নোট ধরে, সেটা গোপন রাখা হয়। জানাজানি হয়ে গেলে জালিয়াত চক্র মেশিনকে ফাঁকি দিয়ে নোট নকল করার কৌশল বের করে ফেলবে। তা সত্ত্বেও বলা যায়, মেশিন সাধারণত অন্তত দুটি কৌশল ব্যবহার করে। এগুলো হলো আলোক রশ্মি দিয়ে টের পাওয়া বা চৌম্বকীয় পদ্ধতিতে টের পাওয়া। কাগজের নোট ছাপানোর কালির কিছু চৌম্বকীয় গুণ থাকে, যার উপস্থিতি মেশিন টের পায়। নোটে ইলেকট্রনিক স্বাক্ষরের সুনির্দিষ্ট লেখচিত্র বিশ্লেষণ করে আসল, না নকল, তা কম্পিউটার বলতে পারে। তাই অত্যাধুনিক পদ্ধতিতে ফটোকপি করলেও মেশিন নকল নোট ধরে ফেলে। দ্বিতীয় পদ্ধতিতে নোটের ওপর আলোক রশ্মি ফেলা হয়। কোনো কোনো নোটের কালি সেই আলো শুষে নেয়, আবার কোনো কোনো কালি আলো প্রতিফলিত করে। ফলাফল পরীক্ষা করে কম্পিউটার বুঝতে পারে, নোট আসল, না নকল। উভয় ক্ষেত্রেই পরীক্ষা করতে সময় লাগে প্রায় এক সেকেন্ড। নোট নকল বন্ধের জন্য কিছু দেশ কাগজের পরিবর্তে পলিমার নোট ব্যবহার করে। এই নোট সহজে ফটোকপি করা যায় না। বাড়তি কিছু নিরাপত্তা চিহ্নও ওই সব নোটে থাকে। কিন্তু কঠিন হলেও পলিমার নোটেরও নকল হয়, যদিও নকলের হার কম। তবে মেশিন সেসব নকল নোটও আজকাল শনাক্ত করতে পারে।