যখন জানবে আমি ভার্জিন না সে কি আমায় সম্মান করতে পারবে?
আমার এক ছেলের সাথে সম্পর্ক ছিল। তার জোরাজুরিতে তার সাথে শারীরিক সম্পর্ক হয় দুইবার। এক বছর হল আমাদের সম্পর্ক শেষ। আমি আমার পরিবারকে খুব ভালোবাসি। নিজের ভুল বুঝতে পেরে এখন আমি তাদের কথামতই চলছি।
কিন্তু সমস্যা হচ্ছে বিয়ের কথা উঠলেই আমি ভয় পাই। আমি খুবই কল্পনাপ্রবন এক মেয়ে। সংসার নিয়ে অনেক সুন্দর কিছু ভেবে আসছি ছোট থেকে। আমি আমার স্বামীকে খুব ভালোবাসতে চাই। আর চাই সে আমাকে সম্মান করুক। কিন্তু ভয়টা এখানেই। সে যখন জানবে আমি ভার্জিন না সে কি আমায় সম্মান করতে পারবে?
আমার পরিবার খুবই ভদ্র। আর ছেলেও দেখছে তেমনই ভদ্র পরিবারের। আমি দিন দিন এটা ভেবে খুব মানসিক চাপে আছি। আমি ধরেই নিয়েছি আমার কখনও বিয়ে হবে না কারণ আমার বিয়ে আমার অনেকদিনের স্বপ্ন। ছেলে দেখতে এলে অনেক খুশি হই আবার এই ভয়টা পাই। আচ্ছা আমি কী করতে পারি যদি আসলেই কখনো বিয়ে ঠিক হয় কারো সাথে? পরিবারের কথা ভেবে বিয়ের আগে আগে সত্যি জানানো সম্ভব না, আবার পরে জানলে সে কী করবে? সবাই বলে কর্মফল। আমি কী করব? প্লিজ জানাবেন।
আপনি বিয়ের আগে বা বিবাহীত জীবনের কোন অধ্যায়েই আপনার স্বামীকে আপনার জীবনের এ ঘটনাটি জানাবেন না, কোনক্রমেই না। দেখুন, আপনি যা করেছেনে সেটা আপনার বয়স এবং পরিবেশের সমর্থনের কারণে করেছেন আর করেছেন চারিত্রিক দৃঢ়তার অভাবে। আপনি নিজেই লিখেছেন “কল্পনাপ্রবণ” মেয়ে আপনি, তো কল্পনাপ্রবণতার কারণেও ঘটতে পারে অমন ঘটনা, এবং আমি নিশ্চিত তা ই ঘটেছে। হয়তো আপনার আর করবার কিছুই ছিল না ঐসব মুহূর্তে। তো যে কারণেই ঘটুক সেটা শুধু আপনারই থাক। ভুলে যান, ভুলতে আপনাকে হবেই এবং প্রকৃতিও তাই বলছে যে, আপনি ভুলে যাবেন। তাহলে আর স্বামীকে কেন অযথা এর মধ্যে টানবেন, তার মনের মধ্যে এক ধরণের অহেতুক ভাবনা/বিরক্তি/জটিলতা/যন্ত্রণা ঢুকিয়ে দেবেন। তিনি এ যন্ত্রণায় তো একা জ্বলবেন না ম্যাডাম, আপনাকে নিয়েই জ্বলবেন, মানুষের আচরণ তো তাই প্রমাণ দিচ্ছে প্রত্যেক ক্ষেত্রে।
সুতরাং, আপনি তাকে বিয়ের আগে বা পরে যখনই জানান না কেন তিনি মেনেও যদি নেন আপাতভাবে কিন্তু এর ফল কিন্তু চলতে থাকবে, চলতেই থাকবে। আপনি ঘুণাক্ষরেও হয়তো টের পাবেন না এ ফল চলতে চলতে কোথায় গিয়ে ঠেকে। তাই, সাবধান আপনি আপনার স্বামীকে বিয়ের আগে বা জীবনের কোন অধ্যায়েই জানাবেন না। এটা কোনভাবেই কোন প্রয়োজনীয় ঘটনা নয় যে উনাকে জানাতেই হবে।
এবার সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ যে কথাটি সে প্রসংগে আসি “ভার্জিনিটি”- আপনার স্বামী কোনক্রমেই বুঝতে বা ধরতে সক্ষম হবেন না যে, আপনি ভার্জিন, কি না? কেননা, যে কোন কারণেই আমরা যেটাকে মেয়েদের ভার্জিনিটি হিসেবে বুঝে থাকি তা নষ্ট হতে পারে, যেমন ধরুন-ভারী কাজ করলে, সাঁতার কাটলে, খেলাধূলা করলে, সাইকেল চালালে, যোগব্যায়াম করলে বা অন্য কোন কারণেও এটি ঘটতে পারে। আর আপনার ক্ষেত্রে যে এসব কারণে ঘটেনি তা কী করে আপনার স্বামী জানবেন? তাহলে সমাধান খুব সোজা, নিশ্চই আপনি এখন বুঝতে পারছেন কেন উনাকে এ বিষয়টা আদৌ জানানোর প্রয়োজনই নেই।
তাই, আপনি এ বিষয়টা মাথা থেকে সরিয়ে দিন। নিজেকে যতদূর সম্ভব সাবলম্বী হিসেবে তৈরী করুন, পড়াশুনা অবস্থায় থাকলে তাতে গুরুত্ব দিন। বিয়ের সময় বিয়ে করবেন। আর পড়াশুনার সময় পড়াশুনা বা কাজের জায়গায় কাজ। আপনার জীবনে যেটা ঘটেছে সেট নিছক আপনার সাময়িক দূর্বল মুহূর্তের দূর্বল একটি সেশন হিসেবেই আমি দেখছি, ভিন্ন কিছু বা ভিন্ন কোন গুরুতর ঘটনা নয় আদৌ। সুস্থ-স্বাভাবিক-সুন্দর আর নির্মল রাখবার চেষ্টা করুন অনাগত দিনগুলিকে। এখানকার একজন পাঠক হিসেবে আমার সাধারণ কিছু মতামত জানালাম আপনাকে………..