রাজসাক্ষী কাকে বলে?
অপরাধ দমনের দায়িত্ত রাষ্ট্রের আর একারনে অধিকাংশ অপরাধের মামলার বাদী রাষ্ট্র হয়ে থাকে। আইন শৃংখলা রক্ষা করে জনগণের নিরাপত্তা বিধানের দায়িত্ত রাষ্ট্রের। ব্রিটিশ শাসন আমলে বাদী হতেন রাজা। তাই গুরুতর অপরাধ সংঘটনকারী ব্যাক্তি যারা আইনের সুযোগ নিয়ে সাক্ষী হয়ে রাজার পক্ষে সাক্ষ্য প্রদান করতেন তারাই রাজসাক্ষী হিসেবে গণ্য হতেন।
কোন একটি অপরাধ সংঘটনে যে সকল ব্যাক্তি জড়িত থাকে তাদের প্রত্যেককে অপরাধের সহযোগী বলা চলে। অপরাধে সহযোগী সাধারণত সরকার হতে ক্ষমার প্রতিশ্রুতি লাভ করে রাজসাক্ষীতে পরিণত হয় এবং সে কারনে সরকারের পক্ষাশ্রিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। সাক্ষ্যের অভাবে কোন অপরাধী যাতে শাস্তি থেকে অব্যাহতি না পায় সে কারনে ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৩৭ ও ৩৩৮ ধারায় কতিপয় শর্ত সাপেক্ষে আসামীকে সাক্ষী হিসাবে ব্যাবহার করার বিধান রয়েছে। গুরুতর অপরাধ সংঘটনকারীর কোন সহচর যদি অপরাধের ঘটনা সম্পুর্ন রুপে প্রকাশ করে এবং নিজেকে জড়িয়ে সহচরদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য প্রদান করে তাহলে তাকে রাজসাক্ষী বলে।
কেবলমাত্র দায়রা আদালতে বিচারযোগ্য কোন অপরাধ বা দশ বৎসর পর্যন্ত কারাদণ্ডে দণ্ডনীয় কোন অপরাধ বা দণ্ডবিধির ২১১ ধারার অধীনে সাত বৎসর পর্যন্ত কারাদণ্ডে দণ্ডনীয় কোন অপরাধ বা দণ্ডবিধির ধারা ২১৬ক, ৩৬৯, ৪০১, ৪৩৫ ও ৪৭৭ক এর কোন অপরাধের ক্ষেত্রে একজন মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বা কোন প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট অপরাধটির তদন্ত অনুসন্ধান বা বিচারের কোন পর্যায়ে অপরাধের সহযোগী কোন ব্যাক্তিকে এই শর্তে ক্ষমা করার প্রস্তাব দিতে পারেন যে অপরাধীদের সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগত বিষয়ে সত্য ঘটনা প্রকাশ করলে তাকে ক্ষমা করা যাবে।
রাজসাক্ষীর বিবৃতিতে দুটি উপাদান থাকতে হবে যথা ক) সে অপরাধে অংশ গ্রহণ করেছিল এবং খ) অন্য সকল আসামীর অংশগ্রহণ গুরুত্বপূর্ণ বিষয় দ্বারা সমর্থিত।
রাজসাক্ষী যদি পুর্বে থেকে জামিনে না থাকে তাহলে তাকে বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত কারাগারে আটক রাখতে হবে। কারণ জামিনে থাকা রাজসাক্ষীর সাক্ষ্যের প্রকৃতি অনেকটা দুর্বল।