রোজাদারের জন্য কি কি কাজ হারাম?
রোজাদারের জন্য কি কি কাজ হারাম?
রোজার কিছু আদব আছে যেগুলোর প্রতি বিশেষভাবে লক্ষ্য রাখতে হয় এবং বাস-বায়ন করতে হয় যাতে রোজা শরীয়তসম্মতভাবে সম্পাদন করা যায়, রোজার উপকারগুলো লাভ করা যায় এবং তার উদেশ্য অর্জন হয়। কোন উপকার ছাড়া যেন অযথা কষ্ট না হয়। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন : কিছু রোজাদার এমন যারা শুধু ক্ষুর্ধাত থাকে এছাড়া আর কোন কিছু লাভ করে না। রোজা শুধু ক্ষুর্ধাত থাকার নাম নয় বরং এর সাথে র্গর্হিত কথা ও কাজ ছেড়ে দিতে হবে।
কেউ বলেছেন : সবচেয়ে সহজ রোজা হচ্ছে পানাহার ছেড়ে দেওয়া। আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করতে হলে পানাহার ছাড়ার সাথে সাথে অন্য কোন নিষিদ্ধ কাজ করা যাবে না। মুসলমানের উপর যে নিষিদ্ধ কাজ বর্জন করা আবশ্যক তা রোজার সময় বর্জন করা আরো বেশী আবশ্যক। যে অন্য সময় হারাম কাজ করে সে গোনাহগার হয় এবং শাসি-র উপযুক্ত হয়। আর যদি সে রোজার সময় করে তাহলে গোনাহ ও আযাবের পাশাপাশি তার রোজাও অসম্পূর্ণ ও নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশংকা থাকে। প্রকৃত রোজাদার সে যে পানাহার থেকে বিরত থাকে, তার অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ গোনাহ থেকে বিরত থাকে, তার জিহ্বা গালি-গালাজ ও খারাপ কথা বলা থেকে বিরত থাকে, তার শ্রবণ গান-বাজনা বাঁশির সুর গালি-গালাজ ও অন্যের দোষ শোনা থেকে বিরত থাকে, তার দৃষ্টি নিষিদ্ধ নজর থেকে বিরত থাকে।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন : যে ব্যক্তি মিথ্যা বলা ও আমল বর্জন করে নাই। তাহলে তার পানাহার ছেড়ে রোজা রাখার দরকার নেই। কেননা এতে সে আল্লাহর পক্ষ থেকে কোন বিনিময় পাবে না। (বুখারি : ১৯০৩) রোজাদারের উচিত গীবত, অন্যের দোষ বর্ণনা ও গালি-গালাজ ছেড়ে দেওয়া। আবু হুরাইরাহ রা: থেকে বর্ণিত নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন : তোমাদের কেউ যেন রোজা রাখা অবস’ায় কোন খারাপ কর্ম না করে। যদি কেউ তার সাথে ঝগড়া করতে আসে বা গালি দেয় তাহলে সে যেন বলে আমি রোজাদার। (বুখারি : ১৮৯৪) আরেক বর্ণনায় রোজাকে ডাল বলা হয়েছে অর্থাৎ যা রোজাদারকে ঢেকে রাখে এবং তাকে অন্যের অস্ত্র আঘাত করতে বারণ করে। রোজা রোজাদারকে গোনাহের কাজে পতিত হওয়া থেকে হেফাজত করে, যার পরিণাম শাসি-। আরেক বর্ণনায় এসেছে যে, রোজা ডাল স্বরূপ যতক্ষণ পর্যন- তা ভেঙ্গে ফেলা হবে। প্রশ্ন করা হল কিসের দ্বারা ভাঙ্গা হবে। তিনি বললেন : মিথ্যা বা গীবতের দ্বারা। (বায়হাকী : ১৭৩/৭)
এতে বুঝা যায় যে, গীবত রোজাকে ভেঙ্গে দেয় অর্থাৎ প্রভাব ফেলে। ডাল ভেঙ্গে গেলে যেমন কোন উপকার পাওয়া যায় না তেমনিভাবে রোজা যখন ভেঙ্গে যাবে তখন তার দ্বারা কোন উপকার পাওয়া যাবে না।
গীবত কী? গীবত হল : রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন : তোমার ভাইয়ের এমন কিছু উল্লেখ করা যা সে অপছন্দ করে। এক বর্ণনায় এসেছে যে গীবতের কারণে রোজা ভেঙ্গে যায়। গীবত মানে অপর মৃত ভাইয়ের গোশ্ত খাওয়া। আল্লাহ তাআলা বলেন : এবং একে অপরের গীবত করো না। তোমাদের মধ্য কী কেউ তার মৃত ভাইয়ের গোশ্ত খেতে পছন্দ করবে ? (হুজুরাত : ১২) গীবতের মাধ্যমে রোজা ভেঙ্গে যাওয়ার অর্থ হচ্ছে তার পূণ্য লাভ হবে না।
শায়খ সালেহ বিন ফাওযান আল ফাওযান
সম্পাদনা : আব্দুল্লাহ শহীদ আব্দুর রহমান
সৌজন্যে : ইসলামহাউজ