শবে বরাত উপলক্ষে হালুয়া রুটি খাওয়ার প্রচলন কীভাবে হয়?

শবে বরাত উপলক্ষে হালুয়া রুটি খাওয়ার প্রচলন কীভাবে হয়? এছাড়া এটি কি ধর্মীয়ভাবে স্বীকৃত?
Vice Professor Asked on June 2, 2015 in ইসলাম ধর্ম.
Add Comment
1 Answer(s)

    যেভাবে প্রচলিত হয়েছিল :

    খাজা মাঈনুদ্দিন চিশতিয়া যখন এই উপপহাদেশে আসেন তখনকার মুসলিম সমাজের লোকেরা খুবই গরীব ছিল। আর তখন গরীব ভিক্ষুকদের টাকা পয়সা ভিক্ষা দেয়ার প্রচলন ছিল না। তখন গরীব দুঃখীদের খাদ্য দান করা হত। পবিত্র শাবান মাসের ১৪ তারিখ দিবাগত রাত অর্থাৎ ১৫ শাবান রাত হচ্ছে শবে বরাত। এ রাতের অশেষ ফযীলতও হাদীসে বর্ণিত হয়েছে। বছরের পাঁচটি শ্রেষ্ঠ রজনীর অন্যতম এ শবে বরাত। এ রাতের করণীয় সম্পর্কে রাসূল সা. ইরশাদ করেন, ১৫ শাবান রাতে তোমরা জেগে থেকে ইবাদত কর এবং পরদিন রোযা রাখ। এ জন্য শবে বরাতে জেগে থেকে ইবাদত করা এবং পরদিন রোযা রাখা বিশেষ সওয়াবের কাজ। শবে বরাতে দান করাও খুব ফজিলত পূর্ন। গরীবদের মাঝে দান করার জন্যে তখনকার মুসলমানেরা রুটি বানিয়ে হালুয়া সহকারে বিলানো হত। পবিত্র কোরানে সুরা মাউনে গরীবদের মাঝে খাদ্য দানের কথা বলা হয়েছে। তাই বহু আগে থেকেই খাদ্য বিলানোর প্রথা চালু ছিল। সেই থেকেই শবে বরাতে রুটি হালুয়া বিলানোর প্রচলন চলে আসছে।

    ধর্মীয় গুরুত্ব :

    পবিত্র শাবান মাস রহমত বরকত এবং মাগফিরাতের বার্তাবাহক। আরবি চান্দ্রমাসের মধ্যে শাবান মাস হলো বিশেষ ফযীলতপূর্ণ। এ মাসে রয়েছে লাইলাতুল বরাতের মতো অত্যন্ত বরকতময় রজনী, যাকে বলা হয় মাহে রমযানের আগমনী বার্তা। শাবান মাস মূলত পবিত্র মাহে রমযানের প্রস্তুতির মাস। প্রতিবারের মতো শাবান মাস মুসলমানদের কাছে রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের মহিমান্বিত রমযান মাসের সওগাত নিয়ে আসে। অধিক ইবাদতের মাস রমযান, এজন্য পবিত্র শাবান মাস থেকেই রমযানের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া প্রত্যেক মুসলমানেরই কর্তব্য। বিভিন্ন হাদীসে এ মাসের বিশেষ ফযীলত ও তাৎপর্য বর্ণিত হয়েছে। এ মাসে মুসলিম উম্মাহর কিছু করণীয়ও রয়েছে। হযরত মুহাম্মদ সা. শাবান মাস থেকেই পবিত্র রমযানের জন্য প্রস্তুতি নিতেন বলে হাদীসে উল্লেখ পাওয়া যায়। হযরত মুহাম্মদ সা. পবিত্র শাবান মাস থেকেই রমযানের জন্য অধীর আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করতেন। আর এ কারণেই তিনি পবিত্র শাবান মাসের দিন-তারিখের খুব গুরুত্ব দিয়ে হিসাব রাখতেন। হযরত আয়েশা রা. বলেন, হযরত মুহাম্মদ সা. পবিত্র শাবান মাসের দিন-তারিখের এত হিসাব রাখতেন যতটা হিসাব অন্য মাসের রাখতেন না। [আবু দাউদ ১/৩১৮] সুতরাং পবিত্র শাবান মাসের দিন-তারিখের হিসাব রাখা সুন্নাত। আপনি জানতে চেয়েছেন রুটি হালুয়ার কথা। দেখুন শবে বরাতে রুটি হালুয়া তৈরী করার কোন বাধ্যবাধকতা নেই। আমরা প্রতিদিন আহার করি। আপনি যদি আহারের উদ্দেশ্যে রুটি হালুয়া তৈরী করেন তাতে কোন দোষ নেই। আবার গরীব মিসকিনদের খাবারের উদ্দেশ্যে তৈরী করে গরীবদের মাঝে বিলিয়ে দেয়ায় অনেক নেকী হাসিল হবে। গরীবদের রুটি হালুয়া দিতে হবে এমন কোন কথা নেই, আপনি ইচ্ছা করলে গরীবদের ভাত মাছও খাওয়াতে পারেন। সম্পূর্ণ আপনার ইচ্ছা। আগের মানুষেরা কৃষি নির্ভর ছিল। তাদের হাতে নগদ টাকা তেমন না থাকার কারণে গরীব মিসিকিনের মাঝে খাদ্য দান করত। আপনিও ইচ্ছা করলে খাদ্য দান করতে পারেন অথবা টাকা পয়সা। ধন্যবাদ

    Professor Answered on June 2, 2015.
    Add Comment
  • RELATED QUESTIONS

  • POPULAR QUESTIONS

  • LATEST QUESTIONS

  • Your Answer

    By posting your answer, you agree to the privacy policy and terms of service.