শসার উপকারিতা কি কি?
আজ থেকে প্রায় তিন হাজার বছর আগেও রোমান সম্রাটদের পছন্দের তালিকায় ছিল শসা। কথিত আছে যে সম্রাট টাইবেরিয়াস নাকি শসা খুব পছন্দ করতেন। কিন্তু তখন তো আর সারা বছর মিলত না এই বস্তু। আর তাই সম্রাটের টেবিলে শসার সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য সে আমলে কৃত্রিম উপায়ে উৎপাদন করা হতো এই শসা। রোমানরা একটি ঘোড়ার গাড়িতে শসার চাষ করার বুদ্ধি বের করেছিল। প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে ঘোড়ার গাড়িটি বাইরে নিয়ে রোদে রাখা হতো। আর সন্ধ্যায় সে গাড়িটি একটি গরম ঘরে রেখে আবৃত করে দেয়া হতো অয়েলক্লথে। বলতে পারেন চাষাবাদের “গ্রিন হাউজ পদ্ধতির” শুরু একরকম সেখান থেকেই।
কেবল খাওয়ার জন্য নয়, প্রাচীন রোমে চিকিৎসার ক্ষেত্রেও ছিল শসার ব্যবহার। ফ্রান্সে এবং ইংল্যান্ডে শসা চাষ শুরু হয় নবম ও ত্রয়োদশ শতকের দিকে। পঞ্চদশ শতকে এটি ঢুকে পড়ে আমেরিকায়। বর্তমানে পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই বিপুল সমাদৃত একটি খাদ্য। ফল ভাবুন বা সবজি, পৃথিবী জুড়ে মানুষের খাদ্য তালিকায় এর অস্তিত্ব আছে। কাঁচা কিংবা সালাদ হিসেবে তো আছেই, বাংলাদেশ সহ অনেক স্থানেই প্রাপ্ত বয়স্ক শসা দিয়ে রান্না করা হয় মাছ-মুরগী-ডাল। রান্না হয় শসার সুপ সহ আরও নানা রকম সুস্বাদু খাবার। পশ্চিমা দেশ গুলোয় শসার আচারও প্রচলিত আছে।
একনজরে কিছু উপকারিতা
* ফাইবার ও ফ্লুইডসমৃদ্ধ শসা শরীরে ফাইবার এবং পানির পরিমাণ বাড়ায়। পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম ও ফাইবার থাকার কারণে শসা উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে থাকে।
* শসায় রয়েছে স্টেরল নামের এক ধরনের উপাদান, যা কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এ ক্ষেত্রে মনে রাখা প্রয়োজন, শসার খোসায়ও স্টেরল থাকে।
* ওবেসিটি নিয়ন্ত্রণে শসা খুব উপকারী।
* কিডনি, ইউরিনারি, ব্লাডার, লিভার ও প্যানক্রিয়াসের সমস্যায় শসা বেশ সাহায্য করে থাকে।
* এরেপসিন নামক অ্যানজাইম থাকার কারণে শসা হজম ও কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা সমাধান করে থাকে।
* শসা বা শসার রস ডায়াবেটিস রোগীর জন্যও বেশ উপকারী।
* শসার রস আলসার, গ্যাস্ট্রাইটিস, অ্যাসিডিটির ক্ষেত্রেও উপকারী।
* মিনারেলসমৃদ্ধ শসা নখ ভালো রাখতে, দাঁত ও মাঢ়ির সমস্যায় সাহায্য করে।
* ডাক্তারের পরামর্শনুযায়ী শসার রস খেলে আর্থ্রাইটিস, অ্যাগজিমা, হার্ট ও ফুসফুসের সমস্যায় উপকার হতে পারে। গাজরের রসের সাথে শসার রস মিশিয়ে খেতে পারেন, ইউরিক অ্যাসিড থেকে ব্যথার সমস্যা হলে অনেক কাজে দেবে।