সন্তান কথা শেয়ার করে না, কী করতে পারি?
সন্তান কথা শেয়ার করে না, কী করতে পারি?
শেয়ারিং একটা দ্বিমুখী প্রসেস। যেমন, আমি যখন ছোট ছিলাম আমার মা ছিলো আমার বেস্ট ফ্রেন্ড। সবকিছু তার সাথে শেয়ার করতাম, এমনকি এখনো করি। কেন বলুন তো? কারণ আমি দেখতাম সারাদিন মা অফিস করে আর আমি স্কুল করে যখন বাসায় ফিরতাম তখন আম্মু তার সারাদিন কি কি হল, কি মজার ঘটনা ঘটল, কোনো কিছুতে তার ভালো বা কষ্ট লেগেছে কি না সব কিছু (অবশ্যই আমার উপযোগী করে) শেয়ার করতো, গল্প করতো। তখন আমারো নিজে থেকেই ইচ্ছে করতো আমার সারাদিনের গল্পও আম্মুর সাথে শেয়ার করতে। এটা একদিনে হয়নি। আস্তে আস্তে হয়েছে। আপনাকেও সেটা করতে হবে বোন। আপনার ছেলে যেন এটা অনুভব করে যে আপনি তার বন্ধু। আপনি আপনার সব দুঃখ কষ্ট আনন্দ ভালো লাগা তার সাথে শেয়ার করেন (অবশ্যই যেটুকু বাচ্চার সাথে শেয়ার করা যায়)। তখন তারও মনে হবে, হ্যাঁ, মা কে সবকিছু বলা যায়। কোন ভুল করলেও বলা যায়, মা তাতে হুট করে রাগ করবে না, বরং তাকে বুঝবে, বোঝাবে, সমাধান দেখাবে সমস্যার। তাকে এটা বোঝাতে হবে যে তার এবং তার মা এর জগত আলাদা না, এক। তার মা এর কাছে তার ভালো লাগা মন্দ লাগার অনেক মূল্যবান। সন্তান যদি বাসায় এসে দেখে তার বাবা মা তাকে সময় দিচ্ছে না, মা টিভিতে মগ্ন, বাবা ল্যাপটপে, তখন আপনাদের অজান্তেই সন্তানের সাথে একটা দূরত্ব তৈরি হয়ে যাবে। কিছুটা সময় তাকেও দিন। ল্যাপটপে কাজ করবার ফাঁকে এমনিই ছেলেকে ডাকুন, বলুন, দেখতো, এটা কি করে করতে হয়, অফিসের কাজটা করতে পারছি না, আমি কম্পিউটারে অত কিছু বুঝি না। সে হয়তো তাতে একটু খুশি হবে, বাবা মার কাছে তার গুরুত্ব আছে, এটা বুঝবে। টিভিতে কিছু দেখলে একসাথে দেখুন। হোক বাচ্চাদের সিনেমা, তবু দেখুন।একসাথে সময় কাটান। সন্তানকে বুঝতে দিন, আপনারা তার বন্ধু। ধন্যবাদ
অথই নীলিমা
প্রভাষক
পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।