সফল হতে হলে কী করতে হবে?
সাফল্যের মন্ত্র, এমন এক বস্তু,
যার সঠিক সংজ্ঞা দেওয়া কারো নয় সাধ্য।
কেউ বলে মিশে আছে প্রকৃতিতে।
আবার কেউ বলে সাফল্য আছে কবির লেখা কাব্যে।
আবার বলে, সাফল্য কাহাকে বলে?
আমি বলি, সাফল্য আছে ঈগলের জীবনে।
আমরা যদি ঈগলের জীবনী ভালোভাবে অধ্যয়ন করি তাহলে আমরা আমাদের উত্তর পেয়ে যাবো। আকাশের বাদশা যখন আকাশে উড়ে তখন আকাশ যেন তাকে স্বাগতম জানায়। অথচ এই বাদশা তার জীবনে যতটা সমস্যার সমাধান করে তা আমাদের জন্য শুধু কল্পনা মাত্র।
একটা ঈগল যখন জন্ম নেয় তখন প্রথমেই তাকে উড়া শিখতে হয়, তার মা তাকে সেই আকাশের উঁচুতে নিয়ে একাই ছেড়ে দেয়। তখন সেই ঈঘলের বাচ্চা হার না মেনে উড়ার চেষ্টা করে অবশ্যই সে সফল হয় আকাশ যেন তাকে বাঃ বাঃ জানায়।
এই কঠিন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে একটা লম্বা সময় আকাশে রাজত্ব করে। তবে সেই বাদশা এক সময় একটা কঠিন পরীক্ষার সম্মুখীন হয়। আমরা সবাই জানি ঈগল তার তীক্ষ্ণ ঠোটের দ্বারা শিকার করে। ধারালো থাবা দিয়ে শিকার ঝাপটিয়ে ধরে। পাহাড় সমান পাখনা দ্বারা আকাশে উড়ে।
কিন্তু যখন তার চল্লিশ বছর হয় তখন তার ঠোঁট নিচের দিকে বাঁকা হয়ে যায় যার দরুন সে শিকার করতে পারেনা।
পায়ের থাবা নরম হয়ে যায়, যার জন্য সে শিকার ঝাপটিয়ে ধরতে পারে না।
তার পাখনা শরীরের সাথে মিশে যায় যার কারণে সে উড়তে পারে না। ঠিক এই রকম:
এমন পরিস্থিতিতে তার সামনে তিনটি বিকল্প থাকে। এই তিনটি বিকল্প হলো:
১) নিজেকে শেষ করে দিবে।
২) শকুনের মত মৃত পশু খেয়ে বেঁচে থাকবে।
৩) নিজেকে আবার পুনরায় প্রতিষ্ঠা করবে।
সে কিন্তু তৃতীয় বিকল্প বেছে নেয়। সে একটি উঁচু পাহাড়ের মধ্যে নিজের বাসা তৈরি করে। সে পাথরের মধ্যে নিজের টুট মারতে থাকে ততক্ষণ যতক্ষণ না তার ঠোট পুরোপুরি ভেঙ্গে যায়। টিক একইভাবে পাথরে মেরে পায়ের থাবা ভেঙ্গে ফেলে।
অপেক্ষা করতে থাকে নতুন টুট এবং থাবা গজানোর, অপেক্ষার প্রহর শেষ হলে নতুন টুট এবং পায়ের থাবা গজালে সে নিজের টুট দিয়ে নিজেরই পাখনা, শরীর থেকে ছিড়ে ফেলে। অপেক্ষা করতে থাকে নতুন পাখনা গজানোর।
ক্ষুধা, তৃষ্ণা, জ্বালা নিয়ে দীর্ঘ ১৫০ দিন পরে সে আবার তার পূর্বের অবস্থান ফিরে পায়। ঠিক এইভাবে:
আকাশ আবার তাকে স্বাগতম জানায় এবং আরো ৩০ বছর রাজত্ব করে। এই ৭০ বছরে ঈগল তার জীবনে যতটা সমস্যার সমাধান করেছে তা আমাদের জন্য শুধু কল্পনা মাত্র।
দেখুন বাজ পাখি তার জীবনের এই গল্প দিয়ে আমাদের অনেক কিছু শিক্ষা দেয়। কেউ সফল হতে হলে তা করতে হবে।
১) দুঃসময়: বাজ পাখির মত আমাদের জীবনে একটা দুঃসময় আসে যার কারনে আমরা দুর্বল হয়ে পড়ি। তবে বাজপাখি আমাদের শিক্ষা দেয় এবং জীবনে সফল হতে হলে বাজ পাখির মতো আমাদেরকে দুঃসময় কাটিয়ে আবার পুনরায় নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।
২)প্রবল ইচ্ছা শক্তি: প্রতিটি মানুষের জীবনে একটা সময় আসে যখন সে হতাশ, নিরুপায় ,ও জীবনের প্রতি বিরক্ত হয়ে যায় তখন কিছু কিছু মানুষ নিজের জীবনকে শেষ করে দিতে চায়। এসব মানুষকে আমি বলব নিজের জীবনকে পুনরায় প্রতিষ্ঠা করো বাজপাখির ডানা, ঠোঁট, ও থাবার মতো।
৩) ব্যর্থতায় ভেঙ্গে না পড়া: বাজপাখি তোমাকে শিক্ষা দেয় ব্যর্থতায় ভেঙ্গে না পড়া। সে বলে ব্যর্থতা একটা পরীক্ষা মাত্র। একবার ব্যর্থ হলে পুনরায় চেষ্টা করো এভাবে চেষ্টা করতেই থাকো, যতক্ষণ না তুমি তোমার লক্ষ্যে পৌঁছায়। ব্যর্থতায় ভেঙ্গে না পড়ে ধৈর্য ধারণ করো এবং সঠিক সময়ের অপেক্ষা করো অবশ্যই তোমার জীবনে সফলতা আসবে।
৪)হার না মানা: নিজেকে কখনোই হারতে দেবে না এবং হার মানবেওনা। হিন্দিতে একটি বিখ্যাত এবং সুন্দর প্রবচন হল: আগর মান লিয়া তো হার হে, অর আগর ঠান লিয়া তো জিত হে। সঠিক পথ ও চেষ্টা চালিয়ে গেলে নতুন সূর্যোদয় হবেই।