সময় কে আপনি কিভাবে ব্যাখা বা উপস্থাপন করবেন?
সময় কে আপনি কিভাবে ব্যাখা বা উপস্থাপন করবেন?
আলহামদুলিল্লাহ। কঠিন কোন বিষয়কে খুব সহজে ব্যখ্যা করতে পারি, তেমন একটা সুনাম আছে আমার। দেখতে খুব সহজ মনে হলেও, এটা খুব কঠিন প্রশ্ন। আমি এই পর্যন্ত বাংলা Quora তে ৫৭০ টি প্রশ্নের উত্তর লিখেছি। এটা সম্ভবত সবচেয়ে কঠিন প্রশ্ন।
একটা পোষা প্রাণীকে নদীতে নিয়ে যান, সে নদীর স্রোত, পানির গভীরতা, ডুবে যাবার বিপদ, ইত্যাদি বুঝবে। কিন্তু নদীর পানিতে থাকা মাছ, এসব কিছুই বোঝে না। কারণ, আপনার পোষা প্রাণীটি নদীর বাইরে থেকে নদী দেখে। মাছ পানির ভেতর থেকে দেখে। পানির বাইরে থেকে নদীটি দেখতে কেমন, সেটা নদীর মাছ কোনদিনও বোঝে না।
আমরা সময়ের মধ্যে থাকি। সময় নদীর মতন প্রবাহিত হয়। সময়ের বাইরে যাবার উপায় থাকলে, সময় জিনিসটা বোঝা যেতো। নদীর মাছ যেমন নদীর বাইরে গিয়ে নদীটি দেখতে পারে না। ঠিক তেমনি, আমরা সময়ের বাইরে গিয়ে সময়কে দেখতে পারি না। তাই আমরা সময়কে বুঝি না।
ছবিতে একটি মোবাইলের ডাইমেনশন (আয়তন) দেওয়া আছে। দৈর্ঘ ১৬০ মিলিমিটার, প্রস্থ ৭০ মিলিমিটার, উচ্চতা ৭ মিলিমিটার। যে কোন বস্তুর তিনটি ডাইমেনশন থাকে, দৈর্ঘ, প্রস্থ ও উচ্চতা। এই মোবাইলটি একবার টেবিলের উপরে রাখুন। এক মিনিট পরে, সেই মোবাইলটি ফ্রিজের উপরে রাখুন। এক মিনিট পরে, মোবাইলটিকে টেলিভিশনের পাশে রাখুন। এই তিন মিনিটের বর্ণনা কিছুটা এমন
- ১৬০ মিলিমিটার X ৭০ মিলিমিটার X ৭ মিলিমিটার X সময় ১০ঃ০১
- ১৬০ মিলিমিটার X ৭০ মিলিমিটার X ৭ মিলিমিটার X সময় ১০ঃ০২
- ১৬০ মিলিমিটার X ৭০ মিলিমিটার X ৭ মিলিমিটার X সময় ১০ঃ০৩
লক্ষ্য করুন, মোবাইলের আয়তন একই আছে। কিন্তু তিনবার মোবাইলটি তিনটি ভিন্ন অবস্থানে গেছে। এটাই সময়। প্রতিটি বস্তুর আয়তনের জন্য দৈর্ঘ, প্রস্থ ও উচ্চতা এই তিনটি ডাইমেনশন থাকে। চতুর্থ ডাইমেনশন হলো সময়।
সকল বস্তুর অবস্থা (condition) এবং অবস্থান (location) পরিবর্তন এর ধারাবাহিকতাকে সময় বলা হয়।
আল্লাহর সৃষ্টি আমরা যা জানি, তার মধ্যে সবচেয়ে রহস্যময় জিনিস হলো সময়। এই সময়ের নিয়োন্ত্রন মানুষের সাধ্যের বাইরে। সময় নিয়োন্ত্রন করতে পারলে, এক মুহূর্তের মধ্যেই দুনিয়া বদলে ফেলা যেতো। নিয়োন্ত্রন তো অনেক দূরে, মানুষ একটি সময় থেকে আরেকটি সময়তে যেতেও পারে না। আমরা সময়ের বাইরে যেতে পারি না। আল্লাহ আমাদেরকে মুলত সময় দিয়েই দুনিয়াতে বন্দী করে রেখেছেন।