স্বপ্ন বিষয়ক কিছু বৈজ্ঞানিক তথ্য চাই?
স্বপ্ন বিষয়ক কিছু বৈজ্ঞানিক তথ্য চাই?
স্বপ্ন বিষয়ে অনেক মনস্তাত্ত্বিকই গবেষণা করেছেন। বিভিন্ন ব্যাখ্যাও তারা দাঁড় করেছেন। প্যারিসে অবস্থিত ইউনিভার্সিটি পিয়েরে-এট-মারিয়ে-কিউরিয়ে এর স্নায়ুবিজ্ঞানের একজন অধ্যাপক ও নিদ্রা বিশেষজ্ঞ ড. ইসাবেলে আরনুফ এর গবেষণার আলোকে স্বপ্ন বিষয়ক কিছু ব্যাখ্যা প্রদান করেছেন। আসুন জেনে নিই আরনুফের দেয়া স্বপ্ন বিষয়ক কিছু তথ্য সম্পর্কে।
১. অসংখ্য স্বপ্ন দেখার ক্ষমতা রয়েছে একজন মানুষের :
সত্যি কথা, একজন মানুষ অসংখ্য স্বপ্ন দেখার ক্ষমতা রাখে। একজন মানুষ তার সারা জীবনে গড়ে প্রায় ১০০০০০ গুলো স্বপ্ন দেখে থাকতে পারেন যেটি এক রাতে ২৪ টিরও বেশি হতে পারে। প্যারিসে অবস্থিত ইউনিভার্সিটি পিয়েরে-এট-মারিয়ে-কিউরিয়ে এর স্নায়ুবিজ্ঞানের একজন অধ্যাপক ও নিদ্রা বিশেষজ্ঞ ড. ইসাবেলে আরনুফ বলেন, ‘ কেউ কেউ তার দেখা স্বপ্নের ১/২ টি মনে রাখতে পারেন, কেউ একটিও মনে রাখতে পারেন না।’ মানুষের ঘুমের পর তাদের চিন্তাগুলোর উপরে ব্রেনের আধিপত্যের কারণেই মানুষ স্বপ্ন দেখে বলে তিনি ব্যাখ্যা দিয়েছেন।
২. স্বপ্ন শিখতে সাহায্য করে :
আরনুফ জানিয়েছেন যে মানুষ তার জীবনের জাগতিক ঘটনাগুলোর প্রায় ৮৬ শতাংশ নিয়েই স্বপ্ন দেখে থাকে। সুতরাং আপনি যদি কোনো কোর্স বা পড়াশুনায় মনোযোগ দিয়ে থাকেন তবে তা আপনার স্বপ্নে এসে স্মৃতিতে বাঁধা পড়বে। অর্থাৎ আপনি ঐ কোর্স বা বিষয়টি নিয়েই স্বপ্ন দেখবেন এবং মনে রাখবেন। এক্ষেত্রে আপনি যদি ৯০ মিনিটের একটি কোর্স করেন তবে তার গুরুত্বপূর্ণ অংশগুলো অবশ্যই আপনার স্বপ্নে এসে ধরা পড়বে।
৩. দুঃস্বপ্ন হতে পারে মঙ্গলকর :
‘চেতনা ও বোধশক্তি’ নামক একটি প্রকাশনায় প্রকাশিত আরনুফের একটি গবেষণায় উঠে আসে যে, দুঃস্বপ্ন মানুষের জন্য বেশ শুভকর হতে পারে। কেননা যেমন ধরুন একজন তার ভবিতব্য পরীক্ষা বা ইন্টারভিউয়ের জন্য খুব দুশ্চিন্তায় থাকলে সেটি তার স্বপ্নে দুঃস্বপ্ন হয়ে ধরা দেবে। যার ফলে তার চেষ্টা আরও অনেক বেশি হবে। ফলত তার ইন্টারভিউ বা পরীক্ষাটি অনেক ভালো হবে। সুতরাং দুঃস্বপ্ন মানুষের জন্য মঙ্গলকরও হতে পারে।
৪. তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়েও স্বপ্ন দেখা যায় :
আমরা হয়ত শুনে থাকব যে শুধুমাত্র মানুষ যখন বিভোর ঘুমে আচ্ছন্ন থাকে কেবল তখনই স্বপ্ন দেখে। কিন্তু আরনুফের গবেষণায় দেখা যায় যে, মানুষ হালকা তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়েও স্বপ্ন দেখতে পারে। তবে এটি তখনই সম্ভব যখন মানুষের ব্রেনটি অনেক বেশি ক্লান্ত থাকে।
৫. নারীদেরও স্বপ্নদোষ হতে পারে :
শুধু যে পুরুষরাই স্বপ্নদোষে আক্রান্ত হয়ে থাকেন তাই না নারীরাও এই স্বপ্নদোষে আক্রান্ত হতে পারেন। মন্ট্রেল বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল বিশেষজ্ঞ এই বিষয়ে গবেষণা করে বলেন, পুরুষদের মতই স্বপ্নে নারীদের দেহের অর্গানগুলো কাজ করে এবং তারা স্বপ্নদোষে আক্রান্ত হয়ে পড়ে।
৬. আমরা সর্বোচ্চ ৩ টি স্বপ্ন মনে রাখতে পারি :
অনেকের ধারণা মানুষ খুব বেশি হলে একটা স্বপ্ন দেখে। অথবা অনেকে বলেন যে একটি ঘটনার মাঝে আরেকটি ঘটনা ঠিক কীভাবে এলো বুঝতে পারছি না। সে আসলে অনেকগুলো স্বপ্নই দেখেছে কিন্তু তার মাঝে মনে রাখতে পারে সর্বোচ্চ ৩টি। এর চেয়ে বেশি স্বপ্ন তার একেবারেই মনে থাকে না।
৭. হাঁটলে স্বপ্ন মনে হওয়ার সম্ভাবনা থাকে :
ঘুম থেকে ওঠার পরপরই স্বপ্ন খুব কদাচিৎই মনে পড়ে। তবে আরনুফ বলেন, ঘুম থেকে ওঠার পরে হালকা হাঁটাহাঁটি করলে স্বপ্ন মনে পড়ার একটা সম্ভাবনা থাকে। কেননা তখন ব্রেনটি আস্তে আস্তে স্থির হয় এবং স্মৃতি স্মরণে সহায়তা করে।
৮. স্বপ্ন ধারাবাহিকভাবে লম্বা হতে পারে :
অনেকেই ধারাবাহিক স্বপ্ন দেখে থাকেন। অর্থাৎ একটি একটি ঘটনার কিছু অংশ, আরেকদিন বাঁকি অংশ এভাবে স্বপ্ন দেখে থাকেন। এই ধরনের স্বপ্নকে আরনুফ ব্যাখ্যা করেন ‘এপিক ড্রিমিং বা মহাকাব্যিক স্বপ্’ নামে।
তথ্যসূত্র : womenshealthmag.com