স্মার্টভাবে কথা বলার উপায় কী?
স্মার্টভাবে কথা বলার প্রথম শর্ত কথার গ্রহণযোগ্যতা থাকতে হবে।
এখন স্মার্ট কথা বলা বলতে আমি কি বুঝি?
সামনের জন আমার কথার সাথে মতপোষণ করুক কিংবা না করুক তিনি যদি আগ্রহ,গুরুত্ব ও সম্মানের সাথে আমার কথাকে শোনেন এবং বোঝার চেষ্টা করেন তবেই সেটা কথা বলার স্মার্ট বা স্টান্ডারড ধরণ।
কিভাবে কথা বললে তা স্মার্ট শোনাবে?
১. কথা টু দ্যা পয়েন্ট পয়েন্ট হতে হবে। অপ্রয়োজনীয় নাটকীয়তা এড়িয়ে সরাসরি যেটা বলার সেটা বলতে হবে। কিছু মানুষ অযথা কথা পেঁচানোকে আর্ট মনে করে কিন্তু এটা আসলে আন্সমার্টনেস।
২. শ্রোতার প্রতি সম্মান রেখে কথা বলতে হবে। আমাকে যদি কেউ অসম্মান করে তাহলে সময় খরচ করে তার কথা কেন শুনবো? বিনয়ের সাথে কথা বলতে হবে। শ্রোতাকে কোন খারাপ সম্বোধন বা বাজে ইংগিত করা যাবে না সে যতই আর্থিক, সামাজিক, বংশগত কিংবা শিক্ষাগত দিক থেকে পিছিয়ে থাকুক।
৩. কথার মধ্যে শো-অফ করা যাবে না, হ্যাডম দেখানো যাবে না ৷ শো-অফ করা আসলে অন্যদেরকে অসম্মান করার নামান্তর। মানুষ শো-অফ এমন জিনিস নিয়েই করে যা তার কাছে আছে কিন্তু অন্যদের কাছে নাই বা তার কাছে যেটা আছে সেটা অন্যদের চেয়ে ভালো/উন্নত। এখন শো-অফ টাইপের কথা শুনলে শ্রোতা মনে অভাববোধ থেকে দুঃখ পাবে বা বক্তার শো অফ করে বড় হবার টেন্ডেন্সি ধরে ফেলে তাকে বোকা ভেবে বিরক্ত হবে। বক্তার কথা শোনার আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে।
৪. পরনিন্দা/পরচর্চা/কূটনামী করা যাবে না। আপনি অন্যের অনুপস্থিতিতে কার ও নামে খারাপ কথা বললে বা দুইজন মানুষের মধ্যে ক্লিক বাঁধাইলে সাময়িক এটেনশন বা মজা পাবেন। কিন্তু এতে আপনার ইমেজ নষ্ট হবে। শ্রোতা ভাববে তার অনুপস্থিতিতে আপনি তাকে নিয়ে ও গসিপ করবেন। আর তাছাড়া ধার্মিক যারা পরচর্চা কে হারাম বলে পরিত্যাগ করে তারা আপনাকে খুবই অপছন্দ করে এবং কিছু ক্ষেত্রে সরাসরি আপনার কথা থামিয়ে দিবে।
৫. কথার মাঝখানে কথা বলবেন না। আপনার কথা থামিয়ে কেউ যদি কথা বলে নিশ্চয়ই আপনার ভালো লাগবে না। আর কথার মাঝখানে কথা বললে কথপোকথন এর ফ্লো নষ্ট হয়, সিনক্রোনাইজেশন এর ব্যাঘাত ঘটে। সামনের জনকে কথা বলার সুযোগ দিতে হবে এবং অনুপ্রাণিত করতে হবে তার অভিজ্ঞতা কিংবা মতামত শোনার ক্ষেত্রে।
৬. পরমতসহিষ্ণু হতে হবে। সামনের জন ভুল কথা বলতেই পারে তাই তাকে অপমান করা যাবে না। সবাই আজকের দিনে আমার সমান জ্ঞান বুদ্ধি রাখে না। কেউ আমার থেকে কম জানে, কেউ বেশী জানে। কিন্তু টেবিল যেকোন সময় ঘুরে যেতে পারে। আজকে যারা আমার চেয়ে কম জানে কালকে তারা আমার চেবুঝয়ে বেশী জ্ঞানী বা বুদ্ধিমান হয়ে যেতে পারে। তাই কাউকে বোকা বা মূর্খ মনে করে অপমান করা যাবে না। আর তার মতামতে বিরক্ত ও হওয়া যাবে না।
৭. নিজেকে ভেতর থেকে স্মার্ট বানানো লাগবে। এটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। পারিপার্শ্বিক অবস্থা, আশেপাশের মানুষ এবং নিজের মতিগতি সময়ের সাথে কিভাবে পরিবর্তিত হয়, এটা নিজেকে সময় নিয়ে পর্যবেক্ষণ ও উপলব্ধি করতে হবে। তাহলে সঠিক সময়ে সঠিক কাজ কোনটা আর সঠিক কথা কোনটা সেটা নিজে থেকেই বুঝ চলে আসবে।