আমার বিবাহিতা ভাগ্নির সাথে বউয়ের বড় ভাই…
আমারা তিন ভাই এক বোন।আমি সবার ছোট। বড় দুই ভাই প্রেম করে বিয়ে করে আলাদা হয়ে গেছে।বোনেরও বিয়ে হয়ে গেছে আমার ৫ মাসের সময়। ২০০৯ সালে আমি এস এস সি পাশ করে ডিপ্লোমাতে ভর্তি হই,বাবা সে বছর অনেক অসুস্থ হয়ে যায়।বাবা মা বড় দুই ভাইয়ের বিয়ের জন্য অনেক কষ্ট পায়।বাবার অনেক বয়স হয়ে গেছে ৮২ বছরের মাও অসুস্থ ।বাবা মা চায় আমকে বিয়ে করিয়ে বউ এর সেবা যত্ন পেতে।আমাকে সবাই বুঝিয়ে শুনিয়ে রাজি করায়। মেয়ে আমার চাচাত বোন।
আমার বউ তখন পড়ত অষ্টম শ্রেণীতে আর আমি ডিপ্লোমা ২য় সেমিস্টার এ। এক বছর আমরা ভালভাবেই সংসার করলাম। ২য় বছরে আমার বিবাহিত ভাগ্নির সাথে আমার বউয়ের বড় ভাই অর্থাৎ আমার চাচাত ভাই পরকীয়া প্রেমে জড়ায়। সেটা নিয়ে আমার বউ এর সাথে অনেক ঝগড়া হয় এবং তার পরিবারের সাথেও।পারিবারিক ভাবেই এই সমস্যাটার সমাধান করা হয়। তারপর মোটামুটি ৫-৬ মাস আর কোনো সমস্যা হয় না। এর পর আবার এই ব্যাপারটা নিয়ে আবারও সমস্যা হয়, সেবারও পারিবারিক ভাবে সমাধান হয়।তারপর আমারা সুখেই সংসার করছিলাম।আমাদের একটা মেয়েও হয়। মেয়ের বয়স সাতদিন এর সময় অনুষ্ঠান হয়। অনুষ্ঠানে কিছু সমস্যা হয়। তারপর ৪০ দিন পর আমার বাবা আমার মেয়ে ও বউকে আনতে যায় ।কিন্তু সেখানে অনুষ্ঠান নিয়ে কথা কাটাকাটি হয় এবং আমার বউ আসে না। সে শোকে আমার বাবার স্ট্রোক হয়। আমিও আর আনতে চাইনি।
তারপর ৬মাস পর ওরা আমাদের আত্মীয় স্বজন ধরে বুঝিয়ে আমাদের বাড়িতে দিয়ে যায়।এরপর দেড়বছর আমরা খুব শান্তিতেই সংসার করি।এর দেড় বছরের মধ্যে আমার বউকে বাবার বাড়িতে যেতে দেইনি (আমাদের কাছ থেকে শর্ত ছিল ও আমি যত দিন চাইব না,তত দিন ওদের বাড়িতে যেতে পারবেনা)।তারপর আমার বাবা অনেক অসুস্থ হয়ে গত ৩০ সেপ্টেম্বর মারা যান। এরপর আমার মনটা কিছুটা নরম হয়, আমি ওকে নিয়ে ওদের বাড়িতে ওর নানিকে দেখতে যাই এবং দেখে ওইদিনই চলে আসি।তারপর থেকে দেখি ও আমার সাথে কিছুটা খারাপ ব্যবহার করতে শুরু করে অযথা।আমি ভাবলাম ওর এখানে থাকতে থাকতে এক ঘেয়েমি লেগে গেছে,ও যদি এক সপ্তাহের জন্য ওর বাবার বাড়ি থেকে ঘুরে আসে তাহলে হয়ত ওর মনটা ফ্রেশ লাগবে।
যদিও আমার বাবা মারা যাওয়ার জন্য এবং সম্পত্তি নিয়ে এবং বাবার কিছু দেনা নিয়ে আমি মানুষিকভাবে খুবই বিপর্যস্ত ছিলাম।কথা ছিল ও সেখানে এক সপ্তাহ থাকবে তারপর আমি গিয়ে নিয়ে আসব।কিন্তু আমি এক সপ্তাহ পর ফোন দিলে ও বলে “এতদিন পর আসছি মাত্র এক সপ্তাহ থাকার জন্য,আমি এক মাস থাকব।” আমি আর ওর সাথে কথা না বলে ওর বাবার সাথে কথা বলি। ওর বাবা আমার কাছ থেকে আরও ১০ দিন সময় নিয়ে বলে ওর ভাই গিয়ে দিয়ে আসবে।এর মাঝখানে ওর সাথে আমার রাগারাগি হয় আমার যাওয়া নিয়ে।“ও বলে তুমি আসবে না,আমি বলি না এখন যেতে পারবনা,ও বলে তুমি না আসলে আমি যাব না,আমি বলি ঠিক আছে আইস না।ও বলে তাহলে আমি আর কোনদিনও আসব না।আমি বলি তাহলে তোমাকে পার্মানেন্ট থাকার ব্যবস্থা করে দেই। কাগজ পাঠিয়ে দেই।তুমি যদি রবিবার (ওর বাবার দেওয়া আসার তারিখ) এর মধ্যে না আস তাহলে কাগজ পাথিয়ে দিব।”
এর পর থেকে আমাদের যোগাযোগ বন্ধ ও ফোন ধরেনা।আমি রবিবার দিন সকালে ফোন দেই ওর বড় ভাই ধরে,আমি জিজ্ঞেস করি আজকে আসবেন না আপনারা উনি বলে কোথায় আসব, আমি কেন আজকে না আপনার বোনকে নিয়ে আসার কথা,উনি বলে না ও যাবে না কাগজ পাঠিয়ে দেন।এরপর আমি আর কিছু বলি না ফোন রেখে দেই। ও আমার আত্মীয় স্বজন এর কাছে বিচার দিয়েছে আমি ওকে আর রাখব না আর আনব না এজন্য এমন করেছি।আসলে কিন্তু আমি রাগের মাথায় বলেছি কিন্তু ও কিছুতেই বুঝতে চাইছে না। আমি অনেক চেস্টা করছি ওর সাথে যোগাযোগ করার জন্য কিন্তু করতে পারছিনা। মানছি আমারি দোষ,আমাদের একটা মেয়ে আছে।
আমি চাই না সম্পর্কটা শেষ হয়ে যাক,একটা ভুলের জন্য আমাদের সন্তান কষ্ট পাক,ও হয়তো আসতে চাচ্ছে কিন্তু ওর মা বাবা ভাইয়ের জন্য আসতে পারছে না বা দিচ্ছে না।আমি খুবই ভেংগে পরেছি। বাবা মারা গিয়েছে কিছুদিন হয়েছে,তারপর দেনা নিয়ে এত চিন্তা আর ভাল লাগছে না।ওর তো এই সময় আমার পাশে থাকা উচিৎ ছিল তাই না বলেন। আমাদের বিয়ের কাবিন হয় নি।এখন ও যদি আর না আসে তাহলে আইনি প্রক্রিয়ায় কীভাবে ওকে জানাতে পারি এবং অন্য পথ আছে কিনা দয়া করে বলবেন?
সবকিছু নিয়েই আপনি অতিরিক্ত বাড়াবাড়ি করে ফেলেছেন। এত বাড়াবাড়ি সম্পর্কে করা ঠিক না। আপনার মনে হয়েছে আপনারা সুখে আছেন, কিন্তু সত্য এটাই যে নিশ্চয়ই আপনার বউ সুখে ছিলেন না। তাই সুযোগ পাওয়া মাত্রই তিনি বাবার বাড়িতে চলে গিয়েছে। বউ তো ঘরের গরু না যে খুঁটির সাথে বেঁধে রাখবেন। কিন্তু আপনি ও আপনার পরিবার ঠিক সেটাই করেছে। ক্লাস এইটের একটা বাচ্চা মেয়েকে বাল্য বিবাহ করেছে, বিয়ের কোন কাবিন হয়নি, তাও সংসার করছে আর বাচ্চাও জন্ম দিয়ে ফেলেছেন। আইনের চোখে তো এই বিয়ে অবৈধ! উল্টো আপনি যদি আইনি ঝামেলা করতে চান, আর মেয়েটি যদি নাবালিকা ধর্ষণের মামলা ঠুকে দেয় আপনার নামে- কী করবেন চিন্তা করেছেন?
দেখুন, কোন মেয়ের পরিবারি ডিভোর্স চায় না। কিন্তু যেহেতু মেয়েটির পরিবার চাইছে, তার মানে নিশ্চয়ই আপনার মাঝে এমন কিছু আছে যেটা তাঁরা মেনে নিতে পারছে না। আর খুব সম্ভবত নেবেও না। আমার মনেও হচ্ছে না যে আপনার স্ত্রী আপনাকে ভালোবাসে বা আপনার সাথে থাকতে চায়। একজন নারী যদি সংসারে সুখী নই বা মতের অমিল দেখিয়ে ডিভোর্স দিতে চায়, তিনি সহজেই ডিভোর্স দিতে পারেন। উল্টো নারী নির্যাতন মামলা করলে আপনি আরও বড় সমস্যায়। তাছাড়া বিয়ের যেহেতু কোন কাবিন নেই, আইনি পদক্ষেপ আপনি নিতেও পারবেন না।
আপনার কাছে একটাই উপায়, সমঝোতার মাধ্যমে মিলমিশের চেষ্টা করা। তবে হ্যাঁ ভাই, বউকে মানুষের মত ট্রিট করবেন। গোয়ালের গরু ভাবলে কোন মেয়েই থাকবে না।