আমি কিভাবে চালাক হব?
বিভিন্ন মনোবিজ্ঞানী বিভিন্নভাবে বুদ্ধির সংজ্ঞা দিয়েছেন মনোবিজ্ঞানী ক্যাটেল বলেন – “Intelligence is what intelligence does.” অর্থাৎ বুদ্ধি যে কাজ করে তার মধ্যেই বুদ্ধির পরিচয়। ডিয়ারবার্ণ বলেন – “বুদ্ধি হল অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে লাভবান হওয়ার ক্ষমতা।” স্টার্ন বলেন – “বুদ্ধি হল নতুন সমস্যা ও অবস্থার সাথে সংগতি বিধানের সাধারণ মানসিক শক্তি।”যে যত তাড়াতাড়ি শিখতে পারে সে ততবেশি বুদ্ধিমান। প্রকৃতি পরিবেশের সাথে খাপখাইয়ে চলার জন্য, আমাদের জীবনে সমস্ত রকম ক্রিয়াকর্ম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য এবং সমস্ত সমস্যা সমাধান করে জীবনকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য বুদ্ধি আমাদের বড় হাতিয়ার। এটাতো গেলো বুদ্ধির সংজ্ঞা বিভিন্ন মনোবিজ্ঞানীর মতে। চালাক হতে গেলে বুদ্ধির প্রয়োজন তাই বুদ্ধির সংজ্ঞা জেনে নিলাম।ো কালিদাস নিজে যেই ডালে বসেছিল সেই ডালটিই কাটতে বসেছিল, রবীন্দ্রনাথের পড়ালেখার ছিরিতো আমরা জানি, আইনসটাইন যে একটা সময়ে অংকে কাঁচা ছিল তাওতো আমরা জানি। কাজী নজরুলতো স্কুলের গন্ডিই পেরুননি। তারমানে কি এদের সবার বুদ্ধির অভাব ছিল? অভাব যে ছিলোনা তা তো আমরা সবাই জানি বরং এরা যে কি পরিমাণ বুদ্ধির অধিকারী তা আর বলার অপেক্ষা রাখেনা। তাহলে বুদ্ধি কী? কিসের ভিত্তিতে আমরা বুদ্ধিমান বলবো একজনকে? একজন লেখককেও বুদ্ধিমান বলা চলে আবার একজন বিজ্ঞানীও বুদ্ধিমান হিসেবে পরিচিতি পায়।
এই সমাজে বুদ্ধিমান না হলে চলতে পারবেন না। পদে পদে ঠকতে হবে। এই সমাজ বড় ভয়ঙ্কর। মানুষ গুলো বিরাট বদ। মানুষ আপনার মাথায় কাঠাল ভেঙ্গে খাবে। যদি আপনি সহজ সরল হোন- তাহলে ঘরে-বাইরে, অফিস আদালতে বার বার হোচট খেতে হবে। অদৃশ্য ভাবে লাথথি খেতে হবে। অপমান অপদস্ত হতে হবে। তাই আপনাকে বুদ্ধিমান হতে হবে। হবেই। বুদ্ধিমান হওয়া প্রাকৃতিক ব্যপার নয়। অসহায় মানুষদের ভাবা হয় বোকা। চালাক ভাবা হয় শুধু ধনীদের। টাকার মাপকাঠিতে চালাক চতুরের পরিমাপ হয় এই সমাজে। সমাজের উর্ধতন লোকেরা নিজেদের চালাক চতুর ভাবেন। তারা টাকা দিয়ে সব জয় করে ফেলতে পারেন। মনে রাখবেন, পৃথিবীতে আসলে নতুন বলতে কিছু নেই। যা থাকার, তা আগে থেকেই আছে। তাহলে নতুন নতুন আবিষ্কার গুলো কিভাবে হয়? জিনিয়াসরা পৃথিবীতে থাকা আলাদা আলাদা বিষয় ও বস্তুর মাঝে সম্পর্ক খুঁজে বের করে সেগুলোকে কাজে লাগিয়ে এই আবিষ্কার গুলো করেন।
বুদ্ধিমান বা চালাক চতুর হওয়া জেনেটিক ব্যাপার নয়। চীনারা অনেক বেশী কৌতুহলী আর পরিশ্রমী। তারা বিশ্বে অনেক বেশি চালাকও। কারিগরি জ্ঞান আর দক্ষতা তাদের চালাকীর অন্যতম কারন। নিজের ভুল গুলো শনাক্ত করুন। শুধরে নিন। আপনি যত বেশি মানুষকে কনভেন্স করতে পারবেন, ততই কাজের গতি আপনার স্মুথ হবে। আপনি সহজেই সাফল্যের দেখা পাবেন। সুন্দর একটি ফ্রেমের জন্য যেমন ফটোগ্রাফিতে দারুন দক্ষতা দরকার, তেমনি সুন্দর লাইটের জন্য পদার্থ বিদ্যা জানা জরুরী।
বইপড়া সব মানুষেরই চালাক চতুর হবার প্রথম এবং প্রধান উপায়। বই পড়ার অভ্যাস যাদের আছে তারা অনেক কিছু বোঝেন অন্যদের চাইতে। নিয়মিত দৈনিক পত্রিকা আর ব্লগ পড়ুন। সবসময় নতুন কিছু শেখার জন্য প্রস্তুত থাকুন আর সুযোগ পেলেই শিখে ফেলুন। স্টিফেন হকিং যদি নিজেকে একজন কুস্তীগির হিসেবে তৈরি করতে চাইতো, সেটা বলা যায় একেবারেই একটা ব্যর্থ প্রচেষ্টা হত, আবার জন সিনা যদি বিজ্ঞানী স্টিফেন হকিং হওয়ার চেষ্টা করত, তাহলে আমরা তার মতো একজন বিশ্বসেরা রেসলারকে কখনোই পেতাম না। তাই কার ভেতরে কি লুকিয়ে আছে সেটা খুঁজে বের করাটাই সব থেকে কঠিন কাজ। এই সমাজে পরিবারের বাইরে কেউ কাউকে বিশ্বাস করে না। যখন আপনি মানুষের মনে বিশ্বাস স্থাপন করতে পারবেন, মানুষ আপনাকে বিশ্বাস করতে শুরু করবে।
কিছু জিনিস নিজের মধ্যে আয়ত্ত করে নিতে হবেই। যেমন- গুছিয়ে কথা বলা; উপস্থিত বুদ্ধি; পরিষ্কার পরিছন্ন; যে কোনো পরিস্থিতির সাথে মানিয়ে নেয়া এবং নিজের আশে পাশের সম্পর্কে ভালো জানা শোনা থাকা বুদ্ধিমান হওয়ার কিছু অন্যতম দিক। এই সব দিক গুলো নিয়মিত চর্চার মাধ্যমেই অর্জন করা সম্ভম। আপনি যদি বিশ্বাস করেন যে আপনি জিনিয়াস হতে পারবেন, তবে আপনার মস্তিষ্কও সেভাবেই কাজ করতে শুরু করবে।