কিভাবে একটি সঠিক দাম্পত্য জীবন কাটানো সম্ভব?
কিভাবে একটি সঠিক দাম্পত্য জীবন কাটানো সম্ভব?
রাকিবা জানাচ্ছে:
“আমাদের বিয়ের ৩বছর ১ মাস চলছে। বাচ্চার বয়স ১.৫ বছর।
প্রেমের বিয়ে।
৩ বছর পর ও আমার হাসবেন্ড আমাকে আগের মতো কিনা জানি না, তবে অনেক ভালোবাসে।
কিন্তু আমি এখন এসে তাকে আর চাইলেও ভালবাসতে পারি না।
আমি ওর প্রতি কোনো শারিরীক ও মানসিক টান খুঁজে পাইনা। আমাদের মধ্যে খুব কম বার ই শারিরীক সম্পর্ক হয়।
এই মাসে ১/২ বার। তাও আমার কোনো ইচ্ছে থাকেনা।আমি যতভাবে সম্ভব,এটা এড়িয়ে যাই।
এমনকি আমার কোনো উত্তেজনা ও কাজ করেনা তার জন্য।বরং শারিরীক সম্পর্ক না হলে আমি বাঁচি এই অবস্থা।
শুরুতে এমন ছিলো না।
আসলে দিন দিন মানসিক ডিটাচম্যান্ট হতে হতে মন থেকে উঠে গেছে সে।
আমি ভালোবাসি ঘুরতে,কিন্তু আমি বলার আগে পর্যন্ত সে কখনো নিজ থেকে নিয়ে যেতে চায়না।
বাইরে কোথাও খেতে/ ঘুরতে গেলে সে তার মোবাইল নিয়ে থাকে, আমি একা বসে বসে খাবার গিলতে থাকি,আর চারপাশের হাসিখুশি মানুষ দেখে কষ্ট হতে থাকে।
তাকে কিছু বললে সে এটা মানতে চায় না, আর বাইরে মানুষের সামনেই রিয়েক্ট করে। সে বাচ্চার দোয়াই দেয় যে,তাকে তো সামলানো লাগছে।
তাকে যখন কোনো ট্যুর এর কথা বলি,সে বলে আমি উচ্চবিলাসি, হ্যা টাকা খুব একটা নাই তার,আবার কম ও না।কিন্তু কোথায় যাওয়ার কোনো ইচ্ছা তার মধ্যে নাই।
অফিস থেকে সারাদিনে রাত ৮/৯ টায় আসে।
এসে সে তার মতো।
আমাদের মধ্যে কোনো গল্প গুজব নাই, সে তার মোবাইল/ টিভি নিয়ে।
আমি যাই বলি, সে হুম,হ্যা, অথবা কোনো কথাই তার কানে যায় না। আমার বার বার বলতে হয় “এই শুনছো,যা বলছি শুনছো তো? শুনো না,ইম্পর্ট্যান্ট কথা”.
যদি কখনো বলি তুমি তো কথা শুনো না, সে বলবে,আমার ২ কান খোলা আছে,ঠিক ই সব শুনছি,বলে কি কি বললাম বলবে, আর বলবে, জানোই তো, আমার কাজ শুনা, আমি কথা বেশি বলতে পারি না।
ও কোনো ডিসিশনে আমার মতামত ও নেয় না,আমি খুব প্রয়োজন না হলে ফোন দেইনা।
কিন্তু ফোনটাও ঠিক সময় মতো ধরে না,এটা সত্যি সে ব্যস্ত থাকে।
কিন্তু কতবার বলি যত ব্যাস্তই থাকো ফোনটা ধইরো।
আমাদের মধ্যে কোনো ঝগড়া লাগলে সেটা আর বেড রুমে থাকে না।
ড্রয়িং রুমে চলে যায়।
তার পর তার বাবা মা সে মিলে একা আমার সাথে ঝগড়া চলতে থাকে।
আমি ভালোবাসার পাগল,আমি চাইতাম কেউ আমাকে তার ২৪ ঘন্টার ১ ঘন্টা অন্তত আমাকে দিক, আমাকে & বাচ্চাকে নিয়ে সপ্তাহে একটা দিন অন্তত বাইরে ঘুরতে যাক। হউক সেটা ১ কাপ চা খাইতেই না হয় গেলাম। আমরা বছরে অন্তত ১/২ টা ট্যুরে যাই।
আমি যখন কোনো কথা বলি সে মনযোগ দিয়ে শুনুক।
কিন্তু না আমাদের সম্পর্কটা এমন না, সে আমার সাথে থেকেও পাশে নেই, আমি খুব একা ফিল করি প্রতিনিয়ত।
আমার কথা বলার ও কেউ নাই,শোনার ও কেউ নাই।
আমি একটা স্কুল এ জব করি, ঐটাই আমার একমাত্র শান্তির জায়গা। মাঝে মাঝে একাকিত্ব ও ইচ্ছার জন্য আমি একা একা কফিশপে বসি, একা একা হাটি, আর পাশে একটা মানুষকে খুব মিস করি।
আজকাল মনে হয় আমার ঘরে ফেরা শুধু এই বাচ্চাটার জন্য।
আমার স্বামী মানুষটা স্বভাবতই এমন & কিছুটা টক্সিক, সোজা কথা সোজা ভাবে নেয় না, সে যেটা বলছে ঐটাই রাইট, আমি কত টুকু জানি! তার সুপিরিয়রিটি(Superiority) কমপ্লেক্স।
তবে তার চরিত্র ভালো, মেয়ে ঘটিত কোনো সমস্যা নাই,পূর্বে ও ছিলো না,একটাই রিলেশনসিপ ছিলো, আমদের পরিচয়ের ২ বছর আগেই সব শেষ। বিয়ের পরে কোনো কিছু প্রশ্নই আসেনা, সে অনেক লয়াল।
তার দুনিয়া জুড়ে আমরাই শুধু।
কিন্তু ঐযে দিন দিন মানসিকভাবে আমি দূরে সরে গেছি।
তাকে বলতেও পারছিনা।
সে স্বভাবতই এমন।
ভুল টা আমার ই
এই স্বভাবের মানুষ আমার জন্য না।
আমার বিয়ের আগে আরেকটু সময় হয়তো নেওয়া দরকার ছিলো।
আমি আসলে তিলে তিলে শেষ হয়ে যাচ্ছি। কি করবো জানি না।”
এখন নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন সুন্দর দাম্পত্য কাটানোর জন্য বিপরীত মানুষটির মন মেজাজ রুচি এবং চাহিদা সম্বন্ধে জানতে হবে এবং সে মোতাবেক ব্যবস্থা নিতে হবে।