কীভাবে যেকোনো কিছুতে সহজে মনোযোগী হওয়া যায়?
মনোযোগ নিয়ে সকল সমস্যার সমাধান দেয়া হবে এই উত্তরে। এই উত্তর পড়ার পরও যদি আপনার মনোযোগে সমস্যা হয় তাহলে আপনাকে দিয়ে জীবনে কিচ্ছু হবে না ভাই।
- অস্থিরতা থেকে মুক্তি।
প্রথমে যে যেকারণে আপনার মনোযোগে ব্যাঘাত ঘটে সে কারণগুলো চিহ্নিত করতে হবে। তারপর সেগুলো জীবন থেকে সরিয়ে ফেলতে হবে।
এজন্য আপনাকে যা করতে হবে-
- এক্সারসাইজ করতে হবে।
- ফোনের সকল প্রকার নোটিফিকেশন অফ করতে হবে।
- রুমের দরজা অফ করে কাজ করতে হবে এবং অন্য কোনো গ্রহে আছেন এমন ভাব করতে হবে। সে গ্রহে শুধু আপনি আপনার কাজ করে যাবেন।
- মাঝে মাঝে কফি পান করা লাগবে।
তবে দিনে তিন কাপের বেশি কফি পান করা যাবে না। আমার ক্লান্তি না আসার পিছনে মূল কারণ কফি। কফির জন্য আমি এত কাজ করতে পারি। কান্তি আসে না আমার। তবে বিকাল ৩ টার পর থেকে কফি থেকে বিরত থাকতে হবে।
আমি মূলত সকালে ঘুম থেকে ওঠে, আবার যখন ক্লান্তি আসে তখন কফি পান করি। দিনে ৩ বারের বেশি না। আর ১২ টার পর থেকে কফি থেকে বিরত থাকি।
- পোমোডোরো কৌশল অনুশীলন করতে হবে।
পোমোডোরো পদ্ধতি আপনাকে যেকোনো কাজে তীব্র মনোযোগী হতে সাহায্য করবে।
কীভাবে এটা কাজ করে-
—- ২৫ মিনিটের জন্য আপনার টাইমার সেট করুন পোমোডোরো অ্যাপে এবং কাজ শুরু করুন। ২৫ মিনিট একধারে কাজ করার পর কাজের মাঝে ৫ মিনিটের বিরতি নিন।
——- তারপর আবার টাইমার সেট করুন এবং কাজে ফিরে যান।
পোমোডোরো অ্যাপ টা প্লে স্টোর থেকে ইনস্টল দিলে পোমোডোরো অ্যাপ ই আপনাকে বলে দিবে কী করতে হবে।
টাইম ম্যানেজমেন্ট এর ১০ টা রুল নিয়ে কোরা ইংরেজি তে আমার একটা উত্তর আছে সেটা পড়ে নিতে পারেন।
- স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস।
আপনার মস্তিষ্কের মনোযোগ বৃদ্ধি করতে নিয়মিত ও পরিমাণ মতো স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের অভ্যাস করতে হবে।
সবুজ শাক সবজি, আখরোট, পালং শাক, ব্রকলি, স্ট্রবেরি, চর্বিযুক্ত মাছ বেশি বেশি খেতে হবে। তবে পোলাও, বিরিয়ানি, সকল প্রকার ফাস্টফুড জাতীর খাবার, কোল্ড ড্রিংকস জীবন থেকে যত তাড়াতাড়ি বাদ দিতে পারবেন ততই ভালো।
নিয়মিত তিন বেলা খাবার যাতে মিস না হয় সেদিকে খেয়াল রাখবেন। সবার আগে খাবার তারপর দুনিয়া। পেট ঠান্ডা তো দুনিয়া ঠান্ডা।
বস্তিগুলোতে দেখবেন শুধু পেট গরম থাকার কারণে পরিবারের মধ্যে ঝগড়া হয়। আপনারা তো ৩ বেলা খাবারের সুযোগ পেয়েও ঠিকমতো খাবার খান না। আবার মনোযোগের দোষ দেন। আফসোস।
- পর্যাপ্ত ঘুম।
আমাদের জীবনে সর্বপ্রথম যে অভ্যাস টা ঠিক করা প্রয়োজন সেটা হল ঘুম। প্রতিদিন নিয়ম করে ৭ ঘন্টা ঘুমাতে হবে। তবে ৮ ঘন্টার বেশি ঘুমানো যাবে না।
ঘুমানোর সর্বত্তোম সময় রাত ৯-৪ । তবে ডিজিটাল যুগে যেখানে আমরা রাতের খাবার খাই ১১ টায় সেখানে তো ৯ টায় ঘুমানো সম্ভন না।
এজন্য আমার ডিজিটাল যুগ ভাল্লাগে না। বনের মাঝে চলে যেতে মন চাই। যেখানে সূর্য অস্ত যাওয়ার সাথে সাথে শরীরে ক্লান্তি চলে আসবে এবং রাত ৯ টায় ঘুমের ঘোরে স্বপ্নের দেশে চলে যাব। তারপর ভোর ৪ টায় ওঠে আবার বই পড়া, কোর্স করা, লেখালেখি করা শুরু করব। আহা শান্তির জীবন।
ঘুমের জন্য দায়ী হরমোন মেলাটোনিন নিঃসরণ হওয়া শুরু হয় রাত ৯ টা থেকে। রাত ১২ টায় মেলাটোটিন নিঃসরণের মাত্রা সর্বোচ্চ অবস্থায় থেকে এবং ১২ টার পর থেকে মেলাটোনিন নিঃসরণের মাত্রা হ্রাস পেতে থাকে।
তাই আমাদের অবশ্যই রাত ১১ টার মধ্যে ঘুমিয়ে যেতে হবে যাতে সকাল সকাল দিন শুরু করে আমাদের সকল কাজ ঠিকমতো শেষ করতে পারি। আর সকালে আমাদের যেকোনো কাজে সর্বোচ্চ মনোযোগ থাকে। চারপাশের নিরবরতা, নিস্তব্ধতা আমাদের প্রোডাক্টিভিটি বৃদ্ধি করে।
ঘুম নিয়ে এত কিছু শুধু শুধু লিখলাম। মূল কথা হচ্ছে। প্রতিদিন ৭ ঘন্টা ঘুমাতে হবে। ঘুমানোর ২ ঘন্টা আগে রাতের খাবার খেতে হবে এবং ঘুমানোর ১ ঘন্টা আগে সকল প্রকার ডিজিটাল স্কিন থেকে দূরে থাকতে হবে।
শুধু ঘুম নিয়ে আমার অনেক উত্তর লেখা আছে কোরাতে। প্রত্যেকটা উত্তরে ঘুম নিয়ে বিভিন্ন তথ্য জানতে পারবেন।
- স্মার্ট লক্ষ্য নির্ধারণ করতে হবে।
যেকোনো কাজ শুরু করার আগে কাজকে ছোট ছোট ভাগে বিভক্ত করতে হবে। তারপর কাজ কখন করবেন, কত সময় ধরে করবেন, তা বিস্তারিতভাবে ডাইরিতে লিখতে হবে। আবার বলছি, লিখতে হবে। মাথায় রাখলে চলবে না। তা নাহলে আপনার কাজকে বাস্তে রূপ দিতে পারবেন না।
আমি আমার সবকিছু ডাইরিতে লিখে রাখি। একটা কোর্স করার সময় কোর্সকে ৮ টা ভাগে ভাগ করি। তারপর প্রতিদিন ১ ঘন্টা সময় দিয়ে ৮ দিনে যেকোনো কোর্স শেষ করি। আর কোর্স করার সময় নোট নিই ডাইরিতে।
এজন্য যেকোনো কাজকে ছোট ছোট ভাগে ভাগ করে নিতে হবে। কখন করবেন, কতখন সময় ধরে করবেন, কতদিনের মধ্যে শেষ করবেন সেগুলো ডাইরিতে লিখে রাখতে হবে। এবং সে অনুযায়ী কাজ করে যেতে হবে। তবেই আপনি আপনার কাজ শেষ করতে পারবেন। আর যেকোনো কিছু শেষ করার পর নিজেকে পুরষ্কৃত করতে হবে। যেমন যেকোনো কাজ শেষ করার পর আমি নেটফ্লিক্সে মুভি/টিভি শো দেখার মাধ্যমে নিজেকে পুরষ্কৃত করি।
- মেডিটেশন।
মনোযোগ বাড়ানোর জন্য সবচেয়ে দামী ঔষধ হচ্ছে মেডিটেশন। যেটা জন্য কোনো টাকা লাগে না। কোটি টাকার ঔষধ।
বিশ্বাস করেন আমার ভাই/বোনেরা নিয়মিত ৫ মিনিট মেডিটেশন চর্চা করলে মনোযোগ বাবা আপনার মুরিদ হয়ে যাবে। তাই মেডিটেশন করুন নিয়মিত।