কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যার সমাধান কী?
কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যার সমাধান কী?
কোষ্ঠকাঠিন্য একটি মারাত্মক অস্বস্তিকর শারীরিক সমস্যা, যা সঠিক চিকিৎসার অভাবে পাইলস এবং কোলন ক্যান্সারের মতো মারাত্মক রোগ দেহে বয়ে নিয়ে আসে। অস্বাস্থ্যকর এবং বাজে খাদ্যাভ্যাস, অপুষ্টিকর খাবার ইত্যাদির কারণে কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো অস্বস্তিকর সমস্যায় পড়ে থাকেন অনেকেই।
কারণ-
অনেকদিনের কোষ্ঠকাঠিন্য বা ক্রনিক কনস্টিপেশনের বেশকিছু কারণ রয়েছে। যেমন-
* খাদ্যাভ্যাসজনিত কারণ : কম আঁশযুক্ত খাবার খেলে অনেক শিশু কোষ্ঠকাঠিন্যে ভুগতে পারে। গরুর দুধ খেলেও অনেক সময় কোষ্ঠকাঠিন্য হয়।
* শারীরিক ত্রুটি : অ্যানোরেকটাল স্টেনোসিস বা মলদ্বার জন্মগতভাবে বন্ধ থাকলে।
* স্নায়ুতন্ত্রের ত্রুটি
* মানসিক প্রতিবন্ধী হলে।
* স্নায়ুর সমস্যা বা সেরেব্রাল পলসি থাকলে।
* জন্মগতভাবে পেটের সামনের মাংস না থাকলে।
* শরীরের শক্তি কমে যাওয়া বা হাইপোটনিয়া হলে।
* হাইপোথাইরয়েডিজম হলে।
* বহুমূত্র রোগ হলে।
* শরীরে ক্যালসিয়াম বেশি হলে।
* রেনাল টিউবুলার অ্যাসিডোসিস হলে।
সব চাইতে ক্ষতিকর দিকটি হলো অনেকেই এই কোষ্ঠকাঠিন্যকে খুব বেশি গুরুত্ব না দিয়ে চুপচাপ বসে থাকেন। এরপর যখন তা মারাত্মক পর্যায়ে চলে যায় তখন ডাক্তারের শরণাপন্ন হন। কিন্তু এটি মোটেও ঠিক কাজ নয়। কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যাকে অবহেলা করবেন না। যদি ডাক্তারের কাছে যেতে না চান তবে ঘরোয়াভাবে এই সমস্যা বাড়তে না দিয়ে সমাধান করে নিন।
কিশমিশ ও গরম দুধ
১০/১২ টি কিশমিশ নিয়ে ভালো করে ধুয়ে বিচি থাকলে তা ছাড়িয়ে নিন। এরপর ১ গ্লাস দুধে কিশমিশ দিয়ে ১ চিমটি দারুচিনিগুঁড়া দিয়ে ভালো মতো ফুটিয়ে নিন। এভাবে টানা তিন দিন দুধ পান করুন। কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা অনেকাংশে দূর হয়ে যাবে।
ত্রিফলা
ত্রিফলা কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় অনেক প্রাচীন কাল থেকেই ব্যবহার হয়ে আসছে। ১ চা চামচ ত্রিফলা পাউডার ১ গ্লাস গরম পানি অথবা গরম দুধে ভালো করে মিশিয়ে নিন। রাতে ঘুমানোর পূর্বে তা নিয়মিত পান করুন। এতে করে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর হবে। বাজারে অনেক হোমিও ঔষধের দোকানে ত্রিফলা পাউডার কিনতে পাওয়া যায়।
ইসবগুল
কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করতে ইসবগুল অনেক কার্যকরী একটি উপাদান। ১ গ্লাস গরম পানিতে ২ টেবিল চামচ ইসবগুল দিয়ে ৫-১০ মিনিট রেখে দিন। যখন ইসবগুল পানি শুষে নিয়ে জেলির মতো আঠালো হবে তখন তা পান করুন। প্রতিদিন ঘুমুতে যাওয়ার পূর্বে পান করুন এই ইসবগুল।
তিলবীজ
তিলবীজ কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে অনেক বেশি সহায়তা করে। তিলবীজ ভেঙ্গে গুঁড়ো করে তা আটা বা ময়দার সাথে মিশিয়ে চাপাতি বা রুটি তৈরি করে খেতে পারেন। এতে করে দেহে ফাইবারের অভাব পূরণ হবে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হবে।
এছাড়া যা যা করবেন :
১. কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার জন্য বেশি করে শাকসবজি, ফলমূল ও আঁশযুক্ত খাবার খেতে হবে
২. বেশি করে পানি খেতে হবে
৩.দুশ্চিন্তা দূর করতে হবে
৪. যারা সারাদিন বসে কাজ করেন তাদের নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে এবং
৫. ইসুফগুলের ভুসি (২ চামুচ ,১ গ্লাস পানি )রাতে ভিজিয়ে রাখুন, সকালে খাবেন।
৬.যেসব রোগের জন্য কোষ্ঠকাঠিন্য হয় তার চিকিৎসা করতে হবে।