জুমুয়া’র সালাহ কিভাবে পরবেন?
আপনি মসজিদে প্রবেশ করে, প্রথমেই দুই রাকাত সালাহ আদায় করবেন। এটা হলো তাহিয়্যাতুল মসজিদের সালাহ। এমনকি খতিব সাহেব যদি খুতবা দিতে থাকেন (আরবীতে ওয়াজিব দুইটা খুতবা / বাংলায় বেদাতী খুতবা, ওয়াজিব দুইটা খুতবার আগে, যেকোনো সময়েই হোক) তবুও আপনি এই দুই রাকাত সালাহ পড়তে পারবেন, কারণ রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর আদেশ সেই রকম।
এর পরে আপনার ইচ্ছা হলে আর খুতবা শুরু না হলে, দুই রাকাত দুই রাকাত রাকাত করে নফল নামায পড়তে পারেন অথবা অন্য যিকির করবেন, কোনো ধরা বাঁধা নিয়ম নেই। খতিব খুতবা দেওয়া শুরু করলে চুপ করে মনোযোগ দিয়ে শুনবেন।জুম্মার ফরয ২ রাকাতের পরে যদি মসজিদে নামায পড়েন তাহলে ৪ রাকাত সুন্নত পড়বেন। আর মসজিদে না পড়লে বাসায় এসে ২ রাকাত নামায পড়া সুন্নত।
আর অনেকে মনে করে খুতবা আরবীতে দিতে হবে। এটা ঠিক নয়, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) তাঁর জাতি যেই ভাষাতেই কথা বলতো সেই ভাষাতেই খুতবা দিতেন – সুতরাং আমাদের দেশে খতিব সাহেবদের উচিত হবে বাংলায় খুতবা দেওয়া। হানাফী মাযহাব অনুযায়ী মাতৃভাষাতেও খুতবা দেওয়া জায়েজ এনিয়ে এই লেখাটা দেখতে পারেনঃ
https://salafibd.wordpress.com/2013/02/24/khutbah/
৩ নাম্বার ভুলঃ খুতবার সময় দান বাক্স চালু করে খুতবা শুনতে বিঘ্ন ঘটানো। মসজিদের টাকা তোলার দরকার আছে – কিন্তু খুতবা শোনা তার থেকেও জরুরী। এটা খুতবা শোনার আদবের পরিপন্থী একটা বিষয়।
৪ নাম্বার ভুলঃ নামাযের পরে সম্মিলিত মুনাযাত করা। জুমুয়ার দিনে রাসুলুল্লাহ (সাঃ) খুতবার মধ্যে দুয়া করতেন আর সবাই মনে মনে আমীন বলে সেই দুয়া শরীক হতেন। কিন্তু রাসুলুল্লাহ (সাঃ) কোনোদিন কোনো নামাযের পরে সম্মিলিতভাবে হাত তুলে মুনাজাত করেছেন – এর কোনো প্রমান নেই।
প্রত্যেক ফরয নামাযের পরে সম্মিলিত দুয়া করা বেদাতঃ
৫ নাম্বার ভুলঃ মানুষ বেশি হওয়ার কারণে কোনো এক ফাঁকে ঢুকে গিয়ে অন্যকে কষ্ট দিয়ে বসা। হাদীসে এটা নিষেধ করতে নিষেধ করা হয়েছে- যেখানে জায়গা পাবেন সেখানে বসবেন। চাপাচাপি করে কাউকে কষ্ট দেওয়া যাবেনা। দরকার হলে নিজে কষ্ট করে ছাদে, রাস্তায় নামায পড়বেন – তবু অন্যকে কষ্ট দিবেন না।
৬ নাম্বার ভুলঃ খুতবার সময় কথা বলা (মুখে বা ইশারায়) – এটা খুবই মারাত্মক একটা বিষয় এমনকি কারো জুমুয়ার নামায বাতিল হয়ে যেতে পারে এই নিকৃষ্ট কাজের জন্য। কেউ যদি আপনার সাথে কথা বলতে চায়, আপনি যদি তাকে বলেন, “চুপ করো” তাহলেও আপনার গুনাহ হবে (সহীহ হাদীসে সেটাই বলা হয়েছে). এবার তাহলে চিন্তা করুন, কেমন আছো, কি খবর? এই ধরণের খাজুইর্যা আলাপ করলে কতটুকু গুনাহ হবে?
আমরা লিখে যাচ্ছি, আপনারা চেষ্টা করবেন – এইগুলো ঠিকমতো করার জন্য। সাধারণ মানুষ যদি কুরান সুন্নাহর দিকে ফিরে যায় – ইমাম সাহেবেরা এমনিতেই ঠিক হয়ে যাবে। মুসল্লিরা যেরকম, আল্লাহ তাদেরকে সেইরকম ইমাম বা নেতা দান করেন। মুসল্লিরা ঠিক হলে ইমাম সাহবেরাও একদিন ঠিক হয়ে যাবেন ইন শা’ আল্লাহ।