নিজের আবেগ-কে কিভাবে কন্ট্রোল করতে পারি?
নিজের আবেগ-কে কিভাবে কন্ট্রোল করতে পারি?
আবেগ আমাদের চিন্তাভাবনার উপর নিয়ন্ত্রণ করে। এভাবে সিদ্ধান্তগুলোকে আবেগ পরিচালনা করে। সেইসাথে বলা হয়, হার্ট ভালো রাখতে মানসিক সুস্থতা ও আবেগের ওপর নিয়ন্ত্রণ থাকা জরুরি। এবার কথা বলবো ছয়টি উপায়ের। যার মাধ্যমে আপনি ইমোশন কন্ট্রোল করে যে কোন কঠিন পরিস্থিতিতে যৌক্তিক সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।
১) তাৎক্ষনিক প্রতিক্রিয়াকে না বলুনঃ
কোন বিষয়ে তাৎক্ষনিক প্রতিক্রিয়া দেখানো চরম ভুল। কারণ তাৎক্ষনিক প্রতিক্রিয়া দেখাতে গেলে ভুল হয়ে যায়। তাই কোন বিষয়ে প্রতিক্রিয়া দেখানোর সময় তাৎক্ষনিক প্রতিক্রিয়া প্রকাশ এড়িয়ে যান। ভুল সিদ্ধান্তের জন্য আপনার অনুশোচনা হতে পারে। এজন্য প্রথমে আপনার আবেগকে যুক্তি দিয়ে খণ্ডন করুন এবং স্থিরতার সাথে সিদ্ধান্ত নিন। এসময় আপনার হার্টকে শান্ত রেখে ‘ইমোশনাল ইন্টেলিজেন্স’ বা ‘আবেগজনিত বুদ্ধিমত্তা’ কাজে লাগান।
২) সৃষ্টিকর্তাকে স্মরণ করুনঃ
যখন আপনার ইমোশন কন্ট্রোল বা আবেগ নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে যাবে। আবেগ খুব বেড়ে যাবে, তখন স্থিরতা আনতে একমনে সৃষ্টিকর্তাকে স্মরণ করুন। চোখ বন্ধ করুন কিছু সময়ের জন্য। এবার আপনি যে ধর্মেরই বিশ্বাসী হন না কেন, তা স্মরণে আনুন। সৃষ্টি কর্তার সাহায্য প্রার্থনা করুন। দেখবেন ধর্মীয় অনুভূতি আপনার শরীর ও মনকে শান্ত করে দিবে। যা আপনাকে যে কোন পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে সাহায্য করবে।
৩) স্বাস্থ্যকর উপায় খুঁজুনঃ
ইমোশোন কন্ট্রোল করার স্বাস্থ্যকর উপায় খুঁজুন। যাতে করে সহজে আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন। আবেগ বা ইমোশন বাড়তে দিবেন না। যখন কোন বিষয়ে অধিক ইমোশন কাজ করবে তখন বিশ্বস্ত কারো সাথে আপনার সমস্যার কথা খুলে বলুন। সেটা সাক্ষাতে বা মুঠফোনেও হতে পারে। তার কাছে বিষয়টি বর্ননা করুন। এবার সে বিষয়ে অন্যের মতামত শুনে নিজের জ্ঞানকে প্রসারিত করে সিদ্ধান্ত নিন।
৪) অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিনঃ
আমাদের জীবনে ভালো বা মন্দ যাই ঘটুক না কেন, তা আমাদের কিছু শিক্ষা দিয়ে যায়। তাই অতীত অভভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিন। অতীতের আবেগের বশে নেয়া সিদ্ধান্ত নেওয়া কতটা ভুল বা ঠিক হয়েছে? নিজেকেই প্রশ্ন করুন, অতীতে ইমোশন কন্ট্রোল করার জন্য আপনি কি কি টেকনিক ব্যবহার করেছেন? কারণ একেক জনের ইমোশন নিবৃত্ত করার পদ্ধতি একেক রকম। যখন আপনি ইমোশনালী বেশি ডিপরেস থাকবেন, তখন নিজেকে বুঝান। খারাপ সময় বেশিক্ষণ স্থায়ী হয় না। তাই এ সময়ে সিদ্ধান্ত নেয়া থেকে বিরত থাকুন। কারণ পজিটিভ ইমোশন আপনার সিদ্ধান্তকে পজিটিভ করে, আর নেগেটিভ ইমোশন সিদ্ধান্তকে নেগেটিভ করে।
৫) চিন্তা পরিবর্তন করুনঃ
আগেই বলেছি নেগেটিভ চিন্তা আপনার ইমোশনের উপর মারাত্মক প্রভাব ফেলে। তাই যেসব বিষয় চিন্তা করলে আপনি বেশি ইমোশনাল হয়ে পড়েন, তা সচেতনভাবে এড়িয়ে চলুন। অনুভাবেও বলা যায়, নেগেটিভ ইমোশন আপনাকে অন্ধ করে রাখে নেগেটিভ চিন্তার প্রতি। ফলে আপনি নেগেটিভাবেই কোন সমস্যা সমাধানে চেষ্টা করেন। তাই যখন আপনার আবেগ নেতিবাচক হিসেবে কাজ করবে, তখন ভিন্ন চিন্তায় নিজেকে ব্যস্ত করে ফেলুন। এতে আপনার নেতিবাচক আবেগ বেশিক্ষণ স্থায়ী হবে না। ধরুণ, আপনার মাথায় কোন বিষয়ে নেতিবাচক চিন্তা এসেছে, তখন ইতিবাচক চিন্তা দিয়ে তা প্রতিস্থাপন করুন।
৬) নিজের ওপর দখল বাড়ানঃ
নিজের আবেগ নিয়ন্ত্রণের অন্যতম উপায় হচ্ছে নিজের উপর দখল থাকা। নিজের উপর দখল না থাকায় আপনার আবেগ অনিয়ন্ত্রিত হয়ে পরে। দেখবেন আপনি যখন রেগে যাচ্ছেন তখন অল্পতেই তুলকালাম শুরু করে দিয়েছেন। কিন্তু যখন নিজের আবেগ নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারছেন, তখন অনেক জটিল বিষয়েও যৌক্তিক সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলছেন সহজভাবে। তাই ইমোশনাল বা আবেগতাড়িত হওয়ার আগে বিষয়টি যুক্তি, প্রজ্ঞা আর অভিজ্ঞতা দিয়ে বিচার করতে হবে