নিজের ব্যক্তিত্ব বিকাশে সহায়ক কিছু বইয়ের নাম বলবেন কি?

    নিজের ব্যক্তিত্ব বিকাশে সহায়ক কিছু বইয়ের নাম বলবেন কি?

    Train Asked on April 8, 2024 in অনুসরণ.
    Add Comment
    1 Answer(s)

      বই আপনাকে কেবল পথ দেখাতে পারে, আপনাকেই সেই পথে চলতে হবে। পড়া সহজ, কিন্তু কঠিন অংশ পরে আসে। কঠিন অংশ হল নিজেকে পরিবর্তন করা।পরিবর্তন কখনোই সহজ নয়। যদি হত, তাহলে সবাই শারীরিকভাবে ফিট হত এবং সকলেই নিজ নিজ ক্ষেত্রে সফল হত। কিন্তু আসলে তা নয়। আমরা হয়ত নিজেদেরকে পরিবর্তন করতে পারিনা। নিজের ব্যক্তিত্ব বিকাশের জন্য নিজেকে পরিবর্তন করতেই হবে। আমি ও আমার ব্যক্তিত্ব উন্নয়নের জন্য চেষ্টা করছি। আমি পদে পদে ভুল করছি এবং শিখছি। নিজের ব্যক্তিত্ব বিকাশে বই শুধুমাত্র পথ দেখাতে পারে বাকিটা আমাদের হাতে।

      আমি কয়েকটি পডকাস্টে শুনেছিলাম ব্যক্তিত্ব উন্নয়নের জন্য non-fiction থেকে ফিকশন বেশি উপকারী। দেখা যায় ফিকশনাল ক্যারেক্টার যদি মনে বসে যায় কেউ যদি তার মতো হওয়ার চেষ্টা করে তাহলে সে দ্রুতই তার লক্ষ্য অর্জন করতে পারে। অন্যদিকে নন ফিকশন অনেকটা দলীয় নেতার ভাষণ এর মত শুধু বলে যায় অনেকেরই অনেক কিছু বুঝে আসেনা। তবে বই অবশ্যই ব্যক্তিত্ব উন্নয়নের জন্য সবচাইতে কার্যকরী হাতিয়ার। আমি আসলে বেশি বই পড়িনি। সব মিলিয়ে হয়তোবা 100 টির মত হবে। তবে দু একটি বইয়ের নাম লিখছি যেগুলো ব্যক্তিত্ব উন্নয়নে কার্যকর হতে পারে।

      ১) দ্য আলকেমিস্ট : গল্পটি এক রাখালের। যে কখনো হার মানে না। যে তার লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য সবকিছু ত্যাগ করতে পার। জীবনে যতই বাধা বিপত্তি আস অভিষ্ঠ লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য সর্বদা নিজেকে প্রস্তুত রাখত আমাদের সান্তিয়াগো। বইটির বিভিন্ন পর্যায়ে অনুপ্রেরণামূলক বিভিন্ন উক্তি পাওয়া যায়। যে কোন মানুষের জীবন পরিবর্তনে এ বইটি বিশেষ ভূমিকা রাখতে সক্ষম। ওম শান্তি ওম’ সিনেমায় শাহরুখ খানের একটি বিখ্যাত ডায়লগ ছিল ” Kehte hain agar kisi cheez ko dil se chaho … to poori kainath use tumse milane ki koshish mein lag jaati hai” এই ডায়লগ টা হয়তোবা এই বই থেকে নেওয়া। ভাষাগত দিক থেকে দ্য আলকেমিস্ট বইটি অনেক সহজ, সাবলীল ও সহজবোধ্য। যারা নিজেকে পরিবর্তন করতে চাই তাদের অবশ্যই বইটি পড়া উচিত।

      ২) The subtle art of not giving a f: যারা সব সময় মনমরা থাকেন। যারা নিজেদের পছন্দ করেন না। যারা ডিপ্রেশনে থাকেন। যারা নিজেদের ক্ষতি নিজেরা করতে চান তাদের জন্য এই বইটা ম্যান্ডেটরি। প্রতিটি অধ্যায় শুরু করেছে গল্প দিয়ে। আর তার উপর ভিত্তি করেই বিভিন্ন যুক্তি তর্ক দিয়ে এগিয়ে গেছে বইটি। মানুষের মনস্তাত্ত্বিক উন্নয়নের জন্য বইটি পড়া উচিত। তবে অনেকেই বইটি পছন্দ করেন না আমি বইটি ব্যক্তিগতভাবে পছন্দ করি কেননা বইটি থেকে আমি অনেক কিছুই নতুন করে বুঝতে শিখেছি। নিজের ব্যক্তিত্ব উন্নয়নে বইটি অনেক বেশী কার্যকর। কারো মুখাপেক্ষী না হওয়ার কারো কথায় দমে না যাওয়া অনেক কিছুই এই বইতে খুব ভালোভাবে বুঝানো হয়েছে।

      ৩) how to win friends and influence people: আমি একজন অসামাজিক ব্যক্তি ছিলাম। এই বইটা আমাকে একটু হলেও মানুষের সাথে মিশতে শিখিয়েছে। বইটি তিরিশটি অধ্যায় 30 টি উপদেশ দিয়ে বিভক্ত প্রতিটি অধ্যায় খুবই গুরুত্বপূর্ণ নিজের যোগাযোগ দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য বইটি অনেক বেশী কার্যকর।

      ৪) The Almanack of Naval Ravikant: A Guide to Wealth and Happiness: এটা একটা খাঁটি সোনা। আপনাকে যদি কখনও self-help এবং ব্যক্তিগত বিকাশের জন্য একটি বই পড়তে হয়, তবে এই বইটি হওয়া উচিত। আমি কয়েক বছর আগে পডকাস্টে নাভাল সম্পর্কে জেনেছিলাম এবং তখন থেকেই টুইটারে তাকে অনুসরণ করছি। টিম ফেরিস, জো রোগানের সাথে তার পডকাস্ট এবং তার নিজস্ব পডকাস্ট জ্ঞানে পরিপূর্ণ ছিল। সকল টুইট ও পডকাস্ট একত্রিত করে এই ব‌ইটি লেখা হয়েছে।এই বইটি কীভাবে সম্পদ, স্বাস্থ্য, সুখ, জ্ঞান তৈরি করতে হয় সে সম্পর্কে মতামত ও নিয়ম লেখা হয়েছে। বইটিতে অনলাইনে ফ্রিতে পাওয়া যায়।

      ৫) আমি একটা বই ধরে ধরে শেষ করি না। আমি একসাথে অনেকগুলো বই পড়ি যেদিন যেটা ভালো লাগে সে দিন সেটা পড়ি। বর্তমানে আমি যেসব বই পড়ছি সেগুলোর মধ্যে tTools of Titan, Atomic habits, Thinking fast and slow, কর্মযোগ ইত্যাদি বইগুলো ব্যক্তিত্ব গঠনে ভূমিকা রাখে। বিশেষ করে এটমিক হ্যাবিট অবশ্যই পড়া উচিত। ভালো অভ্যাস তৈরি ও মন্দ অভ্যাস ত্যাগ করার ব্লুপ্রিন্ট এই বইতে আছ

      ৬) মেডিটেশন – মার্কাস অরেলিয়াস: আমার পড়া অন্যতম শ্রেষ্ঠ বই। বইটা আমি ক’দিন ধরেই পড়ছি, অসাধারণ একটি বই। এই বইয়ের শিক্ষা একটি দর্শন দ্বারা প্রভাবিত। তা হলো স্টোয়িসিজম। ভালো-মন্দ যা ঘটুক সর্বক্ষেত্রে নির্বিকার ও নির্মোহভাবে দায়িত্ব পালন করাই স্টোয়িক দর্শনের মূলকথা। দুই হাজার বছর আগে লেখা একটি গ্রন্থ আপনার জীবনের গতিপথ বদলে দিতে পারে। মার্কাস অরেলিয়াসের প্রতিটি কথা পাঠকের মনের গভীরে গভীরে আঘাত করবে। জীবনের দুঃখ-সুখে আপ্লুত না হয়ে সবকিছুকে সহজ-সরলভাবে নিতে শিখবেন এই ব‌ইতে। আপনার মনোজগতে কিঞ্চিৎ হলেও পরিবর্তন আসবে অবশ্যই। পৃথিবীর প্রতিটি মানুষের এই বইটি পড়া উচিত। লেখক হয়তো বইটি আমাদের মাঝে শেয়ার করতে চাননি কিন্তু আমরা যে বইটি পেয়েছি এটা আমাদের সৌভাগ্য। এই সৌভাগ্যকে কখনো দূরে সরাতে নেই। বইটি নিজে পড়ুন নিজেকে পরিবর্তন করুন, মানুষকে উপহার দিন মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দিন যতদূর সম্ভব হয়।

      Professor Answered on April 8, 2024.
      Add Comment
    • RELATED QUESTIONS

    • POPULAR QUESTIONS

    • LATEST QUESTIONS

    • Your Answer

      By posting your answer, you agree to the privacy policy and terms of service.