মনকে কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হয়?
মনকে কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হয়?
Add Comment
জ্ঞানীগুনী মানুষরা যা বলেন তা হলো মন বলে আসলে নাকি কোনও বস্তু নেই। সবই মস্তিস্কের এবং তার সাথে কিছু হরমোনের ( যেমন ডোপামাইন, সেরোটোনিন, এন্ডোরফিনস, অক্সিটোসিন ইত্যাদি ইত্যাদি ইত্যাদি) কারসাজি। তাই বলে সব ভার হরমোনের ওপর চাপিয়ে আমরা তো নিশ্চিন্ত হয়ে থাকতে পারিনা । মস্তিষ্কই হোক বা মন— নিজেদের নিয়ন্ত্রনে আনাটা খুবই দরকার। এক্ষেত্রে আমি যে পন্থাগুলি অনুসরণ করি সেগুলি হল:—
- সুনির্দিষ্ট কিছু নিয়ম প্রতিনিয়ত মেনে চলা । যেমন রোজ নির্দিষ্ট সময়ে খাবার খাওয়া ও ঘুমানো, খাবার সময় দূরদর্শন না চালানো, সারাদিনে অন্তত একটা সময় বাড়ির সবাই একসাথে খেতে বসা, ন্যুনতম ঘুমের সময় বজায় রাখা । শরীর সুস্থ থাকলে মনও সুস্থ ও নিয়ন্ত্রিত থাকে।
- সারাদিনে বাড়ীর ছোট থেকে বড় সবার সাথে একবার অন্তত যোগযোগ করা, কথা বলা।
- সারাদিনে কিছুটা সময় ( অল্প হলেও ) যোগ বা প্রানায়াম করা। কিছু না হোক চোখ বন্ধ করে কিছুক্ষণ বসে থাকলেও উপকার দেয়। নিজেকে একটু সময় দেওয়া।
- ভাল বই পড়ার অভ্যাস তৈরী করা। প্রতিটি বই থেকে কিছু ভাল শিক্ষা নিজের জীবনে প্রয়োগ করার চেষ্টা অন্তত করা।
- নিজেকে গঠনমূলক কাজে ব্যস্ত রাখা।
- অযথা গুজবে কান না দেওয়া ও গুজব সৃষ্টি না করা।
- পরনিন্দা পরচর্চা করার সময় মাত্রাজ্ঞান রাখা। সম্ভব হলে না করাই কাম্য।
- লোকের কথায় কান না দেওয়া।নিজের ক্ষতি করে অন্যের উপকার করা থেকে নিজেকে বিরত করা।
- পরিবারকে প্রাধান্য দেওয়া।
- “ঘরের খেয়ে বনের মোষ ” না তাড়ানো ।
- নিজেকে ব্যতিক্রমী প্রমানের চেষ্টায় অকারণ কলহ—অশান্তি সৃষ্টি না করা। মুর্খের সাথে তর্ক না করা।
- জীবনের প্রতিটি ধাপে নিজেকে ও পরিবারকে অর্থিকভাবে সুরক্ষিত করা।
- নিজের উপর আস্থা রাখা ও প্রয়োজনে পরিস্থিতি অনুযায়ী নিজেকে বদলানোর মানসিকতা রাখা ।
- আশাবাদী হওয়া এবং নিরাশাবাদীর থেকে দুরত্ব তৈরী করা।
- নিজের মত অন্যের ওপর চাপিয়ে দিয়ে অপরকে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা না করা।
- সংবেদনশীল ব্যাপারে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া না জানানো।ধৈর্যশীল ও সহনশীলতার পরিচয় দেওয়া।
- অসুস্থ ও ক্ষতিকর চিন্তা থেকে নিজেকে দুরে সরিয়ে রাখা।
- নিজে উস্কানিমূলক কাজ না করা এবং অপরের উস্কানিতে সায় জানিয়ে কাজ না করা।
- সঠিক সময়ে সঠিক ভাবে সঠিক মাত্রায় অন্যায়ের প্রতিবাদ করা।
- অন্যের সাথে অকারণ তুলনা করে নিজের পরিবারে অশান্তি সৃষ্টি না করা।
- পুরোনো তিক্ত স্মৃতির কবল থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্ঠা করা। স্মৃতি সততই সুখের হয় না।
- অতিরিক্ত চিন্তা করে সুস্থ মনকে অসুস্থ না করা। নিয়তি নামক বস্তটির অস্তিত্ব স্বীকার করা।
- Social Platform / Virtual world কে জীবনের ধ্যান জ্ঞান বানিয়ে না ফেলা।
- বর্তমানে বাঁচতে শেখা। অতীত বা ভবিষ্যতের কোনও কিছুই আমরা নিয়ন্ত্রিত করতে পারিনা। তাই কি করলে কি হতো সেই ভেবে বা এটা করলে ওটা হবে ভেবে অযথা সময় ও মানসিক শান্তি নষ্ট না করা । বর্তমান সুন্দর ও সুস্থ হলে বাকি কালেও তার প্রভাব থাকতে বাধ্য।
- ক্ষমাশীল হওয়া। ইংরেজিতে একটা প্রবাদ আছে । ” Forgive others, not because they deserve forgiveness, but because you deserve PEACE” । এটা জীবনের আপ্তবাক্য বানিয়ে ফেলা।
সবাই সুখে থাকবেন, ভাল থাকবেন, সুস্থ মন ও স্বাভাবিক চিন্তার অধিকারি হবেন এই আশা রাখি।