স্বামী স্ত্রীর বয়সের পার্থক্য কত হওয়া উচিত?

স্বামী স্ত্রীর বয়সের পার্থক্য কত হওয়া উচিত?
Add Comment
1 Answer(s)

    বিয়ের জন্যে ছেলে-মেয়ের বয়সের পার্থক্য নিয়ে অহেতুক মাথা ঘামানোর কিছু নেই। বিষয়টি আসলে তাদের দুজনের বোঝাপড়ার।

    নবীজী (স) তাঁর নিজের জীবনে বাস্তবায়িত করেই দেখিয়ে দিয়েছেন যে, বিয়ের জন্যে নির্দিষ্ট কোনো বয়সের পার্থক্য থাকার প্রয়োজন নেই। যেমন, তাঁর ২৫ বছর বয়সে ৪০ বছর বয়সী মা খাদীজাকে বিয়ে করেছেন এবং সুখী দম্পতি হয়েছেন। আবার মা খাদীজার মৃত্যুর পর মা আয়েশার মতো কিশোরীও হাসিমুখে তাঁকে স্বামী হিসেবে গ্রহণ করেছেন।

    তবে যুগ তো পাল্টেছে। তাই আগে স্বামী স্ত্রীর মাঝে বয়সের তারতম্য বেশি হলে যে সমস্যাগুলো হত না এখন তার চেয়ে অনেক বেশি সমস্যা তৈরি হচ্ছে। আসুন জেনে নিই স্বামী স্ত্রীর মাঝে বয়সের তারতম্য বেশি হলে যে ধরনের সমস্যা হতে পারে।

    আমাদের সমাজে এটা খুব সাধারণ একটা ব্যাপার যে স্ত্রীর তুলনায় স্বামীর বয়স বেশী হতেই হবে। শুধু বেশী নয়, অনেকটাই বেশী। বিশেষ করে পারিবারিক ভাবে আয়োজিত বিয়ে গুলোতে বয়সের এই পার্থক্য বেশী পরিলক্ষিত হয়। ০৮ বছর, ১০ বছর, ১৫ বছরের বয়স পার্থক্য যেন কোনো ব্যাপারই না। আবার অনেক তরুণীই প্রেম করে বিয়ে করেন নিজের চাইতে বয়সে অনেকটা বড় কোনো পুরুষকে। সবমিলিয়ে বিয়ের নেপথ্যের কারণ যাই হোক না কেন, সমস্যা গুলো কিন্তু মোটামুটি এক রকমই থাকে।

    যৌন জীবনে অনাগ্রহ-

    কেউ স্বীকার করুক আর নাই করুক, সুখী দাম্পত্য গড়ার পেছনে সুখী ও স্বাস্থ্যকর যৌন জীবনের ভূমিকা অস্বীকার করার উপায় নেই। আর এটাও খুব স্বাভাবিক একটা ব্যাপার যে একটা নির্দিষ্ট বয়সের পর মানুষের যৌনাকাঙ্ক্ষা কমে আসে। স্বামী- স্ত্রীর মাঝে বয়স পার্থক্যটা বেশী হলে বিপত্তি ঘটে সেখানেই। দেখা যায় বাড়তি বয়সের কারণে স্বামী হয়তো যৌন জীবনে আগ্রহী নন, কিংবা শারীরিক ভাবে অক্ষম হয়ে পড়েছেন। ফলশ্রুতিতে তিনি হীনমন্যতায় ভোগেন আর নিজেকে গুটিয়ে নিতে থাকেন। স্ত্রী হয়তো ব্যাপারটা ঠিক বুঝে উঠতে পারেন না, কিংবা মেনে নিতে পারেন না। শুরু হয় মতবিরোধ।

    আগ্রহের বিষয়ের পরিবর্তন-

    এটাও খুব স্বাভাবিক যে বয়সের সাথে সাথে মানুষের আগ্রহের জায়গা গুলো বদলে যায়। ৩০ বছর বয়সে যা ভালো লাগে, নিশ্চিত রূপেই ৬০ বছরে সেটা আর ভালো লাগবে না। দাম্পত্যে বয়সের পার্থক্যটা বেশী হলে এই ব্যাপার গুলো নিয়ে মন কষাকষি খুব স্বাভাবিক। এক কালের খুব “থ্রিল” প্রিয় স্বামী পুরুষটিই হয়তো বয়সের কারণে হয়ে পড়েছেন অনেকটাই শান্ত আর গৃহী স্বভাবের। এখন হয়তো বেড়াবার চাইতে টিভি দেখতেই তাঁর বেশী ভালো লাগে, হয়তো ধর্ম কর্মে বেশী মনযোগী হয়ে পড়েছেন, উদ্দামতা আর উচ্ছলতার চাইতে হয়তো শান্ত ভাবে সময় কাটাতেই বেশী ভালবাসেন।

    সন্দেহ প্রবণতা-

    বয়সের পার্থক্য বেশী হলে অনেক স্বামী হয়ে থাকেন ভীষণ সন্দেহ পরায়ণ। তাঁরা সর্বদা ভাবেন যে স্ত্রী বুঝি তাঁর চাইতে তরুণ কারো দিকে মনযোগী হয়ে পড়ছে। বিশেষ করে স্বামীর যখন বয়স ক্রমশ বাড়তে থাকে, কিংবা কোনো কারণে তিনি শারীরিকভাবে অক্ষম হয়ে পড়েছেন- এমন সময়ে সন্দেহ প্রবণতা হয়ে ওঠে আকাশচুম্বী। ফলে যা হবার তাই হয়, কলহ ও মতবিরোধ।

    তরুণ সাজবার চেষ্টা-

    বুড়িয়ে যেতে শুরু করলে অনেক পুরুষকেই দেখা যায় নিজেকে তরুণ সাজাবার একটা ব্যর্থ চেষ্টা শুরু করেন। বিশেষ করে যাদের স্ত্রীর বয়স কম, তাঁরা। ঝলমলে কাপড় পরার চেষ্টা করেন, চুলে কলপ লাগান, এক রকমের তারুণ্য সুলভ চপলতা জোর করে আনার চেষ্টা করে থাকেন আচরণে। আর এই সবই করা হয়ে থাকে স্ত্রীর পাশে নিজেকে মানানসই প্রমাণের এক রকম সূক্ষ্ম প্রয়াস থেকে।

    Professor Answered on July 25, 2015.
    Add Comment
  • RELATED QUESTIONS

  • POPULAR QUESTIONS

  • LATEST QUESTIONS

  • Your Answer

    By posting your answer, you agree to the privacy policy and terms of service.