আপনি কী জেনে অবাক হয়েছেন?
মেয়েরাই ভাবে ছেলেদের জীবন কত সুন্দর!
তারা চাইলেই স্বাধীনভাবে ঘুরতে পারে,
আড্ডা দিতে পারে, রাতবেরাতে বাড়ি
ফিরতে পারে। যা ইচ্ছা তাই করতে পারে।
মেয়েরা চাইলেও তা পারে না। যত নিয়মকানুন
সব মেয়েদের জন্য বাঁধা। আহারে!! আজ সব
মেয়েকে বলতে চাই- স্বাধীনভাবে ঘুরা,
রাতবেরাতে বাড়ি ফেরা কিংবা পাড়ার
দোকানে সিগারেট জ্বালিয়ে ধোঁয়া
ওড়ানোই ছেলেদের জীবন না। ছেলেদের
জীবন মানে অগণিত সংগ্রাম। যে সংগ্রামের
চিহ্ন লেগে থাকে লোকাল বাসের হাতলে।
ছেঁড়া জিন্সের পকেটে। ছেঁড়া জুতোর তলায়।
মেয়েরা জন্মাবার পরেই বাবা মা স্বপ্ন
দেখে ভাল কোন রাজকুমারের হাতে তুলে
দেবে। ছেলেদের বেলায় তা না। ছেলেদের
জন্মাবার পরেই মাথায় বীজ বুনে দেয়া হয়;
প্রতিষ্ঠিত হতে হবে। আদর্শলিপির বই হাতে
দিয়ে আর ফাঁকে বুঝানো হয়, প্রতিষ্ঠিত না
হতে পারলে কপালে সুন্দরী বধু নেই, বাড়ী
নেই, গাড়ী নেই; কিচ্ছু নেই। একটু বড় না হতেই
মেয়েরা সুন্দরী হওয়ার প্রতিযোগীতায় নামে।
স্নো, কিউটিস, মেকআপ বক্স, চুরি, শাড়ী
তাদের নিত্যানন্দ দিনের সঙ্গী হয়। ছেলেদের
বেলায় তা না, সৌন্দর্য ছেলেদের ফ্যাক্ট না।
ছেলেদের সংগ্রাম করতে হয় প্রতিষ্ঠিত
হওয়ার জন্য। দেখতে সালমান খান কিংবা
শাহরুখ খানের মত সুদর্শন ছেলেরাও প্রতিষ্ঠিত
না হতে পেরে অনাদরে পড়ে থাকে জারজ
সন্তানের মত! প্রতিষ্ঠিত না হতে পারলে
ছেলেদের জীবনে প্রেম টেকে না। প্রিয়তমা
থাকে না। পাশের বাড়ির গিতা মিতারাও
পাশ কাটিয়ে যায় অন্য কারো হাত ধরে। এই
যুগের মেমসাহেবরা নিরাপদ আশ্রয় খোঁজে
না, খোঁজে সচ্ছল আশ্রয়। তারা চায় শাড়ী,
গাড়ী, বাড়ী, আর অফিস ফেরৎ স্বামী। এইসব
পূরণ করতেই ছেলেদের সংগ্রাম করতে হয়।
ছেলেদের সংগ্রাম করতে হয় বাবা মার মুখ
উজ্জ্বল করতে। পরিবারের দায়িত্ব নিতে।
পরিবারের সবাইকে খুশি রাখতে। এমনকি
স্ত্রীর একটা জন্মনিয়ন্ত্রণের পিল কেনা
থেকে শুরু করে সন্তানের উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত
সবকিছুর জন্য ছেলেদের সংগ্রাম করতে হয়।
মেয়েরা একে বারেই কিচ্ছু না পারলেও
সমাধান আছে, বিয়ে দিয়ে দেয়া। সেই
বিয়েও আবার এলেবেলে কোন ছেলের সাথে
না। ঘরবাড়ি ভাল আছে, মেয়ে চালাতে
পারবে, সুখে রাখতে পারবে; এরকম কেউ। আর
ছেলেদের কিছু না কিছু করতেই হয়। জীবিকার
জন্য ছুটতে হয় পৃথিবীর একপ্রান্ত থেকে আর
একপ্রান্ত! হতাশাগ্রস্থ, নেশাগ্রস্থ, যে
ছেলেদের নিজেদেরি কোন ঠিক ঠিকানা
নেই; তারাও কাউকে না কাউকে সুখী করার
জন্য সংগ্রাম করে। আর মেয়েদের বেলায়
একদম ফুটপাতের জরিনা বিবি থেকে শুরু করে
ডিসির বেটি প্রিন্সেস ও স্বপ্ন দেখে কোন
না কোন ছেলের উপার্জনে চলার। ছেলেরা
স্বাধীনভাবে চলতে পারে হয়তো, তবে
স্বাধীনভাবে কিছু ভাবতে পারে না। মায়া,
মমতা, পিছুটান, এগুলোই তাদের পরাধীন করে
তোলে। পর্যাবৃত্ত গতির মত বার বার ছুটেও
ফিরে আসতে হয় নিজের দায়িত্ব, কর্তব্যের
কাছে। সবাই বলে মেয়েরা বড়ই অসহায়। আমি
বলি ছেলেরা তার চাইতেও বড় অসহায়।
আজন্মকাল ছেলেদের শুধু ত্যাগই শিকার করতে
হয় অন্য কে সুখী করার জন্য। রাতের পর রাত
ছেলেদের নীরব চোখের অশ্রু