আমার মাথায় অতিরিক্ত খুশকি এখন কি করা?

মাথায় তৈলে ব্যবহার করা যায় না খুশকির জন্য , শ্যামপু করলে চুল উঠে কি করা যায় মাথা ঠিক নাই।

Train Asked on April 1, 2015 in সাধারণ.
Add Comment
1 Answer(s)

    খুশকি একটি অতি পরিচিত চর্মরোগ যা মাথার খুলির ত্বকে হয়। প্রত্যেক মানুষই জীবনের কোন না কোন সময় খুশকিতে আক্রান্ত হয়। যার ফলে অনেকেই এই রোগটিকে খুব হালকাভাবে নেয়, এমনকি এটি যে একটি রোগ এবং এর যথাযথ চিকিৎসা প্রয়োজন সে সম্বন্ধে সচেতনতার বড্ড অভাব রয়েছে।
    তিনটি কারণে মাথায় খুশকি হয়ে থাকেঃ

    -মাথার খুলির ত্বকে জীবাণুর সংক্রমণ বেশি হলে, বিশেষভাবে ম্যালাসেজিয়া বা পিটাইরেসিস গ্রম্নপের ইস্টের পরিমাণ বেড়ে গেলে।
    -তেল গ্রন্থি (সেবাসিয়াস গ্রন্থি) থেকে ত্বকের তৈলাক্ত উপাদান বেশি পরিমাণে নিঃসৃত হলে।
    -অনেকে জেনেটিক সূত্রে খুশকির ঝুঁকিতে থাকেন।

    খুশকি হলে এর প্রভাবে মাথায় প্রচণ্ড চুলকানি ছাড়াও নিয়মিত চুল পড়তে পারে। এমতাবস্থায় আমরা সাধারণত বিভিন্ন ধরনের সাধারণ শ্যাম্পু কিংবা তেল ব্যবহার করি কিংবা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কিছুই করি না। যার ফলে বিভিন্ন প্রকার সেকেন্ডারী ব্যাকটেরিয়াল কিংবা ফাংগাল ইনফেকশন হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। যার ভেতর সেবোরিক ডার্মাটাইটিস এবং টিনিয়া ক্যাপাইটিস অন্যতম।
    এ সকল সমস্যার সাথে নিত্যদিনের সঙ্গী হিসাবে রয়েছে বিব্রতকর পরিস্থিতির সম্মুখীন হওয়া। সাদা সাদা খুশকি যখন মাথা থেকে ঝরে ঘাড়ের কাপড়ে জমে, তখন প্রত্যেকেই এক ধরনের বিব্রতকর পরিস্থিতির সম্মুখীন হন। দৈনন্দিন মেলামেশা, অফিস-আদালতে কাজকর্ম, সামাজিক অনুষ্ঠানে যোগদান এমনকি প্রিয়জনের সাথে দেখা করা, সবক্ষেত্রেই এই বিব্রতকর খুশকি দৈনন্দিন কাজকর্মে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে।
    আজকাল বেশিরভাগ লোকই বিভিন্ন প্রকার শ্যাম্পু ব্যবহার করেন। চুল পরিষ্কার রাখতে এবং চুলের সৌন্দর্য বাড়াতে শ্যাম্পু ব্যবহারে এখন যথেষ্ট সচেতনতা সৃষ্টি হয়েছে। এই সচেতনতার বেশিরভাগই কসমেটিক কোম্পানীগুলোর বিজ্ঞাপনের অবদান। মনে রাখতে হবে খুশকি একটি রোগ যা নির্দিষ্ট কিছু কারণে হয়ে থাকে। তাই একটি রোগের চিকিৎসা করতে যেমন ওষুধের প্রয়োজন হয় তেমনি খুশকি দূর করতেও যথাযথ ওষুধ প্রয়োগ করতে হবে। সঙ্গে সঙ্গে এটাও মনে রাখা দরকার যে, যদি খুশকির যথাযথ চিকিৎসা না করানো হয় তবে ভবিষ্যতে জটিলতা সৃষ্টি হবে এবং সেই জটিলতারও আবার অন্য ধরনের ওষুধের মাধ্যমে দীর্ঘ মেয়াদী চিকিৎসার প্রয়োজন হতে পারে। কাজেই আমাদের এখনই সিদ্ধান্ত নিতে হবে এর যথাযথ চিকিৎসা করানোর ব্যাপারে।
    আমেরিকার খাদ্য এবং ওষুধ প্রশাসন (এফডিএ) খুশকি দূরীকরণে একটি শ্যাম্পুকে কার্যকর বলে ছাড়পত্র দিয়েছে। এটি হচ্ছে কিটোকোনাজল ২% শ্যাম্পু। এই শ্যাম্পুটি ম্যালাসেজিয়া বা পিটাইরেসিস গ্রম্নপের ইস্টের বিরুদ্ধে অত্যন্ত কার্যকর। এছাড়াও এটি তেল গ্রন্থি (সেবাসিয়াস গ্রন্থি) থেকে ত্বকের তৈলাক্ত উপাদান নিঃসরণ কমায়। ফলে খুশকি দূর হয়, মাথার ত্বকে চুলকানি কমে, চুল পড়া বন্ধ হয় এবং আক্রান্ত ব্যক্তি বিব্রতকর পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পায়। অনেক বছর ধরে এই কিটোকোনাজল ২% শ্যাম্পু পৃথিবীর সর্বাধিক এন্টি-ডেনড্রাফ শ্যাম্পু প্রেসক্রিপশন হচ্ছে যা বাংলাদেশেও অনেকদিন ধরে ড্যানসেল শ্যাম্পু নামে বাজারজাত হয়ে আসছে।
    খুশকি দূর করতে আরো কিছু মেডিকেটেড শ্যাম্পু পাওয়া যায়। জিংক পাইরিথিয়ন কিংবা সেলেনিয়াম সালফাইড সমৃদ্ধ এ সমস্ত শ্যাম্পু আসলে কসমেটিক উপাদান এবং খুশকি দূরীকরণে তেমন একটা কার্যকর নয়। এছাড়া এ সমস্ত শ্যাম্পু এফডিএ কর্তৃক স্বীকৃতও নয়।
    খুশকি দূরীকরণে চুল ধুয়ে তাতে কিটোকোনাজল ২% শ্যাম্পু বা ড্যানসেল ভালভাবে লাগিয়ে ৫ মিনিট অপেক্ষা করতে হবে। এরপর চুল ভালভাবে ধুয়ে ফেলতে হবে। এভাবে সপ্তাহে ২ বার করে ২-৪ সপ্তাহ ব্যবহারে খুশকি কমে যাবে। যাদের নিয়মিত খুশকি হয় তারা ১ বা ২ সপ্তাহ পর পর প্রতিরোধক হিসেবে এই শ্যাম্পু ব্যবহার করতে পারেন, এতে তারা খুশকিমুক্ত থাকতে পারবেন দীর্ঘদিন। ড্যানসেল শ্যাম্পু বাচ্চাদের ক্ষেত্রেও সমানভাবে কার্যকর এবং নিরাপদ।

    তবে সবচেয়ে ভালো হবে ভালো চর্ম ও যৌনরোগ বিশেষজ্ঞের কাছ থেকে চিকিৎসা নেয়া।

    Professor Answered on April 1, 2015.
    Add Comment
  • RELATED QUESTIONS

  • POPULAR QUESTIONS

  • LATEST QUESTIONS

  • Your Answer

    By posting your answer, you agree to the privacy policy and terms of service.