কোনও মানুষের কোন কোন দোষ থাকলে অন্যেরা তাঁকে অপছন্দ করেন?

    Train Asked on July 9, 2023 in অনুসরণ.
    Add Comment
    1 Answer(s)

      ১। কথা দিয়ে, কথা না রাখার অভ্যাস,

      ২। অন্যের ব্যক্তিগত বিষয় সম্পর্কে অতিরিক্ত কৌতূহল প্রকাশের অভ্যাস,

      ৩। অন্যের বক্তব্য শোনার মতো ধৈর্য না রাখার অভ্যাস,

      ৪। কোনো কিছুর ব্যাপারে, না জেনে, না বুঝে, মন্তব্য করার অভ্যাস,

      ৫। কারো প্রশংসা করতে গিয়ে, অন্যের নিন্দায় মুখর হয়ে উঠার অভ্যাস,

      ৬। নিজের ঢাক, নিজে পেটানোর অভ্যাস,

      ৭। কুতর্ক করার অভ্যাস,

      ৮। নিজের দু:খ, কষ্ট কে অতিরঞ্জিত করে বর্ণনা করে অন্যের সহানুভূতি আদায় করার অভ্যাস,

      ৯। কুশব্দ, কুকথা বলার অভ্যাস,

      ১০। পাঁচ জন বসে একসাথে করতে থাকা কথা বার্তার মাঝখানে, হঠাৎ করেই, একজন, আরেকজনের কানে, কানে, ফিসফিস করার অভ্যাস,

      ১১। অন্যের চুড়ান্ত ব্যস্ততা বুঝে ও, তাঁকে বিরক্ত করার অভ্যাস,

      ১২। ফোন করে, অপর দিক থেকে চিনতে না পারলে, পরিচয় প্রকাশ না করে, চেনানোর পরীক্ষায় ফেলে দেয়ার অভ্যাস,

      “বলেন তো কে ? চিনতে পারছেন না, একদম ভুলে গেছেন ? গলার স্বর ভুলে গেছেন ? ট্রাই করেন, ট্রাই করেন, তাইলে একটা ক্লু দিমু ? বছর দু’য়েক আগে একবার ট্রেনে আপনার সাথে কথা হয়েছিল, ফোন নম্বর একচেঞ্জ হয়েছিল, ইত্যাদি, ইত্যাদি…”।

      কেবিসি তে বসে জিতে আসা গেলে ও, এ জাতীয় চেনা-চেনির পরীক্ষায়, নির্ঘাত ফেইল।

      ১৩। ভুল করে, ভুল স্বীকার না করে, যুক্তিহীন ভাবে, ভুল কে সঠিক বলে প্রতিপন্ন করার অভ্যাস,

      ১৪। কাউকে নিমন্ত্রণ করে, রান্না করে খাইয়ে,

      “কী, রান্না কেমন হয়েছে ? ভালো হয় নাই ? ঝাল বেশী হয়েছে ?” জিজ্ঞেস করার অভ্যাস।

      রান্না ভালো হলে, যিনি খেয়েছেন, তিনি নিজে থেকেই সাধুবাদ জানাবেন। গান ভালো গাইতে পারলে, হাততালি বা বিগ হ্যান্ডস এর জন্য মাইকে চেঁচাতে হয় না।

      ১৫। কারো বাড়ীতে খেতে বসে,

      “এটা খাইনা, ওটা বারন, ওটা সরিয়ে নিন, এটা উঠিয়ে রাখুন”, বলার অভ্যাস”

      যিনি রান্না করেছেন, তিনি কত কষ্ট করে, উৎসাহ নিয়ে রান্না করেছেন। এরকম করলে, তিনি ভীষন কষ্ট পান।

      (আমাকে কেউ খাওয়ার কথা বললে, আগে বলেই দিই যে, সবই খাই, সেরকম বিধি, নিষেধ কিছু নেই, কাজেই জম্পেশ করে, পূর্ণোদ্যমে রান্না করুন, ফেলা যাবে না কিছুই.. গ্যারান্টি দিচ্ছি…)

      ১৬। কেউ হয়তো একটু গান করেন, আবৃত্তি করেন। তিনি বাড়ীতে এলে,

      “প্লীজ, প্লীজ, একটা গান করুন” বলে, তাঁকে জোর করিয়ে গান শুরু করিয়ে দিয়ে, তারপর নিজেদের মাঝে কথা বার্তা, হাসাহাসি এসব, এবং গান শেষ হওয়া মাত্রই,

      “আরেকটা, আরেকটা, খুব ভালো হইছে” বলার অভ্যাস।

      ১৭। বাড়ীতে অতিথি এলে, তাঁর সামনে বাচ্চা কে দিয়ে জোর করে গান, রাইমস এসব বলার জন্য বাধ্য করার অভ্যাস। বাচ্চা না বলতে চাইলে, তাকে বকাবকি, ভয় দেখানো, প্রায় মারধোর করার মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি করার অভ্যাস।

      ১৮। বাচ্চাদের সাথে শর্ত আরোপনের অভ্যাস।

      পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট করলে, অংক, ইংরেজিতে এতো মার্কস পেলে,

      “মোবাইল কিনে দিবো, ড্রেস কিনে দেবো”,

      এসব শর্ত আরোপ করার অভ্যাস।

      বাচ্চাটি যখন শর্ত পূরণ করতে পারে না, তখন তার মনে কত যে কষ্ট হয়, সেটার কথা ভাবা হয় না।

      ১৯। ভিখারী কে ভিক্ষা না দিয়ে, জ্ঞান দেয়ার অভ্যাস।

      ” কাজ করে খেতে পারো না ” ?

      ভিখারী ভিক্ষা চেয়েছিলো, টাকা-পয়সা, খাবার, কাপড়- চোপড়, এসব। জ্ঞান, ভিক্ষা চায় নি।

      ২০। নিজের বাড়ীর ময়লা, রাস্তায় ফেলে দেয়া বা অন্যের বাড়ীর সামনে ফেলে দেয়ার অভ্যাস।

      ২১। দোকানে গিয়ে জিনিষপত্র দেখে, দাম দর করে,

      “ঠিক আছে, পরে নিমু” বইল্যা চলে আসার অভ্যাস।

      খুব কষ্ট হয় দোকানীর।

      ২২। মঞ্চে বক্তৃতা করতে উঠে,

      “আমি আপনাদের মূল্যবান সময় আর নষ্ট করবো না, খুব সংক্ষেপে দু’চারটি কথা বলে, বক্তব্য শেষ করছি” বলে, বক্তব্যকে অহেতুক দীর্ঘায়িত করার অভ্যাস। মাঝে, মাঝেই চলতে থাকা ভাঙা রেকর্ডের মতোই,

      “আমি আপনাদের মূল্যবান সময় আর …” বলার অভ্যাস।

      ২৩। প্রতিদিনই রাস্তায় দেখা হলে, জেনে শুনে ও,

      “কী ?, অফিস যাচ্ছেন ? বলার অভ্যাস। প্রতিদিনই।

      ২৪। বেকার ছেলে, মেয়েকে,

      “কী চাকরীর চেষ্টা করতেছো তো ?” জিজ্ঞেস করার অভ্যাস।

      ২৫। বাংলায় কথা বলতে, বলতে, কোনো কারণে রেগে গিয়ে, ইংরেজীতে কথা বলার অভ্যাস।

      ট্রেনে যাচ্ছি, উপরের বার্থে আমি। উল্টোদিকের উপরের বার্থ, নীচের বার্থ, দুটোতেই বাঙালী ভদ্রলোক, রাতে লাইট নেভানো নিয়ে, দুজনের মাঝে, “এখন না, পরে” নিয়ে শুরু বাংলায় তর্কাতর্কি, চেঁচামেচি, প্রায় হাতাহাতির পর্যায়ে যেতেই, শুরু হলো, ইংরেজিতে বলা, illeterate, non-sense।

      শীতের রাত, আমি মুখের উপর থেকে কম্বলটা সরিয়ে, উপর থেকে বললাম,

      “ভাই, আপনারা ইংরিজিতে যা কিছুই বলছেন, সব কথাগুলিই বাংলাতে ও বলা যায়। illiterate মানে, অশিক্ষিত, non-sense মানে, কান্ডজ্ঞানহীন, ঝগড়া করুন, কিন্তু, প্লীজ, বাংলায় করুন, হোক না ঝগড়াই, বাংলায় হলে, শুনতেও তো কত ভালো লাগে”।

      দুজনই আমার দিকে তাঁকিয়ে আছেন, একজন আমাকে বলে উঠলেন, “আপনার কী অসুবিধে হয়েছে” ?

      “এটাই তো চাইছিলাম”, বলে,

      কম্বল মুড়ি দিয়ে শুয়ে পড়লাম।

      ২৬। রাতের ট্রেনে ফোনটাকে ভাইব্রেশন এ না রেখে, রাত দুটোর সময় ঘুমে থাকা লোকেদের রিং টোন শোনানো এবং রিংটোন এর চাইতে দশ গুণ জোরে,

      “হ্যালো, হ্যালো, কী কইলেন ? আবার কন, ট্রেইনে আছি, কিচ্ছু শুনতা পাইতাছি না, আরেকটু জোরে কন তো। কী ? কী কইলেন ? কোরাবাংলা ছাইড়া দিলেন, এইমাত্র ফাইন্যালি সাইন-অফ কইরা ফেলছেন ? ক্যারে ? ক্যারে ?”

      Professor Answered on July 9, 2023.
      Add Comment
    • RELATED QUESTIONS

    • POPULAR QUESTIONS

    • LATEST QUESTIONS

    • Your Answer

      By posting your answer, you agree to the privacy policy and terms of service.