জিনিয়াসদের কিছু সাধারণ খুঁত কী?
সমাজের একটা অন্যতম ব্যর্থ্যতা কি জানেন? সমাজের জ্ঞানী লোকেরা দেখবেন আত্মবিশ্বাসী না, তারা কোনো কথা জোর দিয়ে বলতে পারেনা। অন্যদিকে, মূর্খ কিংবা কম জানা লোকেদের মুখে কথার ফুলঝুরি। তাদের ভাবটা এমন যে বিশ্বজগতের যত জ্ঞান, সব তাদের নখদর্পনে। তারা এত আত্মবিশ্বাস নিয়ে কথা বলে যে, বুঝার উপায় নেই যে তারা ভুল বলছে নাকি ঠিক বলছে। এধরনের লোকগুলোকে সাধারণত চায়ের দোকানে, সেলুনে, লঞ্চঘাটে দেখা যায়। রাজনীতি নিয়ে তাদের মতামত শুনলে মনে হবে, এ যেন স্বয়ং সক্রেটিস স্বর্গ থেকে নেমে এসেছেন।
স্বাভাবিকভাবে আপনার মনে প্রশ্ন জাগতেই পারে যে, কেন? কেন জ্ঞানী ব্যক্তিরা আত্মবিশ্বাসী নয়? কারণ টা খুব সহজ। দেখুন আপনি যদি কোনো জ্ঞান অর্জন না করেন , তাহলে আপনার কাছে মনে হবে আপনি কিছুই জানেন না, আবার আপনি যদি অল্প জ্ঞান অর্জন করেন তাহলে আপনার কাছে মনে হবে আপনি দুনিয়ার সব জ্ঞান অর্জন করে বসে আছেন, কিন্তু আপনি যদি অনেক জ্ঞান অর্জন করেন, তাহলে আপনার কাছে মনে হবে আপনি কিছুই জানেন না।
একটা প্রবাদ আছে, “একজন মূর্খ জানে যে সে কত জ্ঞানী, আর একজন প্রকৃত জ্ঞানী জানে যে তার জ্ঞান কতটা সীমাবদ্ধ।” ডোবার মাছ ডোবাকেই মহাসমুদ্র ভাবে, কারণ সে কখনো মহাসমুদ্র দেখেনি। এ নিয়ে তার কত বড়াই। আর মহাসমুদ্রের মাছ বিনম্র থাকে, কারণ সে জানে যে মহাসমুদ্র কত বিশাল। আর সেই বিশালতার তুলনায় সে কত নগন্য!
দেখুন আমাদের সমাজের আরেকটা ব্যর্থ্যতা হলো, এখানে যার গলা যত উঁচু, তার গ্রহণযোগ্যতা তত বেশি। এই নষ্ট সমাজে তাই জ্ঞানীরা অবমূল্যায়িত থেকে যায়। আর ঐ সকল পরজীবিরা, যারা গলাবাজি করতে পারে, তারা সমাজের সকল সুবিধা ভোগ করে যায়। আর যে সমাজ তাদের জ্ঞানীদের যথার্থ মূল্যায়ন দিতে জানে না, সে সমাজ গলাবাজ পরজীবিতে ছেয়ে যায়।