বিয়ে সম্পর্কে কিছু অজানা তথ্য জানাবেন কি?
বিয়ে সম্পর্কে কিছু অজানা তথ্য জানাবেন কি?
মোটামুটি সব কাবিননামায় দেনমোহরের মোটা অংকের সাথে যুক্ত করে শেষে এক শত এক টাকা বা এক টাকা উল্লেখ থাকে।
যেমন- মোহর ধার্য করা হয় দশ লক্ষ একশত এক টাকা (১০,০০,১০১) কিংবা সাত লক্ষ একশত এক টাকা (৭,০০,১০১)।
আমার দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতায় বলতে পারি অধিক দেনমোহরের বিয়েগুলো বেশিরভাগই টিকছে না।
মোটা অংকের দেনমোহর করার কারণ জিজ্ঞেস করলে কনে বা কনের বাবা জানায় যে যদি বিয়েটা ভেঙে যায় এই আশঙ্কা থেকে তারা এত টাকা দেনমোহর করেছিল।
বিয়ের সময় তারা মনে করেছিল যে যদি কখনো সংসারটা ভেঙে যায় তাহলে মেয়েটা এই টাকা পাবে কিংবা ছেলেটা মোটা অংকের দেনমোহরের ভয়ে সংসারটা করবে।
মেয়ের পিতার এই বক্তব্য খুব গভীরভাবে পর্যালোচনা করি আমি। এখানে একটি সাংঘাতিক সন্দেহ ও অবিশ্বাস লুকিয়ে আছে।
তা হলো “যদি”।
ইসলামী শরীয়াহ অনুযায়ী বিয়ে একটি ইবাদত । অপরিচিত একজন ছেলে ও মেয়ের স্বামী-স্ত্রী হিসাবে মেলবন্ধন শুরু হয় মহান আল্লাহর উপর ভরসা করে।
এক্ষেত্রে অনেক পিতা মাতা আল্লাহর উপর ভরসা না করে শুরুতেই মোহরের মোটা অংকের টাকার উপর ভরসা করে।
ফলে বিয়ের শুরুতেই আল্লাহর উপর বিশ্বাস বা ভরসাটা কেটে যায়। মহান আল্লাহ তখন রাগান্বিত হন।
কিভাবে টাকা এই বিয়েকে টিকে রাখে সেটাই দেখতে চান তিনি।
ফলে একসময় রহমত ও বরকতবিহীন অবিশ্বাস যুক্ত বিয়েটা ভেঙে যায়।
অনেক কনের বাবাকে দেনমোহরের শেষে এক শত এক টাকা জুড়ে দেওয়ার কারণ জিজ্ঞাসা করি আমি।
সরাসরি সাত লক্ষ (৭,০০,০০০) না লিখে সাত লক্ষ একশ এক টাকা (৭,০০,১০১) লেখার পিছনে তারা এই যুক্তি দেয় যে শেষে শূন্য থাকলে অমঙ্গল হবে।
শূন্যের উপর নাকি বিয়ে টিকে না!
তাই সরাসরি সাত লক্ষ না লিখে সাত লক্ষ একশ এক টাকা করা হয়েছে।
অনেক মৌ- লোভী , নিকাহ রেজিস্টার সহ সমাজের সিংহভাগ মানুষ এটা বিশ্বাস করে। এখানে একটি সূক্ষ্ম শির্ক লুকিয়ে আছে।
সব মঙ্গল অমঙ্গল এর মালিক মহান আল্লাহ। অথচ বিবাহের বর ও কনেপক্ষ বিশ্বাস করে যে মঙ্গল অমঙ্গলের মালিক শূন্য।
তাই তারা দেনমোহরের টাকার অঙ্কে শেষে শূন্য রাখতে চায় না।
ফলে বিয়েতে এই শিরকি প্রথা ও কুসংস্কার থাকার কারণে মহান আল্লাহ রুষ্ট হন।
যার কারনে শিরক যুক্ত বরকতবিহীন অনেক বিয়ে ভেঙে যাচ্ছে।
আজও ভেঙে গেল কয়েকটা।
খুব কম যেমন মাত্র ৫০০/ ১০০০ টাকার নগদ মাহর পরিশোধের বিয়েগুলো টিকে আছে কী সুন্দর ভাবে!
আর মোটা অংকের দেনমোহরের বিয়ে গুলো ভেঙে যাচ্ছে কাচের মতো।
মতিউর রহমান (মুসাফির আব্দুল্লাহ)
অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট
(যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ), পঞ্চগড়।,